নিজস্ব প্রতিবেদক: পপুলার লাইফের সাবেক চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত প্রধান আসামি তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস পলাতক বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল হক। গত ২৮ ডিসেম্বর তিনি আদালতে এ প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদনও করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পপুলার লাইফের সাবেক চেয়ারম্যান হাসান আহমেদকে সম্পত্তি আত্মসাতের জন্য পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে মতিঝিল থানায় অভিযোগ করেন হাসান আহমেদের ভাই কবির আহমেদ। এই অভিযোগ করা হয় ২০২৩ সালের ২ ডিসেম্বর। মামলায় হাসান আহমেদের স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌসসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়।
বিজ্ঞাপন
মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসান আহমেদ ২০২২ সালে ২৪ জানুয়ারি মারা যান। হাসান আহমেদ ২০২০ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর স্ট্রোক করেন। পরে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তার স্ত্রী পরিবারের ও পপুলার লাইফের কর্মকর্তাদের কথা পাশ কাটিয়ে পল্টনের কালভার্ট রোডের তার নিজ বাসায় নিয়ে আসেন। এ সময়ে হাসান আহমেদের মাকে তার ছেলের সাথে দেখা করতে দেয়া হয়নি। পরে হাসান আহমেদের উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানোর উদ্যোগ নেয়া হলে তার স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস বাধা দেয়ায় তার উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি।
তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ডাক্তারি পরীক্ষায় হাসান আহমেদের হাতে পায়ে আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে প্রতিবেদন দিয়েছে প্রাথমিকভাবে তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসান আহমেদ খুবই উদার প্রকৃতির লোক ছিলেন। তার মৃত্যুর সময় তার নামে একাধিক ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা ছিল। মূলত এসব টাকা আত্মসাতের জন্যই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, হাসান আহমেদ ২০২০ সালে ১৮ সেপ্টেম্বর নিজ বাসায় স্ট্রোক করেন। এ সময়ে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু স্কয়ার হাসপাতাল থেকে হাসান আহমেদের স্ত্রী ফেরদৌসি তাকে পল্টনের বাসায় নিয়ে আসেন ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর। এ বাসাতে বিয়ের এক মাস পর থেকেই তিনি থাকতেন।
এ বাসাতে হাসান আহমেদের মা তার ছেলেকে দেখতে গেলেও তাকে দেখতে দেয়া হয়নি। এ বিষয়ে পল্টন থানায় একটি জিডিও করা হয়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, হাসান আহমেদ দেশের একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। তিনি পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্সে চেয়ারম্যান। হাসান আহমেদ ফেরদৌসিকে বিয়ের করা এক মাস পর থেকে পল্টনের বাসায় থাকতেন। এই বাসাতেই তিনি স্ট্রোক করেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডের বাসায় থাকা অবস্থায় ২০২২ সালে ২৪ জানুয়ারি তিনি মারা যান। মুত্যর আগে অসুস্থতাজনিত কারণে তাকে কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ডাক্তারের পরামর্শে তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তদন্তে প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসান আহমেদ বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সিআইপি। তিনি আঞ্জুমান মফিদুল ইসলামসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনে লাখ লাখ টাকা দান করতেন। তার মৃত্যুর সময় বিভিন্ন ব্যাংকে তার নিজ নামের একাউন্টে কোটি কোটি টাকা ছিল। আর্থিক সামর্থ্য থাকার পরও তার স্ত্রী ও মামলার আসমীরা অর্থ ও সম্পদ আত্মসাতের জন্য হাসান আহমেদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি। তাকে ইনসুলিন দেয়া হয়নি। সঠিক ও সুচিকিৎসা না করার অভিযোগটি তদন্তে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
হাসান আহমেদ হত্যা মামলার আসিমের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র পক্ষ থেকে পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল হকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে না পাওয়ায় এ বিষয়ে কিছু জানা সম্ভব হয়নি।