জেলা প্রতিনিধি:
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বালিশ কেলেঙ্কারির অন্যতম হোতা ঠিকাদার শাহাদাত হোসেন যাতে দেশত্যাগ করতে না পারে সে জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নজর রাখার অনুরোধ করেছে। গত ১ সেপ্টেম্বর আদালত থেকে জামিন পেয়ে কারামুক্ত হয়েছেন শাহাদাত।
উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করে ব্যর্থ হওয়ার পর গত ১ সেপ্টেম্বর পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন পেয়ে ওইদিনই শাহাদাত হোসেন কাশিমপুর কারাগার থেকে ছাড়া পান বলে আদালত ও দুর্নীতি দমন কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
রূপপুরে রাশিয়ানদের আবাসস্থল নির্মাণের অন্যতম শীর্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাজিন কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের মালিক শাহাদাত হোসেন রূপপুর প্রকল্পের আসবাবপত্র সরবরাহে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে গত বছরের ডিসেম্বরে গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যান। তার বিরুদ্ধে দুদকের পাবনা জেলা সমন্বিত কার্যালয় দুটি আলাদা দুর্নীতির মামলা করে।
যাতে বলা হয়- রূপপুর প্রকল্পে আসবাবপত্র সরবরাহে আস্বাভাবিক দর দিয়ে তারা প্রায় ১৬ কোটি টাকা তছরূপ করেছে। মামলাটি তদন্ত করছে দুদক পাবনা কার্যালয়।
দুদকের পাবনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, শাহাদাতের আইনজীবীরা গত ৩১ আগস্ট পাবনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তার জামিনের জন্য আবেদন করেন। শুনানি শেষে পাবনা জেলা ও দায়রা জজ মকবুল আহসান তার জামিন মঞ্জুর করেন। তড়িঘড়ি করে জামিনের আদেশ গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে পাঠালে ১ সেপ্টেম্বর রাতে কাশিমপুর কারাগার থেকে তিনি ছাড়া পান।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আবাসিক ভবনের জন্য একটি বালিশ কিনতে ৫ হাজার ৯৫৭ টাকা এবং তা ফ্ল্যাটে তুলতে আরও ৭৬০ টাকা ব্যয় দেখানো হয়। এছাড়াও একটি চুলা ক্রয়ে ৭ হাজার ৭৪৭ টাকা এবং তা ফ্ল্যাটে তুলতে ৬ হাজার ৬৫০ টাকা ব্যয় দেখানো হয়। একটি ইস্ত্রি কিনতে ৪ হাজার ১৫৪ টাকা এবং তা তুলতে ২ হাজার ৯৪৫ টাকা ব্যয় দেখানো হয়।
এভাবে রূপপুর প্রকল্পে কেনাকাটায় ব্যাপক দুর্নীতির সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে দুদক তদন্ত শুরু করে। এসব ঘটনায় ইঞ্জিনিয়ার, ঠিকাদারদের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা করে দুদক।
দুদকের পক্ষ থেকে ইমিগ্রেশন কর্তপক্ষকে জানানো হয়েছে- ঠিকাদার শাহাদত হোসেন যেন দেশত্যাগ করতে না পারেন। এছাড়াও উচ্চ আদালতে শাহাদতের জামিন বাতিলের জন্য দুদকের পক্ষ থেকে ‘রিভিউ পিটিশন’ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের পাবনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন।