খুলনা প্রতিনিধি : দুর্নীতি করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দুর্নীতি করেছেন বলেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আজ কারাগারে। আদালতের রায়ে সাজা হয়েছে।এতে আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো হাত নেই।
শনিবার বিকালে খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের কাজ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস সৃষ্টি করা, মানুষকে পুড়িয়ে মারা। আওয়ামী লীগ কঠোর হাতে জঙ্গিবাদ দমন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে কেউ কুঁড়েঘরে থাকবে না। নিদেন পক্ষে একটা টিনের ঘর হলেও আমরা করে দেব। সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। ২০২১ সালের মধ্যে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হবে। দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে, জনসভায় নৌকার পক্ষে ভোট চান শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, আপনাদের এখন বই কিনতে হয় না, আমি বইয়ের দায়িত্ব নিয়েছি। জানুয়ারির ১ তারিখ বই উৎসব হয়। বই কিনতে বাবা-মাকে একটা টাকাও খরচ করতে হয় না। স্বাস্থ্যসেবা দিতে খুলনায় বিশেষায়িত হাসপাতাল করেছি।
তিনি বলেন, আজকে আমি আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। খুলনার উন্নয়নের দায়িত্ব নিয়েছিলাম। ১০টি নয়, ২০টি নয় আজকে ১০০টি প্রকল্প নিয়ে খুলনায় হাজির হয়েছি। এর মধ্যে ৪৮টি উদ্বোধন ও ৫২টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা যা ওয়াদা দিয়েছিলাম তার বাইরে যেসব কাজ করলে জনগণের কল্যাণ হয়- সেগুলোও আমরা করেছি। আমাদের লক্ষ্য উন্নয়ন। বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, তখন ওই মোংলা বন্দর বন্ধ করে দিয়েছিল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে মোংলা বন্দর চালু করে দিয়েছি।
এ সময় খুলনাবাসীকে একটা সুখবরও দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, খুলনাবাসীকে একটা সুখবর দিতে চাই। ভোলায় অনেক গ্যাস পাওয়া গেছে। সেই গ্যাস আমরা পাইপলাইনে করে বরিশাল ও খুলনা যেন আসে সেই ব্যবস্থা আমরা করে দেব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বিজয়ী জাতি, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা বিজয় অর্জন করেছি। সে ধারাতেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে শনিবার দুপুরে খুলনার খালিশপুরের ঈদগাহ ময়দানে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অব বাংলাদেশের (আইইবি) জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। জাতির জনকের নির্দেশিত পথ মেনেই আমরা চলছি। আমাদের সরকার দুর্নীতি, সন্ত্রাস, মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। মানুষ যেন আইনের শাসনের সুযোগ-সুবিধা পায়, সেজন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছি।
মুক্তিযুদ্ধের পর ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে বঙ্গবন্ধু দেশ গড়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছর পেয়েছিলেন। এই স্বল্প সময়ে তিনি রাস্তাঘাট নির্মাণ থেকে রাষ্ট্রের সার্বিক উন্নয়নে মনোনিবেশ করেছিলেন। পিছিয়ে থাকা একটি প্রদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্রে উন্নত করেছিলেন। তখন তাকে বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহযোগিতা করেছিলেন প্রকৌশলীরা।
বিএনপি-জামায়াত সরকারের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা ক্ষমতায় থাকাকালে আইনের শাসনের অভাবে পাঁচ পাঁচবার সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে স্থান পেয়েছিল বাংলাদেশ। আজ দুর্নীতি উৎখাত করে দুই ধাপ এগিয়েছি আমরা। বিশ্বসভায় উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি।
সরকারের উন্নয়নের ফল জনগণ ভোগ করছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এত বড় বাজেট আমরা নিয়েছি, বাজেটে এত উন্নয়ন প্রকল্প আর কোনো সরকার নিতে পারেনি। গ্রামপর্যায়ে আমরা উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছি। যেন তৃণমূল থেকে উন্নয়নটা উঠে আসে। আমরা জনগণের সেবক, এ বিষয়টি মাথায় রেখে উন্নয়নের কাজ করছি।
খুলনা সফরে প্রধানমন্ত্রী ১০০টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।