Current Date:Nov 29, 2024

শাকিব খানের আরেকটি ছবি ঠেকাতে তৎপরতা শুরু

বিনোদন প্রতিবেদক : ‘গত দুই বছর চলচ্চিত্রের গুটি কয়েক মানুষের কার্যক্রম দেখে মনে হয়, আমার ছবি মুক্তিতে তাদের যত অ্যালার্জি। মনে হচ্ছে, আমাকে এ দেশে নিষিদ্ধ করা হয়েছে! তা না হলে আমার কোনো ছবি মুক্তি পাওয়ার সময় কেন এত প্রতিবন্ধকতা তৈরি করা হবে?’ গত শনিবার প্রথম আলোর কাছে এ মন্তব্য করেন শাকিব খান, দেশের চলচ্চিত্রের শীর্ষ নায়ক। তাঁর অভিনীত ‘চালবাজ’ ছবির মুক্তি ঠেকাতে একটি মহলের চেষ্টার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে এ মন্তব্য করেন। এবার শোনা যাচ্ছে, শাকিব খান অভিনীত ‘সুপার হিরো’ ছবির মুক্তি ঠেকাতে এরই মধ্যে তৎপরতা শুরু হয়ে গেছে।

চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড যাতে ‘সুপার হিরো’ ছবির ছাড়পত্র না দেয়, তার জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চিঠি দিয়েছেন মেসার্স নিপা এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার সেলিনা বেগম। এখানে তিনি লিখেছেন, ‘সুপার হিরো’ নামক ছবিটির জন্য সরকারি অনুমতি (ওয়ার্ক পারমিট) না নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় শুটিং করা হয়েছে। সরকারি অনুমতি ব্যতীত সরকারের রাজস্ব ও ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে অবৈধ পথে দেশ থেকে টাকা নিয়ে গত ২২ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় ছবিটির শুটিং করা হয়েছে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, আগামী ঈদে ছবিটি মুক্তির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এতে করে সাধারণ প্রযোজকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাই ‘সুপার হিরো’ ছবিটি নিয়ম না মানার কারণে সেন্সর সনদ পাওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছে। তথ্যসচিব বরাবর লেখা এই চিঠিতে বলা হয়, ‘সুপার হিরো’ ছবির বিরুদ্ধে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়াসহ অনুমতি না নিয়ে বিদেশে শুটিং করার অভিযোগ তদন্ত করে যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ৩ মে সেলিনা বেগমের স্বাক্ষর করা একটি চিঠি তথ্য মন্ত্রণালয়ে জমা পড়েছে।

‘সুপার হিরো’ ছবির পরিচালক আশিকুর রহমান বলেন, ‘দেখুন, যে অভিযোগ করা হয়েছে, সে ব্যাপারে প্রযোজক ব্যবস্থা নেবেন। ছবির শুটিং শেষ। আমি এখন সম্পাদনা নিয়ে ব্যস্ত।’

ছবিটি প্রযোজনা করছে হার্টবিট প্রডাকশন। এই প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার তাপসী ঠাকুর প্রথম আলোকে বলেন, ‘অবশ্যই আমরা প্রয়োজনীয় সব অনুমতি নিয়ে কাজ করেছি। আমি সরকারকে ফাঁকি দিইনি। কোনো অন্যায় করিনি। যেসব অভিযোগ শুনছি, তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন।’

তাপসী ঠাকুর আরও বলেন, ‘আমার ছবির কাজ তো এখনো শেষ হয়নি। যখন চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডে জমা দেব, তখন অবশ্যই প্রয়োজনীয় সব অনুমতির কাগজসহ জমা দেব। পানি না দেখে মোজা খুললে তো হবে না!’

তাঁর বিরুদ্ধে শত্রুতা করা হচ্ছে, এমন অভিযোগ করে তাপসী ঠাকুর বলেন, ‘যেহেতু আমার ছবিটি ঈদে মুক্তি দেওয়ার পরিকল্পনা করছি, তা জানাজানি হওয়ার পর একটি মহল এই মুক্তি ঠেকাতে উঠেপড়ে লেগেছে। তথ্য মন্ত্রণালয়ে একজন নারী যে চিঠি দিয়েছেন, তা আপনার কাছ থেকেই শুনেছি। আমি বলব, কেউ নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য এই তৎপরতা চালাচ্ছে।’

নিপা এন্টারপ্রাইজ এবং প্রযোজক ও পরিবেশক সেলিনা বেগমের ব্যাপারে খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, এই নামে কোনো প্রতিষ্ঠান কিংবা প্রযোজকের ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে পারেনি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘কে ইনি? কয়টা ছবি বানাইছে? কী কী ছবি বানাইছে? এই নামে কাউকে চিনি বলে তো মনে করতে পারছি না।’

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিবেশক সমিতির সভাপতি, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের অন্যতম সদস্য ও মধুমিতা প্রেক্ষাগৃহের স্বত্বাধিকারী ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘এই নামে আমি কাউকে চিনি না।’

যে প্যাডে এই আবেদনটি করা হয়েছে, তাতে লেখা আছে, ‘নিপা এন্টারপ্রাইজ, প্রযোজক ও পরিবেশ’। আর ইংরেজিতে লেখা ‘ডিস্ট্রিবিউটর’ বানাটিও ভুল। এ ব্যাপারে বিশিষ্ট প্রযোজক ও পরিবেশক খোরশেদ আলম বলেন, ‘এই নামে কোনো প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান আছে বলে আমার জানা নেই। পরিবেশ যেহেতু লেখা, তাহলে হয়তো পরিবেশ নিয়ে কাজ করছে।’

আর সোমবার সন্ধ্যায় তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ধরনের কোনো আবেদন জমা পড়েছে বলে মনে করতে পারছি না।’

তাপসী ঠাকুর জানান, এর আগে ঈদ উপলক্ষে তাঁর প্রযোজিত চারটি ছবি মুক্তি পেয়েছে। এই ছবিগুলো হলো ‘মনে প্রাণে আছ তুমি’ (২০০৭), ‘আমার প্রাণের প্রিয়া’ (২০০৯), ‘খোদার পরে মা’ (২০১৩) এবং ‘লাভ ম্যারেজ’ (২০১৫)। সূত্র : প্রথম আলো

Share