অনলাইন ডেস্ক: থাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহা থেকে উদ্ধার করা সেই ১২ খুদে ফুটবলার ও তাদের কোচ বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল ছেড়েছেন। বাড়ি ফেরার আগে বুধবার সন্ধ্যায় একটি সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেয় খুদে ফুটবলারেরা। এ সময় টিনেজ দলটি ও কোচ উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে তাদের গুহায় কাটানো ‘অগ্নিপরীক্ষার’ বর্ণনা দেন ফুটবলাররা। থাইল্যান্ডে টানা ১৭ দিন জলডুবা অন্ধকার গুহায় শুধু পানি খেয়েই ১০ দিন কাটিয়ে দিয়েছে খুদে ফুটবলারেরা। প্রবল প্রাণ শক্তি ছিল বেঁচে থাকার জন্য। যে কারণে পানি পান করেই তীব্র ক্ষুধা জয় করেছে তারা।
ফুটবলারা বলেছে, গুহায় আটকা থাকার নয়দিন পর ডুবুরীরা তাদের খুঁজে পাওয়ার মুহূর্তটিকে ‘জাদুকরী’ ব্যাপার বলে মনে হয়েছিল। মাত্র এক ঘণ্টার জন্য ঘুরতে গিয়ে ১৭ দিন আটকা পড়ি।
বুধবারই ১২ কিশোর ফুটবলার ও তাদের কোচ জনসম্মুখে এসেছে। থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠানে তাদের সঙ্গে চিকিৎসক, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুরা উপস্থিত ছিল। থাইল্যান্ডসহ সারাবিশ্বের দর্শক উন্মুখ হয়েছিল খুদে ফুটবলারদের জীবন জয়ের গল্প শোনার জন্য।
নিজ দলের প্রতীক ‘ওয়াইল্ড বোয়ার’ ছাপাঙ্কিত টি-শার্ট পরে এবং ফুটবল হাতে কিশোর দলটি মঞ্চে প্রবেশ করে। তাদের পেছনে থাই হরফে ‘ওয়াইল্ড বোয়ারসকে বাড়িতে আনা হচ্ছে’ লেখা বিশাল একটি ব্যানার টাঙানো ছিল। অনুষ্ঠানের মঞ্চটি সাজানো হয়েছিল পুরো একটি ফুটবল মাঠের আদলে৷ সেখানে ফুটবল নিয়ে এসে খেলতে খেলতেই কথা বলেছে কিশোররা। আর তখনই সবাই জানতে চাইলো গুহায় আটকে থাকা তাদের ১৭ দিনের অজানা কথা।
টিনা নামে এক কিশোর বলে, ‘ ১০ দিন আমরা শুধু পানি খেয়েছি। তবে ধীরে ধীরে আমরা ক্লান্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু মনোবল হারাইনি।’
দলের সবচেয়ে ছোট সদস্য তিতান জানায়, খাবারের কথা ভাবাই আমার বেশি ক্ষুধা লাগেনি। তবে শেষ মুহুর্তে শক্তি নেই বলা চলে। শুধু মায়ের কথা ভেবে ভয় হচ্ছিল, দ্রুত বাড়ি ফিরে না গেলে বকা খেতে হবে।’ তবে গুহায় প্রবেশ দুষ্টুমি উল্লেখ করে সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছে টিনা।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জুন বার্ষিক ভ্রমণে উত্তরাঞ্চলে পাহাড়ি এলাকায় গিয়ে হারিয়ে যান ১১-১৬ বছর বয়সী ১২ ফুটবলার ও ২৫ বছর বয়সী তাদের কোচ। পরে ২ জুলাই চিয়াং রাই প্রদেশের থাম লুয়াং গুহায় তাদের সন্ধান পায় ব্রিটিশ ও থাই ডুবুরী দল। এরপর ৮ জুলাই থেকে ১০ জুলাই তিনদিনের শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে তাদের উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে তারা পার্শ্ববর্তী চিয়াং রাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। এখন বাড়ি ফিরে স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করে দিয়েছে মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখা খুদে ফুটবলারেরা।