Current Date:Oct 16, 2024

পদ্মা সেতুর ৩৬তম স্প্যান বসানোর প্রস্তুতি চলছে

জেলা প্রতিনিধি:

অনুকূল আবহাওয়া আর কারিগরি জটিলতা দেখা না দিলে পদ্মাসেতুর ৩৬তম স্প্যান বসতে পারে বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) কিংবা শুক্রবার (৬ নভেম্বর)। ‘ওয়াব-বি’ নামের স্প্যানটি বসানো হবে সেতুর মাওয়া প্রান্তের ২ ও ৩ নম্বর পিলারের ওপর।

দেশি-বিদেশি প্রকৌশলীদের চেষ্টায় স্প্যানটি স্থায়ীভাবে বসানো গেলে দৃশ্যমান হবে সেতুর ৫ হাজার ৪০০ মিটার।
গেলো মাসে পদ্মাসেতুতে চারটি স্প্যান বসানো হয়েছে যা প্রকৌশলীদের বড় একটি সাফল্য। চলতি মাসেও চারটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা আছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের।

 

বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে মুন্সিগঞ্জের মাওয়া কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ভাসমান ক্রেনের মাধ্যমে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্প্যানটি বহন করা হবে। এরপর সেখান থেকে রওয়ানা দিয়ে নিয়ে যাবে নির্ধারিত পিলারের কাছে। সেখানে অবস্থান করে সবকিছু ঠিকঠাক তাহলে বৃহস্পতিবারই বসিয়ে দেওয়া হবে। যদি স্প্যান বসানোর জন্য পর্যাপ্ত সময় না পাওয়া যায় তাহলে শুক্রবার পিলারের ওপর স্প্যান বসানোর কাজ শুরু হবে। ঠিক এমন পরিকল্পনা প্রকৌশলীদের। এই সংক্রান্ত একটি চিঠিও ইস্যু হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রকৌশলী জানিয়েছেন, ২-৩ নম্বর পিলারের অবস্থান মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে। পদ্মানদীর একাবারে তীরের কাছাকাছি। ইতোমধ্যে ৩ হাজার ৬০০ টন ধারণক্ষমতার ভাসমান ক্রেনটি পিলারের কাছে আসার জন্য ড্রেজিং করা হয়েছে। এছাড়া সব ধরনের প্রস্তুতিও গ্রহণ করা হয়েছে। নোঙর করতেও খুব একটা বেগ পেতে হবে না বলে আশা করা যাচ্ছে। কন্সট্রাকশন ইয়ার্ড থেকে ২-৩ নম্বর পিলারের দূরত্ব খুব বেশি না থাকায় ২৫-৩০ মিনিট সময়ের মধ্যেই নির্দিষ্ট স্থানে আসতে পারবে। স্প্যান বসানোর জন্য দুইদিন সময় নেওয়া হয়ে থাকে।

অন্যদিকে পদ্মাসেতুতে বাকি থাকবে ৫টি স্প্যান বসানো। এগুলো- ১১ নভেম্বর পিলার ৯ ও ১০ নম্বরে ৩৭তম স্প্যান (২-সি), ১৬ নভেম্বর পিলার ১ ও ২ নম্বরে ৩৮তম স্প্যান (১-এ), ২৩ নভেম্বর পিলার ১০ ও ১১ নম্বরে ৩৯তম স্প্যান (২-ডি), ২ ডিসেম্বর পিলার ১১ ও ১২ নম্বরে ৪০তম স্প্যান (২-ই) ও ১০ ডিসেম্বর সর্বশেষ ৪১ নম্বর স্প্যান (২-এফ) বসবে ১২ ও ১৩ নম্বর পিলারের ওপর।

সূত্রে জানা যায়, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পুরো পদ্মাসেতু প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮২ শতাংশ। নদী শাসন কাজের অগ্রগতি ৭৫ শতাংশ। মূল সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি এখন ৯০.৫০ শতাংশ। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে। মূল সেতুর দুই হাজার ৯১৭টি রোডওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১ হাজার ১৬৬টির বেশি বসানো হয়েছে। দুই হাজার ৯৫৯টি রেলওয়ে স্ল্যাবের মধ্যে ১ হাজার ৬৪৬টির বেশি স্ল্যাব বসানো হয়েছে। মাওয়া ও জাজিরা ভায়াডাক্টে ৪৮৪টি সুপার টি গার্ডারের মধ্যে ২৫৮টি স্থাপন করা হয়েছে। স্প্যান বসানোর পাশাপাশি স্ল্যাব বসানোর কাজও এগিয়ে চলছে। বন্যা ও করোনা পরিস্থিতিতে চারমাস স্প্যান বসানো না গেলেও অক্টোবর মাসে চারটি স্প্যান বসানো হয়।

প্রকৌশলী সূত্রে জানা যায়, পদ্মাসেতুতে মোট ৪২টি পিলারে বসানো হবে ৪১টি স্প্যান। ইতোমধ্যে ৩৫টি স্প্যান বসিয়ে দৃশ্যমান হয়েছে ৫ হাজার ২৫০ মিটার। আর ছয়টি স্প্যান বসিয়ে দৃশ্যমান বাকি ৯০০ মিটার।
পুরো সেতু ৬, ১৫০ মিটার (৬.১৫ কিলোমিটার)।

মূল সেতু নির্মাণের কাজ করছে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন।

Share