ডেস্ক রিপোর্ট : বিএনপি অভিযোগ করেছে, নির্বাচন কমিশন ভালো নির্দেশনা দিলেও গাজীপুরের স্থানীয় প্রশাসন তা মানছে না। অনেক ক্ষেত্রে উল্টো কাজ করা হচ্ছে। সরকারের প্রশাসন নির্বাচনের কাজে হস্তক্ষেপ করছে। এই পরিস্থিতিতে আবারো গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশিদের প্রত্যাহার দাবি করেছে দলটি। পুরনো এই দাবি নিয়ে ভোটের দুই দিন আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছে বিএনপির তিন সদস্যর একটি প্রতিনিধিদল। পুলিশ সুপার প্রত্যাহার না করলে গাজীপুরে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা।
গতকাল রবিবার দুপুরে সিইসিসহ অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খানের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল। বেলা ২টার পর নির্বাচন কমিশনে আসে বিএনপির প্রতিনিধিদলটি। সিইসিসহ বাকি চার নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে তাদের দুই ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে আবদুল মঈন খান সাংবাদিকদের কাছে বৈঠকের বিষয়ে কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান ও বরকত উল্লাহ বুলু।
মঈন খান সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মানছে না স্থানীয় প্রশাসন। এখন পুলিশ গিয়ে ভোটকেন্দ্র দখল করলে তো নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মানা হলো না। পুলিশের কাজ তো নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করা না। কিন্তু খুলনায় অনেক জায়গায় দেখা গেছে পুলিশ নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করছে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপারের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একজন মানুষের কারণে পুরো নির্বাচন আজ প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে পড়বে। অথচ তাকে প্রত্যাহার করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের আছে। সেই ক্ষমতা আপনারা ব্যবহার করুন। সেই কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করুন। আমরা সেই অনুরোধ করেছি।
বিএনপি গাজীপুর নির্বাচনে কারচুপির আশঙ্কা করছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আশঙ্কা করছি বলেই তো কথা বলার জন্য এখানে এসেছি। সিইসি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা চেয়েছেন। আমরা বলেছি, অতীতেও সহযোগিতা করেছি এ নির্বাচনেও সহযোগিতা করবো।
তিনি বলেন, বর্তমানে নির্বাচনে ভোট কারচুপির ধরন পরিবর্তন হয়েছে। এখন পর্দার অন্তরালে ভোট কারচুপি হচ্ছে। খুলনা সিটি নির্বাচনে আমরা এই প্রক্রিয়া দেখতে পেয়েছি। এই প্রক্রিয়া এখন আমার গাজীপুরে লক্ষ করছি। এমন ভোট কারচুপি হলে জাতীয় নির্বাচনেও এর প্রভাব পড়বে। ইসি যদি তার সঠিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে তাহলে গাজীপুর সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। কিন্তু সেটি তারা করেছে না।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের পুলিশের গাড়িতে চড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা সবাই দেখেছে। আলোচনা হচ্ছে। আমরা চাই গাজীপুরের পুলিশ সুপারকে প্রত্যাহার করা হোক।
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, আজ থেকে ছয় মাস পর জাতীয় নির্বাচন। সরকার সরকারি খরচে প্রচারণা চালাচ্ছে। অথচ বিরোধী দলকে একটি মিটিং ও মিছিল করতে দেয়া হয় না। এটা বাস্তবতা। গাজীপুরে মানুষ সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে না পারলে এর প্রভাব শুধু গাজীপুরে না, সারা দেশে পড়বে এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনেও পড়বে।