অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীতে দ্রুত গতিতে চলছে মেট্রোরেল প্রজেক্টের কাজ। নির্ধারিত স্থানে মাটির গভীরে ৪০ মিটার পর্যন্ত বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। পাশাপাশি চলছে অবিরাম পাইলিংয়ের কাজ। সেই সঙ্গে ডিপো ও স্টেশন নির্মাণের কাজও চলছে বেশ জোরেশোরে। ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ডিএমআরটিপি) কর্তৃপক্ষের পরিকল্পিত পদক্ষেপের কারণে নির্মাণকাজে দুর্ভোগ অনেক কম বলে জানিয়েছেন লোকজন।
সরেজমিন দেখা গেছে, মিরপুর-১০, ১১, ১২, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, তালতলা ও আগারগাঁওয়ের সড়কজুড়ে দিনরাত চলছে নির্মাণকাজ। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নং গেটের সামনের রাস্তার পাশে স্থাপন করা হয়েছে প্রকল্পের অস্থায়ী অফিস। জনদুর্ভোগ কমাতে রাস্তার দু’দিকে দুটি করে চারটি লেন খোলা রাখা হয়েছে। আগারগাঁও এলাকায় প্রকল্পের পাইলিংয়ের জন্য বিশাল আকৃতির ক্রেন, এসকাভেটর বসানো হয়েছে। খননের সময় যেসব মাটি নিচ থেকে তোলা হচ্ছে সেগুলো বক্সে করে উত্তরায় একটি ডাম্পিং সাইটে নিয়ে ফেলা হয়। অন্যদিকে দুর্ঘটনা এড়িয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও সড়ক ব্যবস্থাপনায় ব্যবহার করা হচ্ছে ‘হার্ড ব্যারিয়ার’। এর উপরে দেওয়া হয়েছে কাঁটাতারের ব্যারিকেড।
প্রকল্প পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন তালুকদার জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে উত্তরা থেকে মতিঝিল আসতে সময় লাগবে মাত্র ৩৭ মিনিট। বিদ্যুত্চালিত এ ট্রেনের গতি হবে ঘণ্টায় গড়ে ৩২ কিলোমিটার। এ রুটে ৬টি করে বগির ১৪টি ট্রেন চলাচল করবে। প্রতিটিতে এক হাজার ৬৯৬ জন যাত্রী চলতে পারবে। এরমধ্যে আসনে বসতে পারবে ৯৪২ জন এবং দাঁড়িয়ে থাকবে ৭৫৪ জন। প্রতি ৪ মিনিট পর ট্রেন ছেড়ে যাবে। এতে প্রতি ঘণ্টায় উভয় দিক থেকে ৩০ হাজার করে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা যাবে।
সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতাভুক্ত এ প্রকল্পের রোকেয়া সরণির পরিকল্পনা কমিশনের কাছ থেকে মিরপুর পর্যন্ত মেট্রোরেলের কাজ দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।
গত বছরের ২৬ জুন মেট্রোরেল প্রকল্পের লাইন-৬ এর নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৯ সালের মধ্যে উত্তরা তৃতীয় প্রকল্প থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে। ওই এলাকায় ৯টি স্টেশন নির্মাণ হবে। তবে উত্তরা তৃতীয় প্রকল্প থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো প্রকল্প এলাকায় স্টেশন থাকবে ১৬টি। ২০১২ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয় সরকার। এতে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (জাইকা) দেবে ১৬ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা। আর সরকার দেবে পাঁচ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা।