Current Date:Oct 6, 2024

ঈদের পরে কঠোরতর আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ব : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা ক্রমেই অবনতি হচ্ছে, অথচ সরকার তাঁর চিকিৎসার জন্য কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ঈদের আগেই খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানান।

রিজভী বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের পূর্বেই বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে যাতে তিনি তাঁর পছন্দ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে পারেন। আর সরকার যদি সেটি না করে আমরা আর হাত গুটিয়ে বসে থাকব না। ঈদের পরে কঠোর থেকে কঠোরতর আন্দোলনে আমরা ঝাঁপিয়ে পড়ব।’

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এরপর পুরান ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়াকে সেখানে রাখা হয়।

খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ দাবি করে তাঁর দল বিএনপির পক্ষ থেকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার কথা বলা হয়। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বরাবরই বলা হচ্ছে, তিনি সুস্থ আছেন এবং নিয়মিত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন।

এর মধ্যেই গত ১‌ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চারজন চিকিৎসক সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে কারাগারে যান। তাঁরা হলেন অর্থোপেডিক বিভাগের অধ্যাপক শামসুজ্জামান, নিউরোলজি বিভাগের মনসুর হাবীব, মেডিসিন বিভাগের টিটু মিয়া ও ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সোহেলী রহমান।

এরপর কারাবন্দি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটলে গত ৭ এপ্রিল রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রায় দুই ঘণ্টা স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তাঁকে আবারও পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এখানে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডে ছিলেন ড. ওয়াহিদুজ্জামান, ড. এস এম সিদ্দিকী ও মামুন রহমান। খালেদা জিয়ার চাহিদানুযায়ী তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক মামুন রহমানকে চেকআপ করার অনুমতি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ।

আজ শনিবার বিকেলে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর চারজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক সোয়া ঘণ্টা কারাগারে অবস্থান করে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। পরে কারাগারের বাইরে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এফ এম সিদ্দীকি বলেন, ‘জুনের ৫ তারিখে উনি (খালেদা জিয়া) হঠাৎ করে দাঁড়ানো অবস্থা থেকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন। দুপুর বেলা ১টার সময়। প্রায় ৫ থেকে ৭ মিনিট উনি আনকনসাস ছিলেন। উনি মনেই করতে পারছেন না যে, কী ঘটেছিল। মাইল্ড ফর্মে একটা স্ট্রোকের মতো হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। যদি টিআইএ (ট্রানজিয়েন্ট এস্কেমিক অ্যাটাক) কারো হয়, তাহলে সেটা ইন্ডিকেট করে সামনে তাঁর একটা স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা খুব বেশি থাকে।’

এ ব্যাপারে আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার মাথা ঘুরে পরে যাওয়ার বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ অবগত নয়। তারপরও চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী খালেদা জিয়ার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। রিপোর্ট পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Share