সাময়িক বরখাস্তের পর আবারো আওয়ামী লীগের পদ ফিরে পেয়েছেন সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক পৌর মেয়র হালিমুল হক মিরু। এবার তাকে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানা যায়। এদিকে হত্যা মামলার বিচার শেষ হওয়ার আগে প্রধান আসামিকে আওয়ামী লীগের সদস্য পদ দেওয়ায় হতাশ শিমুলের স্ত্রী ও স্থানীয় সাংবাদিকরা।
২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন সাংবাদিক আব্দুল হাকিম শিমুল। ঘটনার পর নিহতের স্ত্রী নুরুন্নাহার খাতুন তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও শাহজাদপুর পৌরসভার মেয়র হালিমুল হক মিরু ৪০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
ওই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে মিরুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ২ বছর সাড়ে ৯ মাস তিনি কারাভোগ করেন তিনি। মামলাটি বর্তমানে রাজশাহীর বিশেষ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। গ্রেফতারের পরপরই দল থেকে মিরুকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। মেয়র পদ থেকেও তাকে বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান সভাপতি হিসেবে অ্যাডভোকেট কে এম হোসেন আলী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আব্দুস সামাদ তালুকদারের নাম ঘোষণা করেন।
সম্মেলনের ১১ মাস ২২ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা এক চিঠিতে ৭৪ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাহী কমিটি ও ২৭ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পদে স্থান পেয়েছেন সাংবাদিক শিমুল হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও সাবেক মেয়র হালিমুল হক মিরু।
এদিকে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন প্রক্রিয়া বিলম্ব হওয়ায় বিচার প্রক্রিয়া ছয় বছর ধরে ঝুলছে। এরই মধ্যে জেলা কমিটিতে পদ পাওয়ায় নিহত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী বেগম নুরুন্নাহারসহ তার স্বজনরা উদ্বেগ জানিয়েছেন।
শাহজাদপুর প্রেস ক্লাবের সভাপতি বিমল কুমার কুণ্ডু বলেন, গত ছয় বছরেও হত্যা মামলার কার্যক্রম এগোয়নি। এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি মিরুকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ দেওয়ায় আমরা মর্মাহত।
নিহত সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী বেগম নুরুন্নাহার বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের ছয় বছরে বিচার না পেয়ে আমরা হতাশ। মিরুসহ আসামিরা জামিনে মুক্ত হয়ে মামলায় প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। আবার প্রধান আসামি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হয়েছেন। এতে প্রভাব আরও বাড়বে।’