স্বাস্থ্য ডেস্ক : ক্যানসার চিকিৎসায় কেমোথেরাপির বিকল্প পদ্ধতি উদ্ভাবনের গবেষণায় ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন সাংহাই-এর একদল বিজ্ঞানী। তাদের দাবি, নতুন এ পদ্ধতিতে ক্যানসার চিকিৎসা অধিক কার্যকর এবং এতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো ঝুঁকি নেই।
ক্যানসারের চিকিৎসায় বর্তমানে প্রচলিত চিকিৎসা-পদ্ধতিটির নাম কেমোথেরাপি। এ পদ্ধতিতে রোগীর দেহের ক্যানসার কোষ ধ্বংস করতে যেসব ওষুধ ব্যবহৃত হয়, তা স্বাস্থ্যবান কোষকেও ধ্বংস করে, ইনফেকশন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, দেহকে অবসাদগ্রস্ত করে তোলে এবং চুল পড়ে যায়।
তবে এবার চাইনিজ একাডেমি সায়েন্স ও সাংহাই ইনস্টিটিউট অব সিরামিকসের একদল বিজ্ঞানী অজৈব ও অবিষাক্ত ‘ন্যানোপার্টিকেল’ ব্যবহার করে কেমোথেরাপির চেয়েও অনেক বেশি কার্যকর ফলাফল পেয়েছেন। এগুলো একধরনের অতিক্ষুদ্র কণা যা মানুষের রক্তপ্রবাহের মাধ্যমে ভ্রমণ করে এবং স্বাস্থ্যবান কোষের কোনো ক্ষতি না করে কেবল আক্রান্ত কোষগুলো ধ্বংস করে।
গবেষণক দলের প্রধান শি জিয়ানলিন বলেন, আমরা গবেষণাগারে ইঁদুরের ওপর পরীক্ষা চালিয়েছি। এক্ষেত্রে টিউমারগুলো ৮৫ শতাংশ সংকুচিত হয়েছে।
এ পরীক্ষায় Fe3O4 ও SiO2 নামে দু’টি ন্যানোপার্টিকেল ব্যবহার করেন গবেষকরা। ইনজেকশনের মাধ্যমে ইঁদুরের শিরায় প্রবেশ করানো হয় সেগুলো। আক্রান্ত কোষের রাসায়নিক উপাদানের সংকেত পেলে পার্টিকেলগুলো অত্যন্ত বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ উৎপাদন করে কোষগুলোকে ধ্বংস করে।
ন্যানোপার্টিকেল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার গবেষণাপত্রটি প্রকাশ করে ‘কেমিকেল সোসাইটি রিভুউস’, ‘ন্যাচার ন্যানোটেকনোলজি’ ও ‘ন্যাচার কমুনিকেশনস’।
সাংহাই’র হুয়াশান হাসপাতালের হেমাটোলজি বিশেষজ্ঞ শেন কুইনফেন মনে করেন, এই নতুন চিকিৎসা পদ্ধতিটি খুবই চমকপ্রদ।
তিনি বলেন, কেমোথেরাপির পর লিউকেমিয়া ও লিমফোমা আক্রান্ত রোগীদের রক্তে শ্বেত কণিকার পরিমাণ কমে যায় এবং কলিজা, কিডনি বা নার্ভাস সিস্টেমের ক্ষতি সাধিত হয়। কেমোথেরাপি নেওয়া লিউকেমিয়া আক্রান্তদের অর্ধেকের বেশি রোগীই পরে বিভিন্ন জটিলতার কারণে মারা যান।
ন্যানোপার্টিকেলের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এগুলো এতোই ছোট যে কোষের সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লিয়াসের মধ্যে প্রবেশ করতে পারে।