নিজস্ব প্রতিবেদক : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাবন্দী অবস্থায় মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার (৮জুন) রাতে নয়াপল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ডাকা এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান রিজভী।
আজ বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিকটাত্মীয়রা তার সঙ্গে ঢাকা পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে দেখা করতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরে তারা খালেদা জিয়ার শারীরিক ও পারিপার্শিক অবস্থার কথা জানান দলের সিনিয়র নেতাদের। তাদের সঙ্গে কথা বলার পর জরুরী সংবাদ সম্মেলন করেন রিজভী।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘নিকটাত্মীয়রা বলেছেন গত ৫ জুন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন। তিনি তিন সপ্তাহ যাবৎ ভীষণ জ্বরে ভুগছেন যা কোনক্রমেই থামছে না।’
সরকারের জিঘাংসার কষাঘাতের তীব্রতা যে কত ভয়াবহ খালেদা জিয়ার প্রতি অমানবিক আচরণের মাত্রা দেখলে তা বোঝা যাবে মন্তব্য করে রিজভা বলেন, ‘খালেদা জিয়া টিআইএ (ট্রানজিয়েন্ট স্কীমিক এ্যাটাক) রোগে ভুগছেন। তার দুটো পা এখনও ফুলে আছে। তিনি শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে পারছেন না। আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, দেশনেত্রীর অসুস্থতা নিয়ে আমি যে কথাগুলি বললাম তা সম্পূর্ণরুপে সত্য। তার অসুস্থতা নিয়ে ইতোপূর্বেও যে কথাগুলো বলা হয়েছে তা নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে তার স্বাস্থ্যের এতটা অবনতি হত না।’
রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, ‘সরকারের ইচ্ছাকৃত অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। তার প্রয়োজনীয় যে চিকিৎসাগুলোর জন্য বারবার দাবী করা হয়েছিল; যেমন বিশেষায়িত এমআরআই , সিটি স্ক্যান, ইকো কার্ডিওগ্রাফি, ইসিজি, বিএমডিসহ জরুরী পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং একটি চিকিৎসক দলের তত্ত্বাবধানে জরুরী চিকিৎসার বন্দোবস্ত করা। কিন্তু দলের নেতৃবৃন্দের দাবি এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ ক্রমাগত উপেক্ষা করেই চলেছে সরকার। ’
তিনি বলেন, ‘গত ২১ মে বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আব্দুস সাত্তার স্বরাষ্ট্র সচিব বরাবরে আবেদন করেছিলেন দেশনেত্রীর ব্যক্তিগত চার জন চিকিৎসককে কারাগারে দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর জন্য। কিন্তু এ বিষয়ে বারবার তাগিদ দেয়া হলেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোন সাড়া দেয়নি। এতে মনে হয় সরকার এবং সরকার প্রভাবিত প্রশাসনযন্ত্র দেশনেত্রীকে নিয়ে কোন গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।’
রিজভী আরও বলেন, এটি নির্মম সত্য, সরকার এক অশুভ উদ্দেশ্য নিয়েই দেশনেত্রীর সুচিকিৎসায় বাঁধা প্রদান করছে। সরকারের অভিপ্রায় নিয়ে জনগণের মধ্যে প্রবল সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় দেশনেত্রীকে নিয়ে সরকার কী করতে চায় বলে সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রতি প্রশ্ন রাখেন রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে দেশনেত্রীর সুচিকিৎসা এবং তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসা করানোর জোর দাবি জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। দাবি না মানলে সরকারের সকল অমানবিক অবিচারের জন্য দায়ী থাকতে হবে বলে হুশিয়ারি দেন রিজভী।
জিয়ার সুচিকিৎসার দাবিতে আগামী ১০ জুন ২০১৮ রবিবার সারাদেশে জেলা ও মহানগরে এবং ঢাকা মহানগরীর থানায় থানায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হবে বলেও জানান রুহুল কবির রিজভী। এ সময় বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীকে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের জন্য অনুরোধ করেন তিনি।