Current Date:Oct 4, 2024

কাজ না হলে দুদক থেকে কী লাভ: হাইকোর্ট

ডেস্ক রিপোর্ট : রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির ৫৬ মামলা তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ, উষ্মা ও হতাশা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আদালত। গতকাল বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়।

২৩ মে বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারির মামলার কয়েকজন আসামির জামিন শুনানিতে নির্ধারিত সময়ে তদন্ত শেষ না হওয়ার বিষয়টি উঠে এলে হাইকোর্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের তলব করেন। সে অনুযায়ী গতকাল ৫৬ মামলার আট তদন্ত কর্মকর্তা ও দুই তদারককারী কর্মকর্তা নথিসহ আদালতে হাজির হন।

আদালতে শুনানির শুরুতেই বেসিক ব্যাংকের সাবেক ডিএমডি ও ব্যাংকটির ঋণ জালিয়াতি যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি ফজলুস সোবহানের পক্ষে ১৫টি মামলায় জামিন চান তার আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, ব্যাংক ঋণ দেবে কি দেবে না, সেটা তো নির্ধারণ করে পরিচালনা পর্ষদ। কিন্তু বলা হচ্ছে ফজলুস সোবহান সহায়তা করেছেন। কী করে তিনি সহায়তা করেছেন? ঋণ যাচাই-বাছাই কমিটির সব নেতিবাচক মূল্যায়ন থাকা সত্ত্বেও তাকে দায়ী করা হচ্ছে। এই অংকের টাকার ঋণ দেয়ার ক্ষমতা এ ভদ্রলোকের ছিল না।

তার এ বক্তব্যের বিরোধিতা করে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘কিছুই করার ছিল না। যেন ধোয়া তুলসী পাতা। ঋণ প্রস্তাব বাতিল না করে, শাখার সুপারিশে মর্টগেজ (বন্দকনামা চুক্তি) না রেখেই ঋণ অনুমতি দিয়েছেন। এতে সুদে-আসলে ৬৩ কোটি টাকার অধিক আত্মসাৎ করেছেন।’

বক্তব্যের মধ্যেই বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম খুরশীদ আলম খানকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনার এ বক্তব্যের সঙ্গে আমাদের কোনো দ্বিমত নেই। সবাই লুটপাট করে খেয়েছে। এফআইআরে নাম নেই কেন, চার্জশিট দিচ্ছেন না কেন? এ ধরনের মামলায় আড়াই বছর লেগে গেল? তাহলে কেমনে হবে?’

একপর্যায়ে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ এ বিচারপতি বলেন, রাষ্ট্রের এতগুলো টাকা চলে গেল, এখন সংস্থা (দুদক) যদি কাজ না করে আমাদের তো করার কিছু নেই। এ রকম একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা দিয়ে যদি কাজ না হয়, তাহলে তো থেকে লাভ নেই।

উষ্মা প্রকাশ করে তিনি বলেন, এ নিয়ে কত কথা বললাম! এখন লজ্জায় চোখ ঢাকি। মনে হয় কালো কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকি, কেন এত কথা বলেছি। আদেশ দিয়ে তো কোনো লাভ হয় না। মনে হয়, উলু বনে মুক্তো ছড়ানো হয়েছে।

জবাবে দুদক আইনজীবী বলেন, এই সময়ে একটি আদেশ ছাড়া আপনাদের প্রত্যেকটি আদেশ, পর্যবেক্ষণ দুদক পালন করেছে।

তখন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, গত আড়াই বছরে ৫৬টি মামলার মধ্যে একটি মামলারও চার্জশিট দিতে পারেননি। লোকবল সংকট থাকলে তো পাঁচটি মামলা দিয়ে তা ভালোভাবে করতেন। ঋণ যাচাই-বাছাই কমিটি ঋণ অনুমোদন দেয়নি, দিয়েছে বোর্ড। অথচ বোর্ডের কাউকে আসামিই করা হয়নি। বোর্ড সবকিছুর জিম্মাদার। আসামি গ্রেফতারের ক্ষেত্রেও চুজ অ্যান্ড পিক করেছেন।

Share