আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জুতা খেয়েছেন ইমরান। এবার তাঁর কথিত প্রেমিকা তথা ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ও নেত্রী খেলেন ডিমের ঘা। বিতর্কিত এই নেত্রী নিজেকে আবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাতিজার স্ত্রী বলেও দাবি করেছেন। সবমিলে ফের শিরোনামে আয়েশা গুলালি।
পাকিস্তানের নেতা মন্ত্রীদের উপর কালি-জুতো ছুঁড়ে হামলা তো চলছিলই এবার ডিম আর টমেটো ছুঁড়ে দেওয়া হল আয়েশা গুলালিকে। আর এই হামলা করলেন আয়েশারই দল তেহরিক-এ-ইনসাফের কিছু নারী সমর্থক। শুক্রবার রাতে তাঁর হোটেলের সামনে ডিম ও টমেটোর রসে প্রায় ভিজে যান আয়েশা।
পাকিস্তানে নেতা নেত্রী মন্ত্রী আমলাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা এক অন্য জায়গায় পৌঁছেছে। যাঁরাই যাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন কখনও জুতো ছুঁড়ে প্রতিবাদ করছেন কখনও কালি লেপে কখনও বা ডিম ও টমেটো ছুঁড়ে। এই হামলা করা হয়েছে আয়েশার ওপর।
আয়েশা নিজেও ইমরান খানের পার্টি তেহরিক-এ-ইনসাফেরই নেত্রী ছিলেন। তিনি ইমরান খানের বিরুদ্ধে ওঠা অত্যাচার ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলতেই শুরু হয়েছিল চাঞ্চল্য।
এই কারণেই তাঁর ওপর এই ডিম ও টমেটো ছুঁড়ে হামলা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম জানাচ্ছে, বহাওয়ালপুরে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে সেখানে পৌঁছেছিলেন আয়েশা। হোটেলে পৌঁছনোর পরেই তাঁর উপর এই হামলা হয়।
আয়েশা বিতর্কিত নেত্রী। কারণ তিনিই সরাসরি ইমরান খানের বিরুদ্ধে অশ্লীল এসএমএস পাঠানোর অভিযোগ তুলেছেন। তবে জানা যাচ্ছে, ২০১৭ সালেই পাকিস্তান তেহরিক-এ-ইনসাফ ছেড়ে দেন আয়েশা। ২০১২ তে আয়েশা ইমরান খানের পার্টিতে নাম লেখান। কিন্তু এই পার্টিতে নারীদের সম্মান করা হয়না এই অভিযোগে তিনি দল থেকে পদত্যাগ করেন।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে এই কয়েকদিন আগেই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের উপর জুতা ছোঁড়েন এক প্রাক্তন ছাত্র। এরপর সেই ছাত্র সভা মঞ্চে উঠে নওয়াজ শরিফের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেয়। তখন ওই ছাত্র নওয়াজ শরিফকে ইসলাম বিরোধীও বলে। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে জুতো ছোঁড়ার ঘটনার পর বলা হয় ওই ঘটনার পিছনে জমাত উদ দাওয়ার হাত ছিল। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ওই ছাত্র ও তার সঙ্গীকে পুলিশ তাদের হেফাজতে নিয়ে নেয়।
পুলিশের তরফ থেকে ওই ছাত্রের নাম আব্দুল গফুর বলে জানান হয়। তার সঙ্গীর নাম সাজিদ বলে জানা গিয়েছে। উল্লেখ্য, পাক পাঞ্জাব প্রদেশে কয়েকদিন আগেই এক দলীয় কর্মীদের সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফ। হঠাৎই এক ধর্মীয় চরমপন্থী ব্যক্তি এসে তাঁর মুখে কালি লেপে দেয়।
অভিযুক্ত ব্যক্তির দাবি ইসলামের সর্বশেষ নবী মুহম্মদ এটিই সত্য। কিন্তু আসিফের দল সংবিধানের মাধ্যমে মানুষের সেই বিশ্বাসকে পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছে। এর ফলে তাঁর বিশ্বাসে আঘাত পৌঁছেছে। পার্টির কর্মীরা এই ঘটনার পর অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নামে অভিযোগ দায়ের করেন ও তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
আবার তেহরিক-এ-ইনসাফ পার্টির কর্তা ইমরান খানের মিছিলেও কিং খানকে লক্ষ্য করে জুতো ছোঁড়েন এক ব্যক্তি। সেই সময় একটি গাড়ির উপর ছিলেন ইমরান। যদিও ছোঁড়া জুতো সরাসরি ইমরান খানের গায়ে লাগেনি। ইমরানের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন অলিম খান নামে এক ব্যক্তি। জুতো তাঁর গায়ে গিয়ে লাগে। এই ঘটনার পরই ইমরান খান তাঁর ভাষণ বন্ধ করে দেন। সেইসময় ওখানে উপস্থিত নিরাপত্তারক্ষীরা ওই যুবককে ধরে ফেলে ও পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।