সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় করা মামলায় ৯ জনকে অভিযুক্ত করে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- মোহাম্মদ ইশতিয়াক মাহমুদ, নাইমুল হাসান, ফিরোজ মাহমুদ, মীর আমজাদ হোসেন, সাজু ইসলাম, রাজীবুল ইসলাম, শহিদুল আলম খান, সিয়াম ও অলি আহমেদের। ইশতিয়াক মাহমুদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার পরোয়ানা জারির আবেদন করা হয়েছে। অন্য আসামিরা জামিনে রয়েছেন। এছাড়া মুজাহিদ আজমির তানহা মারা যাওয়ায় তাকে মামলার অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
রোববার মোহাম্মদপুর থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের এসআই এশারত বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত ১৯ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ৯ জনকে আসামি করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেছেন। আগামী ৪ অক্টোবর মামলার তারিখ ধার্য রয়েছে।
আদালত ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৮ মার্চ এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সর্বশেষ একই বছরের ৪ ডিসেম্বর এ মামলায় ছয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। পরবর্তীতে দেখা যায়, তাদের মধ্যে সাক্ষী ড. বদিউল আলম মজুমদার, খুশি বেগম ও মাহবুবুল আলম মজুমদার জবানবন্দিতে জনৈক ইশতিয়াক মাহমুদের নাম উল্লেখ করেন। এরপর ২৭ ডিসেম্বর আদালত এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায় থেকে উত্তোলন করে অধিকতর তদন্তের স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ঢাকার সিএমএম আদালতে পাঠান।
মার্সা বার্নিকাটের গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট রাতে ড. বদিউল আলম মজুমদার বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন। ২০২১ সালের ১৮ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. আব্দুর রউফ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার চার্জশিটে ১৯ জনকে সাক্ষী করা হয়। ২০২২ সালের ১ মার্চ ৯ আসামির বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ১৮৬০ এর ১৪৩/৩২৩/৪২৭ ও ৫০৬ ধারায় আদালত অভিযোগ গঠন করেন।
এ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- নাইমুল হাসান, ফিরোজ মাহমুদ, মীর আমজাদ হোসেন, মো. সাজু ইসলাম, রাজিবুল ইসলাম রাজু, শহিদুল আলম খান কাজল, তান্না ওরফে তানহা ওরফে মুজাহিদ আজমি তান্না, সিয়াম ও অলি আহমেদ ওরফে জনি।
চার্জশিটে বলা হয়, ২০১৮ সালে ৪ আগস্ট রাতে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের ইকবাল রোডের বাড়িতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্সা বার্নিকাটের বিদায়ী নৈশভোজের আয়োজন করেন। ওই রাতে নৈশভোজের নামে তিনি গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে সরকারবিরোধী ষড়যন্ত্র করছিলেন বলে মনে করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা।
এ সময় সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বাড়িতেও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। তারা বাড়ির জানালার গ্লাস ভাঙচুর করে বদিউল আলম, তার স্ত্রী ও ছেলেকে ছেলে মাহবুব মজুমদারকে জীবননাশের হুমকি দেন। মাহবুবকে ধাক্কা দিয়ে আঘাত করেন। বাড়ির প্রধান গেট ধাক্কাধাক্কি করে, ভয়ভীতি দেখিয়ে তারা চলে যান।