স্পোর্টস ডেস্ক: নির্ঘুম একটি রাত কাটানোর পর নাইজেরিয়ার জয়ে আর্জেন্টিনা শিবিরে স্বস্তি দেখা দিলো। নবাগত আইসল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে নাইজেরিয়া মূলত আর্জেন্টিনাকেই বাঁচিয়ে রাখলো রাশিয়া বিশ্বকাপে।এই ম্যাচে মূলত আইসল্যান্ডের প্রতিপক্ষ শুধু নাইজেরিয়াই নয় ছিল আর্জেন্টিনাও। কারণ আইসল্যান্ড এই ম্যাচে জয় পেলে আলবেসিলেস্তেদের বিশ্বকাপের স্বপ্ন ধুলিস্মাৎ হয়ে যেত।
নাইজেরিয়ার জয়ে শেষ ষোলতে ওঠার সমীকরণ সবচেয়ে জটিল আকার ধারণ করেছে গ্রুপ-সি’তে। গ্রুপের এক ফেভারিট দল নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে নিশ্চিত করেছে শেষ ষোল। হিসেবটি কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে গ্রুপের সবচেয়ে বড় ফেভারিট আর্জেন্টিনার জন্য। তারা নিজেদের প্রথম ম্যাচে ১-১ গোলে ড্র করে আইসল্যান্ডের বিপক্ষে। পরের ম্যাচে ৩-০ গোলে হারে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে। এখন পর্যন্ত ১ পয়েন্ট পাওয়া আর্জেন্টিনা চোখ রেখেছিল নাইজেরিয়া ও আইসল্যান্ডের এই ম্যাচে। বস্তুত আর্জেন্টিনার শেষ ষোলতে যাওয়ার আশা এখনও আছে। তবে তা নির্ভর করছে অনেক কিছুর ওপর। এই ম্যাচ জেতায় নাইজেরিয়ার পয়েন্ট এখন ৩। তাই নিজেদের শেষ ম্যাচে এই দলটিকে অবশ্যই হারাতে হবে আর্জেন্টিনার। আর প্রার্থনা করতে হবে যেন আইসল্যান্ড ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে নিজেদের শেষ ম্যাচ জেতে।ভলগোগ্রাদ এরেনায় ম্যাচের শুরু থেকেই প্রভাব বিস্তার করে খেলেছে নাইজেরিয়াই। কিন্তু আক্রমণ সবচেয়ে বেশি শানিয়েছে আইসল্যান্ডই। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেছে আইসল্যান্ডের ফুটবলাররা। নাইজেরিয়া পাল্টা আক্রমণ করেছে। কিন্তু আক্রমণ আর পাল্টা আক্রমণের এই ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষ পর্যন্ত শেষ হয়েছে গোলশূন্য সমতায়।
বিরতি থেকে এসে ৪৯তম মিনিটেই গোলের তালা খোলেন নাইজেরিয়ার আহমেদ মুসা। দারুণ এক কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল করলো নাইজেরিয়া। আইসল্যান্ডের বক্স থেকে দ্রুত বল নিয়ে আক্রমণে আসে নাইজেরিয়া। বাম প্রান্ত থেকে ভিক্টর মোসেস দ্রুত বল নিয়ে আসেন মোসেস। দ্রুত পাস দেন আহমেদ মুসাকে। বল আসার চেয়েও দ্রুততার সঙ্গে সেটাকে নিয়ন্ত্রনে নিয়ে ডান পায়ের জোরালো শট নেন মুসা। জড়িয়ে যায় আইসল্যান্ডের জালে।৬৭ মিনিটে আইসল্যান্ডের জিলসন গোলের দারুণ সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু পোস্টের ওপর দিয়ে বলটি পাঠিয়ে দেন তিনি। ৭০ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন ট্রুস্ট একন। তিনিও বলটাকে পাঠিয়ে দেন বারের ওপর দিয়ে। ৭৪ মিনিটেও গোলের দারুণ একটা সুযোগ তৈরি করেছিলেন আহমেদ মুসা। শুধু সুযোগ তৈরি করাই নয়, গোলও হয়ে গিয়েছিল প্রায়। কিন্তু তার দুর্ভাগ্য। দুর্দান্ত শটটি ফিরে আসে ক্রসবারে লেগে।৭৫ মিনিট আবারও গোল দেন আহমেদ মুসা। অসাধারণ এক গোল। কেনেথ ওমেরুর কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের মধ্যে গোলরক্ষককে কাটালেন মুসা। এরপর অনেকখানি সময় নিয়ে ফাঁকা পোস্টে বল জড়িয়ে দিলেন। ২-০ গোলে এগিয়ে গেলো নাইজেরিয়া।৮০ মিনিটে গোল শোধ করে দেয়ার দারুণ সুযোগ পেয়েছিল আইসল্যান্ড। পেনাল্টি পাওয়ার চেয়ে তো আর বড় সুযোগ হয় না। সেই সুযোগটাই নষ্ট করে আইসল্যান্ড। ফিনবোগাসনকে বক্সের মধ্যে ফাউল করে বসেন টাইরন ইবুই। ভিএআরের সাহায্য নিয়ে রেফারি একে পেনাল্টি ঘোষণা করেন। স্পট কিক নিতে আসেন জিলফি সিগার্ডসন। কিন্তু কী দুর্ভাগ্য, শটটা তিনি মেরে দেন পোস্টের ওপর দিয়ে। বেঁচে যায় নাইজেরিয়া।৮৪ মিনিটে আহমেদ মুসা আরও একটি সুযোগ পেয়েছিলেন গোল করার। ইহেনাচোর কাছ থেকে বল পেয়ে মুসা শট নিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি ঠেকে যায় একেবারে গোল কর্নারের সামনে।