রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেইন থেকে গার্ডার ছিটকে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে একই পরিবারের পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রত্যেকের জন্য এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জাকারিয়া খান এ রিট দায়ের করেন।
বুধবার (১৭ আগস্ট) রিটকারীর আইনজীবী এবিএম শাহজাহান আকন্দ মাসুম জানান, বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে।
তিনি জানান, বিআরটির উন্নয়ন প্রকল্পে কী ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়, সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন তলবের ও নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
এর আগে, এ ঘটনায় সোমবার (১৫ আগস্ট) দিনগত রাতে নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝর্ণা আক্তারের ভাই মো. আফরান মণ্ডল বাবু বাদী হয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা (নং-৪২) দায়ের করেন।
মামলায় অবহেলাজনিতভাবে ক্রেইন পরিচালনাকারী চালক, প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে দায়িত্বপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।
উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোহসীন জানান, উত্তরার দুর্ঘটনায় দায়ের করা মামলায় অবহেলাজনিতভাবে ক্রেইন পরিচালনাকারী চালক, সিজিজিসি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে দায়িত্বপ্রাপ্ত অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এ দুর্ঘটনার তদন্ত ও জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে উত্তরা তিন নম্বর সেক্টরের প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হতাহতরা ঢাকায় একটি বৌভাতের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফিরছিলেন।
ফায়ার সার্ভিস জানায়, গাড়িটিতে মোট সাতজন যাত্রী ছিলেন। এরমধ্যে দুই শিশু, দুই নারী ও একজন পুরুষ মারা গেছেন। নিহতরা হলেন- রুবেল (৫০), ঝর্ণা (২৮), ফাহিমা, জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। তাদের মরদেহ রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। গাড়িতে থাকা হৃদয় (২৬) ও রিয়া মনি (২১) নামে নবদম্পতি গুরুতর আহত হয়ে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্বজনরা জানান, ফাহিমা হলেন নববধূ রিয়া মনির মা। আর ঝর্ণা হলেন তার খালা। রুবেল সম্পর্কে ফাহিমা-ঝর্ণার বেয়াই। জান্নাত ও জাকারিয়া ঝর্ণার সন্তান। ফাহিমা-ঝর্ণাদের বাড়ি জামালপুরের ইসলামপুরে। আর রুবেলের বাড়ি মেহেরপুরে।