অনলাইন ডেস্ক : কোচিং সেন্টারের পরিচালক রাশেদ মিয়াকে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনির মারধরের ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। চট্টগ্রামের জিইসি মোড়ের একটি কোচিং সেন্টারের পরিচালক রাশেদ মিয়াকে মারধর সেই ভিডিও গতকাল ফাঁস হয়। এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় তাকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অপরাধে রনিকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মারধরের সেই ভিডিওচিত্রটি ১৭ ফেব্রুয়ারি বিকালের। ওইদিন বিকাল ৫টা ২৬ মিনিট থেকে ৩২ মিনিট পর্যন্ত ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, রাশেদ মিয়া কোচিং সেন্টারে তার কার্যালয়ে বসে আছেন। সেখানে ঢুকে নুরুল আজিম রনি উত্তেজিত হয়ে যান। একপর্যায়ে রাশেদ মিয়ার চুল ধরে টানা-হেঁচড়া করেন। এরপর চড়-থাপড় মারতে থাকেন। ৬ মিনিটের ভিডিওতে দেখা যায়, রাশেদ মিয়াকে ১৩টি চড় মারেন রনি। এ সময় হাতজোড় করে ছিলেন রাশেদ মিয়া।
রনি ২০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে রাশেদ মিয়াকে মারধর করেন বলে জানা গেছে। গতকাল চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় রনিসহ ছাত্রলীগের আরেক কর্মীর নাম উল্লেখ করে অভিযোগ করেন কোচিং সেন্টারের পরিচালক রাশেদ মিয়া। অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় আরও সাত-আট জন জড়িত বলে উল্লেখ করা হয়। পাঁচলাইশ থানায় দেওয়া অভিযোগে বলা হয়, নুরুল আজিম রনি ইউনিভার্সিটি অ্যাডমিশন কোচিং সেন্টারে প্রায়ই আসা-যাওয়া করতেন। ১৭ ফেব্রুয়ারি জিইসি মোড়ে ওই কোচিং সেন্টারে গিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন তিনি। না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
এরপর ১৩ এপ্রিল নগরের মুরাদপুরের মোহাম্মদপুর এলাকায় রাশেদকে একা পেয়ে মারধর করেন রনি ও ছাত্রলীগ কর্মী নোমান চৌধুরী। এ সময় তারা ২০ লাখ টাকা চাঁদা চান। টাকা নেই জানানো হলে রনির নির্দেশে নোমান চৌধুরী সুগন্ধা আবাসিক এলাকার বাসায় গিয়ে রাশেদের স্ত্রীর পাসপোর্টসহ ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে যান। বাকি টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেন।
তবে মামলার বাদী রাশেদ মিয়া বলেন, রনি তার কোনো ব্যবসায়িক অংশীদার নন। চাঁদার জন্যই তাকে মারধর করেছেন। প্রমাণ হিসেবে তার কাছে এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ আছে।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিউদ্দিন মাহমুদ গতকাল বিকালে বলেন, ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির জন্য থানায় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। এখনো মামলা হিসেবে নেওয়া হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এর আগে ৪ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিজ্ঞান কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জাহেদ খান বাদী হয়ে নুরুল আজিম রনিসহ ছাত্রলীগের সাত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে নগরের চকবাজার থানায় ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা করেছিলেন। প্রবেশপত্রের সঙ্গে উন্নয়ন ফি বাবদ ৫ হাজার টাকা নেওয়াকে কেন্দ্র করে গত ২৯ মার্চ বিজ্ঞান কলেজে রনির নেতৃত্বে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করেন।
সেদিন কলেজ কর্তৃপক্ষ ৩১ মার্চ বাড়তি ফি ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেয়। এরপর কর্তৃপক্ষ টাকা ফেরত দিতে গড়িমসি করায় ৩১ মার্চ দুপুরে রনি আবারও ওই কলেজে যান। তখন টাকা ফেরত দেওয়া নিয়ে বাক?বিতণ্ডার একপর্যায়ে রনি ও তার কর্মীরা অধ্যক্ষকে শারীরিকভাবে আঘাত করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
https://youtu.be/caLjRp0V0gc