নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতার কারণেই দেশের অর্থনীতিতে করানোর সময়ও কোন নেতিবাচক প্রভাব পড়ে নি। করোনা পরিস্থিতিতে সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কয়েক দফায় এক লাখ ২৩ হাজার ৩৫০ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। সেজন্য দেশের অর্থনীতি চাঙ্গাভাব বজায়ে ছিল। করোনা ভাইরাসের কারনে বিশ্বের সকল প্রতিষ্ঠানই কম বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব বিবেচনায় বাংলাদেশের সার্বিক অর্থনীতির চাকা অনেকটা সচল ছিল। করোনা সঙ্কট কেটে যাওয়ায় ব্যাংক খাত ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। সে কারনে বড় ঋন বিতরনের চেয়ে ছোট ছোট বা বা কৃষি ঋণ দেয়াকেই প্রাধান্য দিচ্ছি ব্যাংকগুলো। বিশিষ্ট ব্যাংকারও রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের সামনে এখন প্রধান বিকল্প হলো কৃষি খাত। কৃষি খাত আমাদের বাঁচিয়ে রাখবে। কারণ কৃষি খাতের উৎপাদন বন্ধ হয়নি।’ তিনি বলেন, কৃষি খাতের প্রধান সমস্যা বিপণন। করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুতে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণে কৃষি বিপণনে ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি হয়েছিল। এখন পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকার এগিয়ে এসেছে। তাঁর মতে, রূপালী ব্যাংকের এমডি হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি কৃষকদের জন্য বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছেন যাতে কৃষকরা সরাসরি উপকৃত হন। তিনি বলেন ‘করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর থেকেই আমরা দুগ্ধ খামারিদের জন্য কম সুদে ঋণ দিচ্ছি। আমাদের স্লোগান তৈরি করেছি ‘করোনাকালে দুধ না ফেলে ঘি বানান, দুগ্ধ খাতে জাগুক প্রাণ’। শুধু ঘি নয়, দুগ্ধজাত বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনে মিল্ক ভিটার মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ হারে খামারিদের প্রণোদনা সুবিধার আওতায় ঋণ দেওয়ার বিষয়টি আমাদের পর্ষদে অনুমোদিত হয়েছে। আদা চাষে বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে রেয়াতি সুদে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পেঁয়াজ সংকট মোকাবেলায় পেঁয়াজ উৎপাদনে ব্যাপক ভিত্তিতে ঋণ বিতরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন প্রকার মৌসুমি ফল, ফুল ও সবজি উৎপাদন, ডেইরি এবং পোল্টি খাতে উৎপাদন অব্যাহত রাখা ও মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সব শাখার মাধ্যমে ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। টমেটো চাষিদেরও স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। কৃষির পাশাপাশি শিল্প খাতকে টিকিয়ে রাখতে যা যা করা দরকার তার সবই করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে রূপালী ব্যাংক। তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাক, স্বাস্থ্যসেবা খাত এবং উৎপাদনমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি আমরা। বর্তমান কঠিন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতেও আশার কথা শুনিয়ে রূপালী ব্যাংকের এমডি বলেন, ডিপোজিট ৫৩ হাজার কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। আমাদের টার্গেট ছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা সে হিসাবে ৩ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের রেমিট্যান্সও বেড়েছে গত বছরে আমরা ছিলাম ২৩ নম্বরে, এবছর আমরা ৬ নম্বরে উঠে এসেছি। সামনে আরও ভালো হবে। ডিজিটাল ব্যাংকিং ও গ্রাহকসেবায় রাষ্ট্রায়ত্ত অন্য যেকোনো ব্যাংকের তুলনায় শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে রূপালী ব্যাংক। তিনি জানান, আগামী তিন বছরের মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকগুলোকেও পেছনে ফেলে ডিজিটালি এক নম্বর ব্যাংক হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। ব্যাংক খাতে সুদহার কমে আসায় অর্থনীতি নিয়েও বেশ আশাবাদী এই দক্ষ ব্যাংকার বলেন, ইন্টারনেট ব্যাংকিং যুগের দাবি। যেহেতু বাংলাদেশ ডিজিটেল হয়ে গেছে। ইন্টারনেট ব্যাংকিং থেকে পিছিয়ে থাকার কোন উপায় নাই। সব ব্যাংকের ইন্টারনেট ব্যাংকিং করতে হবে। তবে নিরাপত্তার বিষটি বিবেচনা রাখতে হবে। রূপালী ব্যাংকের এমডি আরও বলেন, আমরাও ইন্টারনেট ব্যাংকিয়ে গুরুত্ত্ব দিচ্ছি। যত দ্রুত সম্ভব শুরু করবো। রূপালী ব্যাংকের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ এ ব্যাংকে যোগদানের আগে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকে সাফল্যের সঙ্গে তিন বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। অনলাইন ব্যাংকিং সেবার ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংককে তিনি অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। রুপালী ব্যাংকে এসেও তিনি নানা সংস্কারমূলক কাজ করে যাচ্ছেন।
Lead Newsঅর্থনীতি
প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শিতায় করোনায়ও গতিশীল অর্থনীতি: রূপালী ব্যাংকের এমডি
পিপল নিউস 24Feb 24, 2021113
Share