Current Date:Oct 10, 2024

বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ল বাংলাদেশ!

স্পোর্টস ডেস্ক : বিশ্বকাপে ফেবারিট দলের কেউই সুবিধা করে উঠতে পারেনি, একে একে বিদায় নিয়েছে সবাই। তবে এ দেশের সমর্থকদের নির্মম বাস্তবতা মেনে নিতে হচ্ছে, তাদের প্রিয় দুই দল বিদায় নিয়েছে বিশ্বকাপ থেকে। দলের বিদায় মানে তাদেরও বিদায়

রাশিয়া বিশ্বকাপের থিম সং হতে পারত ‘সাম্যবাদের গান’। ছোট দল, বড় দল—এসব পুরাতন মিথ পাত্তা পায়নি এবারের বিশ্বকাপে। আর এযাত্রায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানি সব বড় দলকে পথ দেখিয়েছে। হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার সুর শুনে বিদায় নিয়েছে স্পেনও। তবে এ দেশের মানুষের তাতে খুব একটা যায় আসেনি। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল—এই দুই দলই তাদের সব। এদের বিদায়ে নিজেদেরই বিদায় দেখছেন এ দেশের ফুটবল-ভক্তরা।

হোর্হে সাম্পাওলি নিজের দায়িত্ব পালন করেছেন দক্ষতার সঙ্গে। অন্য কোনো দলের কাছে আর্জেন্টিনার বিদায় মেনে নিতে পারবেন না জেনে নিজের ‘দুর্দান্ত’ সব কৌশলেই বাড়ি ফেরা নিশ্চিত করেছেন। মেসির এবারও বিশ্বকাপ জেতা হলো না। শিরোপার অপেক্ষায় বয়স বাড়বে মেসির, চুল পাকবে এ দেশের আলবিসেলেস্তে ভক্তদের। আর্জেন্টাইনদের পর হতাশ হওয়ার তালিকায় দ্বিতীয় দেশটির নাম নির্ঘাত বাংলাদেশ। আর্জেন্টিনার সঙ্গে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের প্রায় অর্ধেকাংশ।

ব্রাজিলের সমর্থকেরা মুখ চেপে বেশ হাসল-গাইল কয়দিন। ‘৩২ বছর পেরিয়ে গেল’—এমন গর্জনে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন তাঁরা। কিন্তু বেলজিয়ামের কাছে ব্রাজিলও বিদায় নিয়েছে গতকাল। তাদের সঙ্গে বিদায় নিল বাংলাদেশের বাকি অর্ধেক ফুটবলপ্রেমী জনগোষ্ঠী। এখন একে-অপরকে টিপ্পনী কাটা আর খই ভাজা ছাড়া ফুটবলপ্রেমীদের করার তেমন কোনো কাজ নেই। এতে অবশ্য লাভ হয়েছে কিছু। ছাত্ররা এবার যদি পড়াশোনায় একটু মন দেয়। চাকরিজীবীরাও যদি কাজে-কর্মে-সংসারে নজর ফেরান!

র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ১৯৪। আমরা যে ফুটবল কেমন খেলি, সেটা এ থেকে কিছুটা আন্দাজ করা যায়। ৩২ দলের মধ্য থেকে বিশ্বকাপে সরাসরি অংশ নেওয়া এখন আমাদের জন্য স্বপ্ন হলেও বিশ্বকাপের বাইরে থাকি আমরা, তা কিন্তু নয়। বিশ্বকাপের মাসজুড়ে বাংলাদেশের ফুটবল উন্মাদনা দেখলে সেটা ভাবার কোনো সুযোগও নেই।

আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলকে ভালোবেসে নিজের জীবনও উৎসর্গ করেন কেউ কেউ। ঝুঁকি নিয়ে বাংলার আকাশে আকাশি-সাদা, হলুদ-নীল পতাকা ওড়াতে গিয়ে পৃথিবীর মায়াও ত্যাগ করেন। বিশ্বকাপে ট্যাকলের শিকার হয়ে যখন চোট পান বিশ্বসেরা খেলোয়াড়েরা, তখন আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল নিয়ে তর্কযুদ্ধে আহত হন এ দেশের ফুটবলপ্রেমীরা। মাঠে খেলার সুযোগ না পেলেও মাঠে-ঘাটে ফুটবল আড্ডায় জমিয়ে রাখেন তাঁরা। কিন্তু এখন মেসি নেই। নেই নেইমারও। অর্থাৎ দেশে ফুটবলও নেই।

এ দেশে রোনালদো-সমর্থকও কম নন। তাঁর দলও বিদায় নিয়েছে বিশ্বকাপ থেকে। বিদায় নিয়েছে জার্মানি-স্পেনও। তবে বেলজিয়াম, ক্রোয়েশিয়া খেলে যাচ্ছে দুর্দান্ত। মদরিচ-কেইন-এমবাপ্পে-ডি ব্রুইনারা যে এখন বিশ্বকাপের মূল তারকা, সেটা নিয়ে খুব একটা আগ্রহ নেই এ দেশের অধিকাংশ ফুটবল-সমর্থকের। তারা এমন সমর্থক নন যে প্রিয় দলের বিদায়ে অন্য দলে ভিড়বেন। তাঁরা দুই দলের ফুটবলে বিশ্বাসী।

দল নেই, বিশ্বকাপও নেই। তাঁরা আরও ৪ বছর অপেক্ষা করবেন। বয়স বাড়বে মেসির, বয়স বাড়বে নেইমারের, বয়স বাড়বে তাঁদেরও।

 

Share