অনলাইন ডেস্ক : রসালো হওয়ায় লাল টুকটুকে মিষ্টি স্বাদের তরমুজ খেতে কম বেশি সবাই ভালোবাসেন। এতে শতকরা ৯২ ভাগ পানি বিদ্যমান রয়েছে। তাই গরমে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে তরমুজের জুড়ি মেলা ভার। এটি খেলে সহজেই পানির তৃষ্ণা মেটে। শুধু আকার-আকৃতিতে তরমুজ বড় নয়, এর গুণের ভাণ্ডারও কিন্তু সমৃদ্ধ। এতে ভিটামিন এ, পটাশিয়াম এবং ক্যারোটিনয়েড প্রভৃতি নানা উপাদান রয়েছে, যা হার্ট, কিডনি সুস্থ রাখতে এবং শরীর ঠাণ্ডা রেখে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তবে তরমুজ বেশি খেলে কিংবা ভুল সময় খেলে তা হিতে বিপরীত হতে পারে। বিশেষ করে রাতে তরমুজ খেলে তা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। তাই ঝুঁকি এড়াতে রাতে তরমুজ না খাওয়াই ভালো।
রাতে তরমুজ খাওয়ার নানা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ফিটনেস স্পেল ডট কম-
সহজে হজম হয় না
তরমুজ সহজে হজম হয় না। আবার হজমেও সাহায্য করে না। তাই রাতে তরমুজ খেলে ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম হতে পারে বা পরদিন সকালে পেট খারাপ হয়ে যেতে পারে। রাতে যেহেতু আমাদের পরিপাক ক্রিয়া ধীর গতিতে হয়,তাই মিষ্টি ও অ্যাসিডিক খাবার রাতে না খাওয়াই ভালো।
ওজন বাড়ে
তরমুজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ন্যাচারাল সুগার থাকে। ফলে রাতে তরমুজ খেলে ওজন বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
বারবার প্রস্রাব
তরমুজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ জল থাকার কারণে রাতে বারবার প্রস্রাব ধরতে পারে। ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। এতে করে পরের দিন আপনাকে অনেক ক্লান্ত দেখায়।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা
আয়ুর্বেদেও রাতে কোনো ফল বা তরমুজ খেতে বারণ করা হয়েছে। রাতে ফল খেলে ডায়েরিয়া, এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও হতে পারে।
হাইপারকেলেমিয়া
রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা অস্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে চিকিৎসা বিজ্ঞানে তাকে হাইপারকেলেমিয়া বলা হয়। তরমুজে পটাশিয়াম বিদ্যমান থাকায় রাতে বেশি পরিমাণে এই ফল খেলে তা রক্তে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর ফলে কার্ডিভাসকুলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়,নাড়ি দুর্বল হয়,কার্ডিয়ার অ্যারেস্ট,অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন,নার্ভ এবং মাংসপেশীতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এর ফলে কিডনিরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অন্ত্রের সমস্যা
তরমুজে লাইকোপিন বিদ্যমান থাকায় তা বেশি পরিমাণে খেলে শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এর ফলে গ্যাসের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির তথ্য মতে, কোন ব্যক্তি দৈনিক দুবার ১৫ মিলিগ্রাম লাইকোপিন সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করলে তাদের অন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা বিশেষ করে ডায়রিয়া, বমি, বদহজম প্রভৃতি দেখা দেয়।
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস
গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে তরমুজ খেলে রক্তে শর্করার অনেক পরিমাণ বেড়ে যায়। এর কারণে পরবর্তীতে গর্ভবতী নারীদের ডায়াবেটিস হতে পারে। এর ফলে পেটে মারাত্মক ব্যথা এবং ডায়রিয়াও হতে পারে। আবার পেটের বাচ্চার স্বাস্থ্যেরও অনেক ক্ষতি হয়। তবে গর্ভবতী নারীরা তরমুজ খেতে চাইলে তাদের দুপুরে খাওয়ার আগে তা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
রক্তচাপ কমায়
বেশি পরিমাণে তরমুজ খেলে তা রক্তচাপের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। তাই আপনি যদি স্বাভাবিকভাবেই নিম্ন রক্তচাপে ভুগে থাকেন তাহলে তরমুজ খাওয়া থেকে নিজেকে বিরত রাখুন।
অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া
তরমুজ বেশি পরিমাণে খেলে তা আপনার শরীরে অ্যালার্জির নানা প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে। অ্যালার্জির কারণে ত্বকে র্যাশ উঠতে পারে, মুখেও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার ডায়েরিয়ারও হতে পারে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো নয়
তরমুজে প্রাকৃতিক চিনি বিদ্যমান থাকায় উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য এটি খাওয়া ক্ষতিকর। এ কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের এই ফলটি না খাওয়াই ভালো।