নিজস্ব প্রতিবেদক:
ব্লেজ সার্ভিসের মাধ্যমে মাত্র ৫ সেকেন্ডে প্রবাসীদের টাকা একাউন্টে জমা হয়
গত দুই বছর বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে বাসায় বসে প্রান্তিক মানুষের ব্যাংকিংয়ে সেবা দেয়ার ক্ষেত্রে রাস্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক অন্যান্য সরকারি ব্যাংকের তুলনায় এগিয়ে । সময়ের সাথে সাথে রাস্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক কন্টাকলেস ব্যাংকিং তথা ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের অনেক দূর এগিয়েছে ।
সোনালী ব্যাংকের বর্তমান সিইও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ আতাউর রহমান প্রধান ২০১৯ সালে রাস্ট্রায়ত্ত এই ব্যাংকটিতে যোগদান করার পর থেকে বিভিন্ন ডিজিটাল সেবা চালু করার উদ্যোগ নেন যাতে করে ঘরে বসেই বিভিন্ন সেবা পেতে পারেন এর লক্ষ কোটি গ্রাহক । বর্তমানে দেশের এই ব্যাংকটির মোট ১২২৭ টি শাখাই অনলাইন ব্যাংকের আওতায় । দেশের বৃহত্তম এই ব্যাংকটিকে একটি আদর্শ ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি ২০২০ সনের মার্চ মাসে সোনালী ই-সেবা অ্যাপ চালু করেন । বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের এই অ্যাপস চালুর পর থেকে জানুয়ারী ২০২২ পর্যন্ত মোট ৯৯,০৩৩ টি হিসাব খোলা হয়েছে । এছাড়া ১৭ মার্চ ২০২০ সালে চালু করা হয় সোনালী ই ওয়ালেট যার মোট হিসাব সংখ্যা ১,৩৭,০৮১ টি । বর্তমানে সরকারি এই ব্যাংকে, ছোট খাট ট্রান্সজেকশন করতে এবং হিসেব খুলতে গ্রাহকদের আর ব্যাংকে আসতে হয় না । সোনালী ব্যাংকের ব্লেজ অ্যাপ ব্যবহার করে প্রবাসী গ্রাহকেরা তাদের কস্টার্জিত অর্থ মাত্র ৫ সেকেন্ডের মধ্যে তাদের হিসেবে জমা করতে পারেন ।
দেশের সবচেয়ে বড় এই ব্যাংকের সবগুলো শাখা এখন অনলাইন । এই ব্যাংকের আইটি খাতের নিরবিচ্ছিন্ন সার্ভিস দিতে ৩০১ জন কর্মী নিয়োজিত রয়েছে । সোনালী ই-ওয়ালেটের মাধ্যমে গড়ে প্রতিদিন ৬,০০০ টি ট্রান্সজেকশন হচ্ছে ।
দেশের ব্যাংকিং জগতের পরিচিত মূখ বর্তমানে সর্ববৃহৎ বানিজ্যিক ব্যাংকটির সিইও এন্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোঃ আতাউর রহমান এই প্রতিবেদককে তার ব্যাংকের ডিজিটিালাইজেশন সম্পর্কে বলেন বিশ্বে পেপারলেস ব্যাংকিং একটি জনপ্রিয় ধারনা । বাংলাদেশও এত পিছিয়ে নেই । বর্তমানে সব মানুষই স্মার্টফোন আর ইন্টারনেট ব্যবহার করছে । এই কোভিডকালীন সময়ে ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের ফলে গ্রাহকরা ঘরে বসেই সব ধরনের সেবা পাচ্ছেন, বিশেষ করে বয়োঃবৃদ্ধ, প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা, সিনিয়র সিটিজেনগন যারা সরকারি এই ব্যাংক থেকে ভাতা নেন তাদের জন্য এটি একটি নিরাপদ মাধ্যম।
তিনি বলেন সময় এখন ভার্চুয়াল এন্ড স্মার্ট ব্যাংকিংয়ের । কোর ব্যাংকিং সলিউশোন এর মাধ্যমে এখন নন-স্টপ ব্যাংকিং সার্ভিস দেয়া হচ্ছে সোনালী ব্যাংকে । ” অনলাইন ব্যাংকিং সফটওয়্যার যুগোপযোগী করে আমরা ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছি । অচিরেই সরকারি সব ভাতা সমূহ আমরা ডিজিটালি প্রদান করবো, আর আমরা অচিরেই ইন্টারনেট ও এজেন্ট ব্যাংকিং চালু করবো বৃহত্তর পরিসরে । ” বলেন আতাউর রহমান প্রধান ।
করোনাকালীন সময়ে বেশীরভাগ ব্যাংক বন্ধ রাখলেও দেশের আপামর মানুষের কথা চিন্তা করে জীবনের ঝুকি নিয়ে সরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তার-কর্মচারীরা অফিস করেছেন এই সময়ে । গত বছর সোনালী ব্যাংক শুধু সেবা নয় মুনাফায় ও শীর্ষে ছিল । ২০২১ সালে রেকর্ড ২ হাজার ২০৫ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে ব্যাংকটি। ২০২০ সাল শেষে ব্যাংকটির পরিচালন মুনাফা ছিল ২১৫৩ কোটি টাকা । সরকারের সামাজিক খাতের ৩৭ টি সেবা সোনালী ব্যাংক দিচ্ছে কোন রকম কমিশন ছাড়াই । এসব ভাতা সমূহ উত্তোলনের জন্য যাতে ভাতাভোগীদের আর ব্যাংকে না আসতে হয় সেজন্য মোবাইল ব্যাংকিংয়ে সব ধরনের সেবা চালু হবে অচিরেই যার মাধ্যমে বিভিন্ন ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস থেকে তারা এসব টাকা উত্তোলন করতে পারে । এসব ভার্চুয়াল সার্ভিস চালু হলে ব্যাংকে পাঠানো রেম্যিটান্স গ্রাহকরা বাসায় বসেই তুলতে পারবেন ।
সোনালী ব্যাংকের চীফ ইনফরমেশন টেকনোলজি অফিসার মোহাম্মদ রেজওয়ান আল বখতিয়ার বলেন ভার্চুয়াল ব্যাংকিংয়ে যেমন গ্রাহকরা নিরবিচ্চিন্ন ২৪ ঘন্টা ব্যাংকিং সেবা পান সেটা যেমন সঠিক তেমনি আমাদেরকে তাদের গচ্ছিত অর্থের নিরাপত্তাও নিশ্চিতকরনে অগ্রাধিকার দিতে হবে । হ্যাকিং এর বিষয়টা মাথায় রেখে আমাদের এইসব সেবা চালু করতে হয় ।এজন্য আমাদের আইটি সিকিউরিটি বিভাগ নামে একটি বিভাগ রয়েছে। সবার আগে গ্রাহকের সঞ্চিত অর্থের নিরাপত্তাই আমাদের কাছে অগ্রাধিকার ।
তিনি বলেন সোনালী ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে কারন আমাদের কার্ড ব্যবহার ফি দেশের অন্যান্য ব্যাংকের তুলনায় কম । আর এই কার্ড ব্যাবহার করে দেশের যে কোন ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারেন গ্রাহকরা ।