বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক : কোটা সংস্কার আন্দোলন আবারও ৭ মে পর্যন্ত স্থগিত করছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। শুক্রবার আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারাণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের সঙ্গে বৈঠক করে এ সিদ্ধান্ত নেয় সংগঠনটি।
বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেছেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক আমাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেহেতু দেশের বাইরে আছেন, তাই এ বিষয়ে এখন সিদ্ধান্ত দেয়া যাচ্ছে না। উনি দেশে ফিরলে কোটা বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। তাই আমরা আবারও ৭ মে পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত করেছি।
এদিকে ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও ছাত্রলীগের নির্যাতন বন্ধের দায়িত্ব নিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম। আর কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পাঁচটি মামলার মধ্যে চারটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঢাবি ভিসি ভবনে হামলার মামলাটি এখন প্রত্যাহার করা হয়নি।
এর আগে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে নানকের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে আন্দোলনরত ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। বৈঠকটি রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ সংলগ্ন ন্যাম ভবনে নানকের বাসায় হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে কোটা সংস্কার আন্দোলনের এই কেন্দ্রীয় কমিটি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদে কোটা বাতিলের যে ঘোষণা দিয়েছেন তা চলতি মাসের মধ্যে প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে আগামী মাস থেকে ফের আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
জানা গেছে, মূলত এই হুঁশিয়ারি দেয়ার পরই তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য ডেকেছেন নানক।
কোটা সংস্কারের দাবিতে গত ৮ এপ্রিল থেকে বড় আকারে আন্দোলন শুরু হয়। ১১ এপ্রিল শাহবাগ এবং ঢাকার সব রাস্তায় নেমে আসেন সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এরপর দেশের নানা জায়গায় সড়ক অবরোধ শুরু হয়। কোটা সংস্কারে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। ১১ এপ্রিল দুপুর ১২টার দিকে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জানান, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারা দেখা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী সব ধরনের কোটা বাতিলের কথা বলেছেন। এদিন বিকেলে জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার ইস্যুতে প্রথমবারের মতো সরাসরি কথা বলেন। সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে বলেন, ‘কোটা পদ্ধতিই বাতিল।’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা নিয়ে যখন এতকিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনও কোটারই দরকার নেই।’