নিজস্ব প্রতিবেদক : কাঠমান্ডুতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় আহত ১০ বাংলাদেশির মধ্যে একজনকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে গেছে তার পরিবার, আরেকজনকে নিয়ে আসা হচ্ছে ঢাকায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নেপালি চিকিৎসকরা ১০ বাংলাদেশির মধ্যে ছয়জনকে ছাড়পত্র দিয়েছেন। দুজনকে এখনও আইসিইউতে রাখা হয়েছে, একজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বার্ন ইউনিটে। আর একজনকে পরিবার দিল্লিতে নিয়ে যেতে চাইলেও তার ছাড়পত্র এখনও মেলেনি।
কাঠমান্ডুর ওম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিজওয়ানুল হককে বুধবারই নেপাল থেকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে গেছেন তার বাবা মোজাম্মেল হক।
ইউএস বাংলার জিএম (মিডিয়া) কামরুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, তাদের ব্যবস্থাপনাতেই রেজওয়ানকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়েছে।
আর কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা নেওয়া শাহরিন আহমেদকে নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে দেশে ফিরছেন তার ভাই লেফটেন্যান্ট কর্নেল সরফরাজ আহমেদ।
একই হাসপাতালে থাকা মেহেদী হাসান, সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা এবং আলমুন নাহার অ্যানিও ছাড়পত্র পেয়েছেন।
তাদেরও শিগগিরই দেশে পাঠানো হবে বলে কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাশফি বিনতে শামস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার নেপালে অবস্থানরত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আজ দুপুর দেড়টায় বাংলাদেশ বিমানের যে ফ্লাইটটি আসার কথা রয়েছে সেটি এলে শাহরিন আহমেদকে দেশে নিয়ে যাওয়া হবে।”
নেপালে বাংলাদেশ দূতাবাসের হেড অব চ্যান্সেরি আল আলিমুল ইসলাম ইমাম জানান, নরভিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইয়াকুব আলীকে তার ভাই দীপু ব্যাপারি এবং কাঠমাণ্ডু মেডিকেলে থাকা ইমরানা কবির হাসিকে তার পরিবার দিল্লি নিয়ে যেতে চান।
তাদের মধ্যে ইয়াকুব ইতোমধ্যে চিকিৎসকদের ছাড়পত্র পেয়েছেন। কিস্তু রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাসির অবস্থা এখনও স্থিতিশীল নয়।
বাকি তিন বাংলাদেশির মধ্যে শেখ রাশেদ রুবাইয়াত ও কবির হোসেন কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজের আইসিইউতে এবং মো. শাহীন বেপারি ওই হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন।
সোমবার কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ৭১ আরোহীর মধ্যে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে চার ক্রুসহ ২৬ জন ছিলেন বাংলাদেশি।
দূতাবাস কর্মকর্তা আলিমুল ইসলাম ইমাম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক লুৎফর কাদির লেলিনের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি চিকিৎসক দল ইতোমধ্যে নেপালের পথে রওনা হয়েছেন। তারা অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসায় সহযোগিতা দেবেন।
এই প্রতিনিধি দলের সঙ্গে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের দুই সদস্যও রয়েছেন, যারা পোড়া লাশের ডিএনএ পরীক্ষা করে তাদের পরিচয় শনাক্ত করার কাজে নেপালকে সহায়তা করবেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আহতদের পরিচয় নিশ্চিত করার পর মরদেহের সংখ্যার ভিত্তিতে কোন দেশের কতজন মারা গেছেন, তা হিসাব করেছে নেপালি কর্তৃপক্ষ। সেই হিসেবেই বাংলাদেশের ২৬ জনের মৃত্যুর কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বিমানে আগুন ধরে যাওয়ায় পুড়ে যাওয়া অনেকের মরদেহ আলাদা করে শনাক্ত করা যায়নি।