বিনোদন প্রতিবেদক : বর্তমানে যারা মিডিয়াতে/চলচ্চিত্রে কাজ করছেন বা যারা করতে চাচ্ছেন এই লেখাটা তাদের জন্য।
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু। দুনিয়ার যত মুসলিম বোন আছে সবাইকে আমি নিজের বোনই মনে করি। আমার বোন যখন ভুল কিছু করবে বা করতে চাইবে আমি নিশ্চয় তাকে হাসিমুখে সেই অন্ধকারে ঠেলে দিতে পারবো না। আমার বলাটা তো আমাকে বলতেই হবে। শোনা না শোনা, মানা না মানা এটা তো যার যার বিষয়। কেউ ইচ্ছা করে আগুনে ঝাঁপ দিতে চাইলে আমি আটকাতে তো পারব না। এটা বলতে পারবো শুধু, এই আগুণ ধংস করে দেবে, সহ্য করা যাবে না। তবুও জেনেশুনে কেউ ঝাঁপ দিলে সেটা তার জিম্মাদারি।
কোরআনে নারীদের জন্য আলাদা একটি সূরা “আন নিসা”! আল্লাহু আকবার! কত বড় সম্মান! নারীর যে সম্মান ইসলামে আছে যা আর কোনো ধর্মে নেই। নারীরা খুব দামী। আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল তা পরিষ্কার করে বলে দিয়েছেন।সুবাহানআল্লাহ!
আর আমরা আজকে বেপর্দা হয়ে সম্মান অর্জন করার চেষ্টা করছি।মিথ্যা সম্মানের পেছনে ছুটে মরছি।একটু চিন্তা করি, ধরলাম আমি/আপনি অনেক বড় নায়িকা হলাম, চলচিত্রে সর্বোচ্চ সম্মান অস্কার পেলাম। প্রচুর টাকা হলো।সারা পৃথিবীর মানুষের (মুমিনদের কাছে না) কাছে আইডল হলাম। আমাকে/আপনাকে এক পলক দেখার জন্য জীবন দিতেও রাজি অনেকে। প্রচুর ক্ষমতা হলো।এবং কোনো না কোনো দিন মরে গেলাম। তারপর?
ভাবতে পারেন? অন্ধকার কবরটাতে কেউ একটা লাইট জ্বালানোরও ক্ষমতা রাখে না। এত দামী দামী পোশাক পরতেন আপনি, সেই আপনার পোশাক হবে শুধু সাদা কাফনের কাপড়। কোথায় যাবে সম্মান? কোথায় থাকবে ক্যারিয়ার? কোথায় থাকবে হাজার হাজার, লাখ লাখ, কোটি কোটি ভক্তরা? তারা কি আপনাকে আজাব থেকে বাঁচাতে পারবে?
হযরত আবু সাইদ খুদুরী (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, অবশ্যই নাফরমান অর্থাৎ (বে নামাজি, বেপর্দা) নারীদের জন্য কবরে ৯৯ টি বিষাক্ত সর্প (সাপ) নির্ধারণ করা হয়। সেগুলো তাকে কেয়ামত পর্যন্ত কামড়াতে ও দংশন করতে থাকবে।যদি তাদের মধ্যে হতে কোন একটি সাপও পৃথিবীতে নিঃশ্বাস ফেলতো তাহলে জমিনে কোনো সবুজ তৃণলতা বা উদ্ভিদ জন্ম নিত না।(দারেমী) আর ইমাম তিরমিযী ও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন তবে ৯৯ এর স্থলে ৭০ এর কথা বলেছেন। (মেশকাত, হাদীস নং ১২৬)
আর জাহান্নামের কঠোর শাস্তি তো আছেই। পর্দা করাকে আমরা অমর্যাদা মনে করি। আফসোস! আমরা কোনো দামী জিনিস রাস্তাঘাটে খোলামেলা ভাবে নিয়ে চলি? দামী দামী গহনার জায়গা কেন তালাবদ্ধ আলমারি হয়? কেন শোপিস করে রাখি না? কেন? উত্তর নিজেরা খুঁজে দেখি। আমরা তো অনেক বেশি দামী কোনো জিনিসের সাথেও তুলনা করার মত না।আজ অবস্থা এমন যে এসবের সাথেও উদাহরণ টানতে হয়! আমরা নিজেরা নিজেদের এই অবস্থায় টেনে এনেছি।
আমরা একটা সাপ দেখলেই ভয়ে শেষ হয়ে যাই।সেই সাপের সৃষ্টিকর্তাকে ভয় পাই না? আমরা লিফটে কিছুক্ষণ আটকে থাকলে আমাদের অবস্থা কি হবে তা আল্লাহ জানেন।আর কবর কেমন হবে? নিশ্চিত কেউ সেখানে কোনো সাহায্য করতে পারবে না। একমাত্র আমল ছাড়া।
আমরা নিজেদের সৌন্দর্য প্রকাশ করি, আল্লাহ বলেছেন ঢেকে রাখতে! আমরা প্রেম (হারাম প্রেমকেও জিনা বলা হয়েছে, শারীরিক সম্পর্ক হোক বা না হোক) করি, আল্লাহ বলেছেন জ্বিনা না করতে! আমরা পুরুষদের মত পোশাক পরি, আল্লাহ বলেছেন আমরা যেন পুরুষদের সাদৃশ্য গ্রহণ না করি! আমরা সকালে নামাজ না পড়েই ঘুমিয়ে থাকি, আল্লাহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করেছেন। আরও অসংখ্য জিনিস আছে।আমরা প্রতিনিয়ত আল্লাহর অবাধ্যতা করছি। সীমালঙ্ঘন করে যাচ্ছি।
এই দুনিয়ায় কেউ চিরদিন বেঁচে থাকতে পারবে না।আমিও না আপনিও না। যে দুনিয়া আমাদের জন্য অনন্তকাল বসবাসের জায়গা সেই জায়গার জন্য কি প্রস্তুতি নিচ্ছি? নাচ গানের তালিম? কোনো কাজে আসবে না বোন। ধ্বংস হয়ে যাব। আফসোস করব দুনিয়াতে আবার এসে আমল করার জন্য, আল্লাহর হুকুম মেনে চলার জন্য, কিন্তু সেটা কেবলই আফসোস। দুনিয়াতে আর আসা সম্ভব না। এত অল্প সময়ের অশ্লীলতার ঘোর কেটে যাবে যখন মৃত্যু সামনে এসে দাঁড়াবে। সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে?সেই পর্যন্ত অপেক্ষার ফলাফল কি, তা কি এখনো বুঝতে পারছি না?
মৃত্যুর কোনো সময় নির্ধারিত নেই। যখন তখন মরণ হতে পারে। কালকে ভাল হবো এমন চিন্তা তো তারাই করবে যারা প্রকৃত মূর্খ।আর কত মানুষ তো এমনও চিন্তা করে রাখে যে, বয়স হলে পুরোপুরি ধর্ম মেনে চলবো! আহা! যদি একটু বুঝতো তারা! কবরে অনেক মানুষ এমন আছে যারা এমন ভেবেছিল তাদের কালকে আর আসেনি, বার্ধক্যও আসেনি। তার আগেই চলে গেল তওবা না করে।আল্লাহর নাফরমানির মধ্য দিয়ে। চিন্তা হয় না বোন? শুধু চিন্তা করলেই তো হবে না।তওবা করে আল্লাহর পথে ফিরে আসি ইনশাআল্লাহ!
(নাজনীন আক্তার হ্যাপির ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)