আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না—বিরোধী জোট নেতাদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ পালায় না, পিছু হটে না। আওয়ামী লীগ জনগণকে নিয়ে কাজ করে। আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন নিয়ে কাজ করেছে।
রোববার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জিয়া, খালেদা জিয়া কেউ এদেশের মানুষের খাদ্যের কথা চিন্তা করেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে।
সরকারপ্রধান বলেন, আজকে বিরোধী দল অনেক কথা বলে। আবার বলে আমরা নাকি পালানোর পথ পাবো না। আমি বিএনপি-জামায়াত জোট যারা হয়েছে তাদের জিজ্ঞেস করি, পালায় কে? আওয়ামী লীগ কখনও পালায় না, পিছু হটে না। জিয়াউর রহমান আমাকে বাধা দিয়েছিল দেশে আসতে। আমি বাধা অতিক্রম করে দেশে ফিরেছিলাম। ২০০৭ সালে যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসে, তখনও আমি বিদেশে গিয়েছিলাম, আমার ছেলের বউ অসুস্থ ছিল, তার বাচ্চা হয়েছিল, তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। আমাকে দেশে ফিরতে দেবে না। আমি জোর করে দেশে ফিরে এসেছিলাম। আমার বিরুদ্ধে মার্ডার কেস দেওয়া হয়েছিল। আমি বলেছিলাম যাব, এই কেস মোকাবিলা করব। দেশে ফিরে এসেছি শুধুমাত্র বাংলার মানুষের কথা চিন্তা করে।
শেখ হাসিনা বলেন, আজ যারা বলে আওয়ামী লীগ পালানোর সুযোগ পাবে না, আমি স্পষ্ট বলতে চাই, আওয়ামী লীগ পালায় না, পালায় আপনাদের নেতারাই। বিএনপির নেতারা কে? তারা নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করবে। কাকে নিয়ে? দুর্নীতিতে সাজাপ্রাপ্ত তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান?।
তিনি বলেন, আমার অনুপস্থিতিতে আমাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি বানানো হয়। আমি আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি এমন একটি দেশে ফিরে আসি, যেখানে আমার কোনো বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। জাতির পিতার খুনিদেরকে ইনডেমনিটি দিয়ে বিচারের হাত থেকে রেহাই দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। সে অবস্থায় আমি দেশে ফিরে আসি শুধু বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করার জন্য। ১৯৯৬ সালে যখন সরকার গঠন করি তারপর চেষ্টা করেছি, বাংলাদেশকে উন্নত করতে। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া কেউ এদেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দেয়নি। চিন্তাও করেনি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা এসে বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে।
তিনি আরো বলেন, এই রাজশাহীতে জাতির পিতা স্বাধীনতার পর কলকারখানা করে দেন। এরপর সব বন্ধ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ বন্ধ কারখানা চালু করতে কাজ করে। পদ্মা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষার জন্য দীর্ঘ বাঁধ করে দিয়ে সেই ভাঙন আমরা রোধ করে দেই। এই রাজশাহীর মানুষের কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা নেই। এরইমধ্যে রাজশাহীর মানুষের জন্য অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামালের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন প্রমুখ।