Current Date:Sep 30, 2024

রাষ্ট্রায়ত্ত ৫ ব্যাংকের পর্যালোচনা বৈঠকে গভর্নরের উদ্বেগ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের খেলাপি ঋণ আদায় সন্তোষজনক না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। বিশেষ করে বেসিক ব্যাংক নিয়ে বেশি উদ্বেগ জানিয়েছেন তিনি। ব্যাংকটির অধিকাংশ সূচক নেতিবাচক।

সোমবার বিকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত এক পর্যালোচনামূলক বৈঠকে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

 

রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের বিভিন্ন আর্থিক সূচকের সর্বশেষ অবস্থা জানতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ বৈঠক ডাকে। মূলত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সমঝোতা স্মারক সইয়ের (এমওইউ) আওতায় বৈঠকটি ডাকা হয়। বৈঠকে গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপতিত্বে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের এমডিরা উপস্থিত ছিলেন।

 

সূত্র জানায়, বৈঠকে সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে খেলাপি ঋণ, ঋণ অবলোপন, প্রভিশন ঘাটতি, মূলধন ঘাটতি এবং লোকসানি শাখা। খেলাপি ও অবলোপন থেকে কী পরিমাণ অর্থ আদায় করা হয়েছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি প্রভিশন ও মূলধন ঘাটতি পূরণে কী কী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া কোন ব্যাংকের কতটি শাখা লোকসানে পড়েছে এবং কতটি লোকসানি শাখা কমেছে, তা গভর্নর জানতে চেয়েছেন বলে বৈঠক সূত্র জানিয়েছে।

 

জানতে চাইলে অগ্রণী ব্যাংকের এমডি মোহাম্মদ শামস উল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো আগের থেকে অনেক ভালো করছে। কিছু সূচকে সমস্যা আছে। সবাই চেষ্টা করছি কাটিয়ে উঠতে। রূপালী ব্যাংকের এমডি মো. আতাউর রহমান প্রধান যুগান্তরকে বলেন, ভালো করার শেষ নেই। আরও ভালো করা উচিত। সব খারাপের মূল খেলাপি ঋণ। যা উদ্বেগ সৃষ্টি করছে। খেলাপি ঋণ আরও কমিয়ে আনার তাগিদ দিয়েছেন গভর্নর।

 

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৭ সাল শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত পাঁচ ব্যাংকের খেলাপি ৩৬ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ১৩ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণ সাত হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণ পাঁচ হাজার ৮১৮ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ পাঁচ হাজার ১১৫ কোটি টাকা এবং রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণ চার হাজার ২৫০ কোটি টাকা।

 

বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন এ মজিদ বলেন, খেলাপি ঋণ আদায়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা সমন্বয়হীনতা। যেসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, তারা এখন জেলে। বিচার হচ্ছে না। বিচার ছাড়াই দীর্ঘদিন জেলে থাকায় টাকা আদায় করা যাচ্ছে না। এদের বিরুদ্ধে মামলা করার আগে ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় করার দরকার ছিল।

 

সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, চার ব্যাংকের লোকসানি শাখা আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। তবে বেড়েছে জনতা ব্যাংকের। গত ডিসেম্বর পর্যন্ত সোনালী ব্যাংকের লোকসানি শাখা ২৩৩ থেকে কমে ১৮৮টি, অগ্রণী ব্যাংকের ৭৮ থেকে কমে ৪৩টি, রূপালী ব্যাংকের ৮৭ থেকে কমে ৩৩টি এবং বেসিক ব্যাংকের ২৮টি থেকে কমে ২১টি লোকসানি শাখা হয়েছে। তবে জনতা ব্যাংকের লোকসানি শাখা ৪৮টি থেকে বেড়ে হয়েছে ৫৭টি।

Share