নিউজ ডেস্ক : আধুনিককালের সবচেয়ে পরিচিত পদার্থ বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং মারা গেছেন। স্টিফেন হকিংয়ের নাম শোনেননি অথচ জ্ঞান-বিজ্ঞানে আগ্রহ আছে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। কৃষ্ণ গহ্বর এবং আপেক্ষিকতা তত্ত্ব নিয়ে তার কাজের জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিত ছিলেন। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো বিশ্বের সর্বাধিক পরিচিত এই বিজ্ঞানী নোবেল পুরস্কার পাননি। তার মৃত্যুতে এই প্রশ্নটাই সামনে এসেছে কেন তাকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়নি।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক ম্যাগাজিনে ‘দ্য সায়েন্স অব লিবার্টি’ বইয়ের লেখক টিমোথি ফেরিস এ কারণটি ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি লিখেছেন, স্টিফেন হকিংয়ের ‘ব্ল্যাক হোলও মরতে পারে’ তত্ত্ব এখন তত্ত্বীয় পদার্থ বিজ্ঞানে ব্যাপকভাবে মেনে নেওয়া হয়েছে। তবে তার এই তত্ত্বটি যাচাই করার কোনো উপায় নেই। নোবেলের উইলে পরিষ্কার লেখা আছে যে, পদার্থবিদ্যার আবিষ্কার যদি পরীক্ষা নিরীক্ষায় প্রমাণ করা যায়, তা হলেই তাঁকে প্রাইজ দেওয়া হবে।
ফেরিস লিখেছেন, স্টিফেন হকিং নোবেল পুরস্কার পেতেন, যদি তার তত্ত্বকে প্রমাণ করা যেতো। অথবা চোখের সামনে দেখানো যেতো যে ব্ল্যাক হোল মারা যাচ্ছে। একই ধরনের কারণে ২০১৩ সালের আগে হিগস বোসন তত্ত্বের প্রবক্তা পিটার হিগস নোবেল পুরস্কার পাননি। তাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ সময়। ইউরোপীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান সার্ন এক পর্যায়ে ঘোষণা দেয় যে, হিগস বোসোন কণা প্রত্যক্ষ করা হয়েছে। এরপরের বছরেই ২০১৩ সালে যৌথভাবে নোবেল পুরস্কার জেতেন পিটার হিগস ও ফ্রাঁসোয়া এঙ্গলার্ট।
আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞানের জনক আলবার্ট আইনস্টাইনকে নোবেল পুরস্কার দিতে গিয়ে বিপাকে পড়েছিল নোবেল ফাউন্ডেশন। কেননা, আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত্ব ল্যাবরেটরিতে প্রমাণের সুযোগ ছিল না। কিন্তু শেষ অবধি ১৯২১ সালে আইনস্টাইনের ভাগ্যে নোবেল জোটে।
আইনস্টাইনের জগতেরই মানুষ হকিং। দুজনেই পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করেছেন। আইনস্টাইন যেমন আপেক্ষিকতা তত্ত্ব উদ্ভাবন করে দুনিয়া মাত করেছেন তেমনি হকিংও সেই আপেক্ষিকতা তত্ত্ব, ব্ল্যাক হোল এবং তত্ত্বীয় কসমোলজি আর কোয়ান্টাম মধ্যাকর্ষ নিয়ে কাজ করেছেন। ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হকিংয়ের লেখা বই ‘অ্যা ব্রিফ হিস্ট্রি অব টাইম’ সর্বকালের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বইয়ের মধ্যে অন্যতম। এসব গবেষণা কর্ম হকিং সারা পৃথিবীতে পরিচিত করার পাশাপাশি এনে দেয় খ্যাতিও। কিন্তু নোবেল? সেটা পেলেন না তিনি।