Current Date:Oct 3, 2024

বাড়ছে গরম, সপ্তাহ শেষে বৃষ্টির আভাস

অনলাইন ডেস্ক : টানা বৃষ্টির বদৌলতে এবার গ্রীষ্মের গরম সেভাবে টের পাওয়া না গেলেও গত কয়দিন ধরে তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী। সেই সঙ্গে বাড়ছে শ্রমজীবীদের দেহের ঘাম। গরমের কারণে কমে গেছে রাতের ঘুমও।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে আজ রবিবার দেশে সবচেয়ে বেশি গরম পড়েছে যশোরে, ৩৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় পারদ কিছুটা কম। এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫.৭ ডিগ্রি।

অবশ্য রাজধানীতে তামপাত্রার চেয়ে গরমের অনুভূতি বেশি থাকে বায়ু দূষণ আর পর্যাপ্ত সবুজের অভাবে। আর আবহাওয়া অধিদপ্তর যে এলাকায় তামপাত্রা মাপে তা তুলনামূলক খোলা এলাকা, গাড়ির চালাচলও অনেক কম। আবাসিক এলাকায় গরমের অনুভূতিও থাকে বেশি।

পূর্বাভাস বলছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে এক থেকে দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। আর দুই ডিগ্রি বাড়লে সেটা হবে মৌসুমের সর্বোচ্চ তামপাত্রা। গত মাসে একবার তামপাত্রা ৩৭ ডিগ্রিতে পৌঁছেছিল।

অবশ্য তাপমাত্রা বাড়ার এই প্রবণতা বেশি স্থায়ী হবে না। চলতি সপ্তাহ শেষে আবার শুরু হবে বৃষ্টি।

গরম আসলেই সামাজিক মাধ্যমগুলোতে চলে নানা লেখনি। সেটি এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। তাপ প্রবাহ আরও বাড়বে কি না, সে প্রশ্ন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে এরই মধ্যে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, গ্রীষ্মের স্বাভাবিক গরম পড়েনি এখনও। বৃষ্টির কারণে বেশ আরামদায়ক গ্রীষ্মকালই পার করছে মানুষ। আর সেই ধারাবাহিকতায় ছেদ পড়বে না, অর্থাৎ তামপাত্রা খুব একটা বাড়বে না।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে চলতি মে মাসে দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি তীব্র এবং দেশের অন্যত্র দুই একটি মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহ আসার কথা বলা ছিল। কিন্তু মাসের আর চার দিন বাকি আছে। সে তাপপ্রবাহ আসেনি। আর আসবেও না-বলছে অধিদপ্তর।

আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মাঝেমধ্যে ব্যতিক্রম ছাড়া আপাতত এই অবস্থাই চলবে। অর্থাৎ বৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টিই হবে প্রধান প্রবণতা। দুই তিন দিন বৃষ্টির পরিমাণ কম থাকবে। সেই সাথে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা দুটোই বেড়ে যাবে। তবে আগামী ৩০ তারিখের পর বৃষ্টির প্রবণতা বেড়ে যাবে।’

অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী এ বছরের মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসে গড় বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।

অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত, দীর্ঘ সময় ধরে কালবৈশাখী, অত্যধিক সংখ্যায় বজ্রপাতের প্রবণতা শুরু হয়েছে ২০১৫ সাল থেকে।

অধিদপ্তরেরই গবেষণায় পাওয়া তথ্য হলো, ১৯৮১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ৩০ বছর গ্রীষ্ম ঋতুতে গড় বৃষ্টিপাত ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে কিছু কম।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, এ বছর এপ্রিলে শক্তিশালী পশ্চিমা বাতাস এবং লঘুচাপ দুর্বল থাকায় স্থানীয়ভাবে নিম্নচাপও বেশি ছিল। এ কারণে কালবৈশাখী বেশি হয়েছে। ফলে জন্য তাপমাত্রা বাড়তে পারেনি। প্রায় প্রতিদিনই দেশের বিভিন্নস্থানে বৃষ্টি হয়েছে। তবে আগামী দুই একদিনের মধ্যে ‘সিস্টেম’ পাল্টে যাবে হয়ে যাবে।

বজলুর রশিদ বলেন, ‘কয়েক দিন আগে আবার ভারতে স্থলভূমিতে ওপর একটা সিস্টেম গড়ে ওঠে, তাতে প্রায় ১০০ ওপরে বজ্রপাতে লোক মারা যায়। সেটার প্রভাবেও আমাদের এখানে বৃষ্টিপাত হয়েছে।’

‘এ বছর আমাদের সিস্টেমগুলো বেশিরভাগ রাজশাহীতে গড়ে ওঠেছে, সেটি ঢাকা, কুমিল্লা হয়ে ত্রিপুরার দিকে চলে গেছে। এ কারণে এ বছর ঢাকায় বেশি বৃষ্টি মনে হয়েছে। আর প্রায় প্রতিদিন বৃষ্টিপাত হওয়ায় তাপমাত্রা বাড়তে পারে নাই।’

বজলুর রশিদ বলেন, মে মাস প্রায় শেষ হয়ে এসেছে, জুনের প্রথমার্ধে সারা দেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বিস্তার লাভ করার কথা। এই বায়ুই দেশে বর্ষাকাল নিয়ে আসে। এ বছর বর্ষায় (জুন-সেপ্টেম্বর) স্বাভবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।’

রবিবার সকাল নয়টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা ও রাজশাহী বিভাগের কোথাও কোথাও মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।

রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া ও বিজলী চমকানোসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

Share