নিজস্ব প্রতিবেদক : নেপাল বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হন বিমানের ক্রু নাবিলা। নাবিলার নিহত হওয়ার খবর শুনেই খবর প্রকাশ হয় কাজের বুয়া তাকে নিয়ে পালিয়েছেন। কিন্তু সেটা ছিল পারিবারিক টানাটানি। ছোট্ট হিয়া মায়ের মরদেহ গ্রহণ করতে এসেছিল আর্মি স্টেডিয়ামে। কিন্তু সে কি জানতো তার মা আর তার কাছে নেই, তাকে ছেড়ে চলে গেছে অনেক দূরে।
আজ সোমবার বিকেলে শনাক্তকৃত ২৩ বাংলাদেশির মরদেহের সঙ্গে নাবিলার মরদেহও ঢাকায় আসে। সেখানে আগে থেকেই নাবিলার একমাত্র শিশুকন্যা হিয়া জামিনে মুক্তি পাওয়া বাবা হাসান ইমামের কোলে চড়ে অপেক্ষা করছিল। শিশুকন্যাকে কোলে নিয়েই স্ত্রীর মরদেহ গ্রহণ করেন হাসান ইমাম।
এরপর মরদেহ নিয়ে ফিরে যান হাসান ইমাম। লাশবাহী গাড়ির সামনে বাবার সাথেই বসেছিল হিয়া। হিয়ার চোখেও দেখা যায় জল। সে কি টের পেয়েছিল যে তার মায়ের লাশ নিয়ে ফিরে যাচ্ছে?
সোমবার বিকেল ৫টা ২৩ মিনিটে আর্মি স্টেডিয়ামে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা পড়ান সেনাবাহিনীর কেন্দ্রীয় মসজিদের ইমাম মাওলানা মো. মাহমুদুল হক। জানাজায় অংশ গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব, প্রধানমন্ত্রীরর পক্ষে ওবায়দুল কাদেরসহ তিন বাহিনীর প্রধান এবং বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দসহ বিএনপির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও সর্বস্তরের জনসাধারণ।
এর আগে ২৩ জনের মরদেহের কফিন ১৯টি মরদেহবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে করে বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে আসে। বিকেল ৫টায় আর্মি স্টেডিয়ামে পৌঁছায়।
সোমবার বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে মরদেহগুলো নিয়ে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি কার্গো বিমান। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ১ নম্বর ভিভিআইপি টারমাকে অবতরণ করে লাশবাহী ৬১-২৬৪০ নম্বর বিমানটি।
উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ ৬৭ জন যাত্রী ও চার ক্রু নিয়ে বিধ্বস্ত হয় ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজটি। এতে মারা যান ৫১ জন। বিমানে বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন ৩৬ জন। বাংলাদেশিদের মধ্যে ২৬ জন নিহত হন যাদের ২৩ জনের মরদেহ শনাক্ত করা হয়েছে।