নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ২০৩০-এ দেশের মানুষকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত করার লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর সহযোগিতা লাগবে। সবার সহযোগিতায় এদেশ হবে উন্নত। তিনি আরও বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নিয়েই আমি ব্যাংকের ওপর নজর দেই, বিশ্বাস স্থাপন করি। ব্যাংকগুলোকে বলেছি সরকারের অর্থসহায়তা যাতে নিতে না হয়। সে বিশ্বাস তারা রেখেছে, আমি ঠকিনি। গত তিন বছরে শর্টফল ঘাটতি কাটাতে সরকারের ফান্ড থেকে অর্থসহায়তা দেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ৫০ বছরপূর্তি ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতিতে কেউ একমত হতে পারে না। তবুও আমরা সমন্বয় করছি। সবার সহযোগিতায় এদেশ হবে উন্নত। সোনালী ব্যাংক নিয়ে তিনি বলেন, জনগণের আস্থার ঠিকানা সোনালী ব্যাংক, সে আস্থার জায়গাটি ধরে রাখতে হবে। মন্ত্রী বলেন, তফসিলি ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহার ১২.৩ শতাংশ থেকে ৭.১ শতাংশের মধ্যে নিয়ে এসেছি। ঋণস্থিতি ১২ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা। কৃষিঋণ চারগুণ বেড়েছে, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে যুক্ত হয়েছে ১১ কোটি ৪৪ লাখ মানুষ। বিশেষ অতিথি অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ব্যাংক ফেল (দেউলিয়া) করছে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো ব্যাংক এখনো ফেল করেনি। আগামী দিনেও এমনটা হবে না বলে মনে করি। আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যেটা বিশ্বের অন্য কোনো দেশে নেই। সেটা হলো- দেশের কোনো ব্যাংক এখনো ফেল করেনি। যখনই কোনো ব্যাংকে সমস্যা দেখা দিয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে সরকার সেখানে উদ্যোগী ভূমিকা রেখেছে। তাতে সমস্যার সমাধান হয়েছে। এটা আমরা বিশ্বকে গর্বের সঙ্গে বলতে পারি। তিনি বলেন, ‘সোনালী ব্যাংক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিনা কমিশনে প্রায় এক লাখ কোটি টাকায় এলসি খোলে। ফলে সরকারের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়। এভাবে সোনালী ব্যাংক রাষ্ট্রের গুরুত্ববহ সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। এসময় সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কয়েকটি পরামর্শ দেন সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেন, ‘নন-পারফরমিং লোন আরও কমাতে হবে। সামনের দিনগুলোতে ভালো অবস্থান ধরে রাখতে হলে অটোমেশনে যেতে হবে। অনলাইন ব্যাংকিং হলেও অটোমেশনে তেমনটা নেই, এটা করতে হবে। যাতে গ্রাহক বাড়ি বসে সেবা নিতে পারেন। নতুন নতুন সার্ভিস নিয়ে আসতে হবে। এজন্য রিসার্চ ইনস্টিটিউট করতে হবে। পাশাপাশি সব কর্মচারী-কর্মকর্তাদের আরও প্রশিক্ষণ দিতে হবে, তাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দেশের প্রথম অর্থ সচিব মতিউল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, আর্থিকপ্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন, ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, ড. আতিউর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের সিইও এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আতাউর রহমান প্রধান।