নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গ সফরে গিয়ে ‘খোশগল্প ও রমজান মাসে সংগীত উপভোগ করছেন’ অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, তিস্তার পানিচুক্তি না হলে এই সফরের মানেই হয় না।
শনিবার নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন রিজভী।
প্রধানমন্ত্রী এখন দুই দিনের সফরে পশ্চিমবঙ্গে। শান্তিনিকেতনে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ভবন উদ্বোধন এবং আর চুরুরিয়ায় কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডিগ্রি নেয়াই এই সফরের লক্ষ্য।
আগেই সরকার জানিয়েছে তিস্তা চুক্তি এই সফরের উদ্দেশ্য নয়। তারপরও শুক্রবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্তে বৈঠকে এই বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে দুই সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়নি।
রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শান্তিনিকেতনে আনন্দ ভ্রমণ করছেন।…এ সফরে কোনও ধরনের এজেন্ডা নেই। সেখানে গিয়ে তিনি ‘খোশগল্প ও রমজান মাসে সংগীত উপভোগ করছেন।’
‘বুঝতাম যদি তিনি তিস্তার এক বালতি নয়, এক বাটি পানিও আনতে পেরেছেন। কিন্তু ওই দেশের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর এতই অনুরাগ তাদেরকে তিনি সবই দিয়ে যাবেন।’
‘কোনো কৃতজ্ঞতার কারণে তা দিয়ে যাবেন জনগণ জানে। কিন্তু তাদের কাছ থেকে এক ফোঁটা পানিও আনতে পারবেন না প্রধানমন্ত্রী।’
টাকা না পেয়ে মাদকবিরোধী অভিযান গুলি
মাদকবিরোধী অভিযানে অর্থ আদায় চলছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী। তার দাবি, যারা টাকা দিতে না পারছেন, তাদেরকেই হত্যা করা হচ্ছে।
‘এভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যা সবার জন্য রীতিমতো উদ্বেগ, ভয় ও বিপদের কারণ হতে পারে।’
‘এখন ক্রমান্বয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে এবং নতুন করে টার্গেট করা হচ্ছে।’
‘কোথাও কোথাও বিএনপিসহ বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ধরে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করছে, হয়রানি করছে এবং দাবিকৃত টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাদেরকে নির্মমভাবে ক্রসফায়ারে দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে কিংবা হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘অনেক পরিবারের অভিযোগ, তাদের স্বজনদের তুলে নিয়ে গিয়ে পুলিশের দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় রাতে বিচার বহির্ভূতভাবে নিরীহ লোকদের হত্যা করা হয়।’
‘একদিকে জনগণকে ভয় পাইয়ে দিতে সরকারি চক্রান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে অন্যদিকে নিরীহ লোকদের ধরে হত্যা ও হত্যার ভয় দেখিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চলছে ঈদের আগে রমরমা বাণিজ্য।’
‘প্রত্যেক ঈদ মওসুমে সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ ধরনের রমরমা বাণিজ্য করার সুযোগ করে দেয়। এখন গ্রেপ্তার বাণিজ্যের পাশাপাশি হত্যা-বাণিজ্য চলছে।’
‘নুনের অমর্যযাদা করেননি সিইসি’
সিটি নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রচারের সুযোগ গিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনেরও সমালোচনা করেন রিজভী। বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে লাভবান করতেই নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধন করেছে।’
‘গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে একজন নির্বাচন কমিশনার সংশোধনীর বিরুদ্ধে নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত প্রকাশ) দিলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সরকারি দলের নুন খাওয়ার অমর্যাদা করেননি।’
‘এর ফলে ভোটের মাঠে সমান সুযোগ থাকবে না। এটি ভোটারদের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।’
‘সিইসি চান না দেশে কোনও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। এই নির্বাচনী আইন প্রণয়নের ফলে আইনের চোখে সবাই সমান থাকল না। এটি সংবিধানের ২৬ অনুচ্ছেদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’