Current Date:Sep 24, 2024

৬০ বলে ৮০ রান দরকার বাংলাদেশের

স্পোর্টস ডেস্ক : শ্রীলঙ্কার ইনিংসে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমভাগে খেলল বাংলাদেশ, দ্বিতীয় ভাগে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ১০ ওভারে দুর্দান্ত বাংলাদেশ উড়ছিল আকাশে। সে বাংলাদেশই ইনিংসের দ্বিতীয় ভাগে রীতিমতো দুমরে মুচড়ে গেল। প্রথম ১০ ওভারে ৫ উইকেটে ৫৩ রান করা শ্রীলঙ্কাই ইনিংস শেষ করল ১৫৯ রানে। সেটাও মাত্র ৭ উইকেটে হারিয়ে। পরের ১০ ওভারে শ্রীলঙ্কা ১০৬ রান যোগ করেছে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে। যে দুটি উইকেট হারিয়েছে এই পর্যায়ে, সে দুজনই করেছেন সর্বনাশ। রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। দলীয় ১১ রানেই বাজে শট খেলে ফিরে গেছেন লিটন দাস।

মাঝে এক ওভার পর ফিরে যান সাব্বির রহমানও। আকিলা ধনঞ্জয়ার বলে ঢিলেঢালা শট খেলতে গিয়ে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন সাব্বির। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২ উইকেটে ৮০। ব্যাট করছেন তামিম (৩৭*) ও মুশফিক (২৩*)। জয়ের জন্য শেষ ১০ ওভারে ৮০ রান দরকার বাংলাদেশের।

অথচ কী দুর্দান্ত শুরু ছিল বাংলাদেশের! মনস্তাত্ত্বিক খেলার কিছু নয় বলেই জানিয়েছিলেন চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। তড়িঘড়ি করে সাকিব আল হাসানকে ডেকে আনার সিদ্ধান্ত নিয়ে এমন মন্তব্য ছিল শ্রীলঙ্কান কোচের। কিন্তু মনস্তাত্ত্বিক খেলা ঠিকই খেললেন সাকিব। টস করতে নেমে শুধু ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েই থামেননি, প্রথম ওভারেই বল হাতে নিয়ে নিলেন। সাকিব পূর্ণ সুস্থ নাকি আগেভাগেই নামিয়ে দেওয়া হলো—সে প্রশ্নের ইতি তখনই।

সাকিবের খেলা শুরু হলো এর পর। নিজে প্রথম ধাক্কাটা দিলেন, প্রথম বোলিং পরিবর্তনে এসে মোস্তাফিজুরও হাসি ফোটালেন। মোস্তাফিজের জোড়া উইকেটের মাঝেই রান আউট হয়ে বিদায় নিলেন উপুল থারাঙ্গা। মেহেদী হাসান মিরাজও যখন উইকেট উৎসবে যোগ দিলেন খানিক বাদে। শ্রীলঙ্কান ইনিংসের বয়স তখন ৮.১ ওভার, স্বাগতিকদের স্কোরটা দেখে ধাক্কা খাবেন যে কেউ, ৪১/৫! বাংলাদেশের সমর্থকেরাও এতটা আশা করেনি নিশ্চয়ই!

পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে জীবন মেন্ডিস আউট হওয়ার পর লঙ্কান অধিনায়ক থিসারা পেরেরার দেখা মিলল। তাঁকে দেখে সাকিব কী করলেন? স্লিপে দুজন ফিল্ডার ডেকে আনলেন। প্রথম বলই এক ড্রপে প্রথমে স্লিপে গেল। তারপরও দ্বিতীয় স্লিপ সরে গেল পরের বলে। এবার তাঁর ঠাঁই হলো লেগ স্লিপে! ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করতে পরের বলেই আবার দ্বিতীয় স্লিপের হদিস মিলল!

কুশল পেরেরা অবশ্য ওসব মনস্তাত্ত্বিক খেলার মধ্যে গেলেন না। সনাৎ জয়াসুরিয়াকে মনে করিয়ে দেওয়া সব শট খেলতে লাগলেন। তাঁর পিঠে চড়ে পাল্টা আক্রমণে গেল শ্রীলঙ্কা। দশম ওভারে ৫০ ছোঁয়া স্বাগতিক দলও তাই ১৫ ওভার শেষেই ১০০ এর ঘাড়ে (৯৯) নিশ্বাস ফেলতে লাগল। ১১ থেকে ১৫—এই ৫ ওভারে ৪৬ রান নিয়েছে শ্রীলঙ্কা।

এই সময়টায় টানা বল করে গেলেন মাহমুদউল্লাহ। খুব একটা খারাপ করেছেন তা নয়, কিন্তু দলে নাজমুল ইসলামের মতো নিয়মিত বোলার থাকতেও তাঁকে বোলিংয়ে না আনার সাকিবের সিদ্ধান্তের কোনো অর্থ খুঁজে পাওয়া গেল না। উইকেটে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান থাকলে বাঁহাতি স্পিনারকে বোলিংয়ে আনা যায় না—এ ভাবনা থেকে যে কোনোভাবেই বাংলাদেশ দলকে সরানো যাচ্ছে না!

এর ফাঁকে শ্রীলঙ্কা দল আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে। বাংলাদেশও হারিয়েছে স্বাভাবিক চিন্তা ভাবনার ক্ষমতা। প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৪ রান দেওয়া মোস্তাফিজ তাই তৃতীয় ওভারে দিলেন ১৮ রান, চতুর্থ ওভারে ১৭! অফ সাইডের সীমানা থেকে ফিল্ডার তুলে এনে আবার অফ স্টাম্পের বাইরে হাফ বলি বল করার কোনো যুক্তি মোস্তাফিজ দেখাতে পারবেন বলে মনে হয় না।

ফিল্ডাররাও বল একবারে হাতে নিতে পারলেন না। যে স্টাম্পে বল ছোড়া উচিত, ঠিক উল্টোদিকেই কেন যেন বারবার বল ছুড়ছিলেন তাঁরা।
নাজমুল ও সাকিবের না করা ওভারগুলো করতে আসা সৌম্য ভাঙলেন দুই পেরেরার জুটি। ৬১ বলে ৯৭ রান এনে দিয়ে অবশেষে আউট হলেন কুশল পেরেরা। ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৬১ করেছেন কুশল।
থিসারা আউট হয়েছেন ইনিংসের শেষ ওভারে। দলের দুর্দান্ত প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে খেলেছেন ৩৭ বলে ৫৮ রানের ইনিংস। তাতে ছিল ৩ চার ও ৩ ছক্কা।

Share