বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে আগের দেয়া রায় বহাল রেখে কানাডার ফেডারেল কোর্ট সেখানে আশ্রয়প্রার্থী এক যুবদল নেতার রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। কানাডায় আশ্রয় চেয়ে মো. মোস্তফা কামালের পক্ষ থেকে করা রিভিউ আবেদনের রায়ে পূর্বের অবস্থানের বিষয়টি ওয়েবসাইটে জানিয়েছেন কানাডার ফেডারেল আদালত।মোস্তফা কামালের রিভিউয়ের পরিপ্রেক্ষিতে ওই রিভিউ আবেদন খারিজ করে ৪ মে এই রায় দেন কানাডার আদালত। ওই রায়ে বলা হয়, মোস্তফা কামাল বাংলাদেশে বিএনপি নামে যে রাজনৈতিক দলের সদস্য পরিচয়ে আশ্রয় চাচ্ছেন, সেই রাজনৈতিক দল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে যুক্ত।২০১৫ সালে বাংলাদেশ ছেড়ে কানাডায় আশ্রয়প্রার্থী হন মোস্তফা কামাল। তবে তার সেই আবেদন খারিজ করে দেয়া হয়। মোস্তফা কামালের বিষয়ে কানাডার সরকার আদালতকে তখন জানায়, বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাতেও দলটি চেষ্টা করছে বলে যথেষ্ট যৌক্তিক কারণ আছে।কানাডার আদালত দেশটির জননিরাপত্তা ও জরুরি প্রস্তুতি বিষয়ক মন্ত্রীর সরবরাহ করা তথ্যের ভিত্তিতে ওই রায় বহাল রেখেছেন।মন্ত্রী বলেছেন, এটা বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে যে, আবেদনকারী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির একজন সদস্য। বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং বাংলাদেশ সরকারকে উৎখাত তৎপরতা বা উৎখাতে প্ররোচনা দেয়ার সঙ্গে জড়িত। যা কানাডার অভিবাসন ও শরণার্থী সুরক্ষা আইনের এসসি-২০০১ এর সি-২৭ ধারার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।কানাডিয়ান বর্ডার সিকিউরিটি অ্যাজেন্সির (সিবিএসএ) এক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তিনি এ দাবি করেন।কানাডা সরকারের এই বক্তব্য গ্রহণ করে আদালত মোস্তফা কামালের আবেদন খারিজ করে দেন। পরে মোস্তফা কামাল কানাডার ফেডারেল কোর্টে রিভিউয়ের জন্য আবেদন করেন। এরপর গত ৪ মে ওই আপিলের রায় ঘোষণা করেন ফেডারেল কোর্ট। তবে ওই রায় ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।এর আগে বিএনপির ওই কর্মীর রিভিউ আবেদনের পর ফেডারেল কোর্ট দেশটির জননিরাপত্তা ও জরুরি প্রস্তুতিবিষয়ক মন্ত্রীর দাবির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য নির্দেশ দেন। কানাডার অভিবাসন ও শরণার্থী বোর্ডের অভিবাসন বিভাগ এ বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের পর আদালতে তুলে ধরে। পরে সিবিএসএ’র প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই ও পুনর্বিবেচনা করে আগের দেয়া রায় যৌক্তিক বলে জানান ফেডারেল কোর্ট।ব্রিটিশ পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান, মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন বিবেচনা করে আইডি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করা হয় রায়ে।কামাল ২০০৬ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিএনপির প্রচার সম্পাদক ছিলেন বলে দাবী করেন। তার আশ্রয় প্রার্থনার আবেদন বাতিল হয়ে গেলে তিনি যুবদলের প্রচার সম্পাদক ছিলেন, বিএনপির নয় বলে রায় পুনর্বিবেচনার দাবি জানান।রিভিউতে বলা হয়, কামাল অনুবাদক ও উকিলের সহায়তা নিয়ে আবেদনের ফর্ম পূরণ করেছিলেন এবং শেষ মুহূর্তে তিনি তার দেয়া তথ্য অস্বীকার করেছেন। এছাড়াও যুবদল বিএনপিরই অঙ্গ সংগঠন, এই বিষয়টিও বিবেচনা করে আদালত।
Share