Current Date:Oct 14, 2024

লিটন নয়, আজও সাব্বির-মোসাদ্দেক?

স্পোর্টস ডেস্ক : সেন্ট কিটসে বাংলাদেশ এসেছে দুবার। দুবার দুই লক্ষ্য নিয়ে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ এসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই করতে। ২০১৪ সালে ধবলধোলাই ঠেকাতে। প্রথমটি পেরেছিল, দ্বিতীয়টি পারেনি। এবার সিরিজের মীমাংসা করতে ছবির মতো সুন্দর এই দ্বীপে পা রেখেছে বাংলাদেশ। পারবে তারা লক্ষ্যটা পূরণ করতে?

ওয়ার্নার পার্কে কাল ঢোকার পরই মনে হলো, এ মাঠে সবচেয়ে সহজ কাজ হতে পারে ছক্কা মারা! অপেক্ষাকৃত ছোট মাঠ আর শো শো বাতাস। বাতাসের অনুকূলে একটু তুলে মারলেই বল উড়ে এসে পড়ে সীমানার ওপারে। ওয়ার্নার পার্কের প্রথাগত ন্যাড়া উইকেটে আজ বাংলাদেশের বোলাররা যদি একটু তাল হারিয়ে ফেলেন, তাঁদের পরিণতি নিশ্চয় বুঝতে পারছেন।

শুধু বাংলাদেশের বোলারদের কঠিন পরীক্ষা, ওয়েস্ট ইন্ডিজের নয়? টিম হোটেল লাগোয়া ভারতীয় রেস্তোরাঁয় রাতের খাবার খাওয়ার সময় তামিম ইকবাল বুঝতে চাইলেন মাঠের আয়তন কেমন। বাংলাদেশ দল শুক্রবার ঐচ্ছিক অনুশীলন করেছে। অনুশীলনটা ঐচ্ছিক হলেও সাকিব-তামিম বাদে সবাই ছিলেন মাঠে। তামিম যাননি বলে মাঠ সম্পর্কে ধারণা নিচ্ছেন সতীর্থদের কাছ থেকে। পরে নিজেই বললেন, ‘কপালে আউট লেখা থাকলে মাঠ ছোট হোক আর বড়, কোনো ব্যাপার নয়’। গায়ানায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হালকা চোট পেয়েছিলেন বাঁহাতি ওপেনার। সেন্ট কিটসে আসার পথে নিজেই জানিয়েছেন, চোট গুরুতর নয়। ওয়ার্নার পার্কে ফাইনালে রূপ নেওয়া শেষ ম্যাচে তাঁর খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা নেই।

সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশের একাদশ তাহলে কেমন হচ্ছে? হঠাৎ দলে পরিবর্তন আনার পক্ষে নয় টিম ম্যানেজমেন্ট। যদিও দু-তিনটি জায়গায় অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার চিন্তা আছে। ওপেনিংয়ে এনামুল হক, আর লোয়ার মিডল অর্ডারে সাব্বির রহমান-মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে।

গায়ানায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দিয়েছিলেন এনামুল। কিন্তু তাঁর আউটটা ছিল ভীষণ দৃষ্টিকটু। তবে মাশরাফি মনে করেন, এনামুলের ওই ৯ বলে ২৩ রানের ইনিংসটা সাকিব-তামিমকে বুঝেশুনে এগোতে সহায়তা করেছে। শেষ ম্যাচেও এনামুলকে বাইরে রাখার পক্ষে নন অধিনায়ক। যদি টপ অর্ডারে বড় পরিবর্তন আনতে হয় তাহলে লিটন দাসকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

লিটনকে নিলে খেলাতে হবে তিনে। কিন্তু তিনে ধারাবাহিক রান করা সাকিব আল হাসানকে কোথায় খেলাবেন মাশরাফি? পাঁচে? অধিনায়ক চান না হঠাৎ বাঁহাতি অলরাউন্ডারের ব্যাটিং পজিশন বদলাতে। সাব্বির-মোসাদ্দেকের একজনকে বসিয়ে লিটনকে আনা যেতে পারে। কিন্তু ফাইনালে হঠাৎ কাউকে খেলিয়ে তাঁর কাছে সেরাটা পাওয়া কঠিন। সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে নামাটাই সেরা উপায় মনে করছে টিম ম্যানেজমেন্ট।

সেন্ট কিটসে প্রথমবারের মতো খেলতে এলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। গায়ানার চেয়ে কন্ডিশন একটু ভিন্ন, তবুও দলের তরুণ অফ স্পিনারকে ম্যাচটা নিয়ে আশাবাদী মনে হলো, ‘উইকেট দেখেছি, সবকিছু ঠিক থাকলে আশা করি ভালো কিছু করতে পারব। আমাদের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের ভালো ধারণা আছে এ মাঠ সম্পর্কে। গায়ানায় ভালো সুযোগ ছিল। এখনো সুযোগ আছে। গায়ানায় যেভাবে ব্যর্থ হয়েছি সেটা নিয়ে নিজেদের মধ্যে আমরা কথা বলেছি। ভবিষ্যতে চেষ্টা করব এমন পরিস্থিতিতে পড়লে যেন উতরে যেতে পারি।’

দুপুরে অনুশীলনের ফাঁকে মাশরাফিকে মনে করিয়ে দেওয়া হলো এর আগে সেন্ট কিটসে বাংলাদেশ যে দুবার এসেছে, দুবার দুই লক্ষ্য নিয়ে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ এসেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ওয়ানডে সিরিজে ধবলধোলাই করতে। ২০১৪ সালে ধবলধোলাই ঠেকাতে। প্রথমটি পেরেছিল, দ্বিতীয়টি পারেনি। এবারই প্রথম সিরিজের মীমাংসা করতে ছবির মতো সুন্দর এই দ্বীপে পা রেখেছে বাংলাদেশ। সুন্দর দ্বীপে সুন্দর গল্প লিখতে পারবে তারা? মাশরাফি প্রশ্নটার উত্তর দিলেন, তবে না লেখার শর্তে!

 

Share