Current Date:Nov 28, 2024

রোহোর গোলে মেসিদের অসাধ্য সাধন

স্পোর্টস ডেস্ক : শুরু নায়ক মেসি হলে শেষের নায়ক হলেন মার্কাস রোহো। কারণ তার গোলেই যে আর্জেন্টিনা অসাধ্য সাধন করে নক আউট পর্ব নিশ্চিত করেছে। তবে অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হবে ক্রোয়েশিয়াকে।

ম্যাচের শুরু থেকেই মেসিদের কাছে প্রত্যাশার চাপ ছিল আর্জেন্টাইন সাপোর্টারদের। অবশ্য প্রথমার্ধে হতাশ করেননি মেসি। ৬২২ মিনিট পর গোলের খাতা খোলেন মেসি। আর মেসির গোলটিই ছিল এবারের বিশ্বকাপে শততম গোল।
স্নায়ু যুদ্ধের লড়াইয়ে সেন্ট পিটার্সবার্গে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় আফ্রিকার সুপার ঈগল খ্যাত নাইজেরিয়ার বিপক্ষে খেলতে নামে দু’বারের চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ করতে থাকা জয়ের নেশায় থাকা আলবেসিলেস্তেরা। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে জমে ওঠে প্রথমার্ধ। অবশেষে ১৪ মিনিটে এভার বানেগার থ্রু থেকে মেসির ডান পায়ের অসাধারণ শটে লিড পায় আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপে এটি ছিল মেসির ষষ্ঠ গোল।
গোল পেয়ে আত্মবিশ্বাস ফিরে পায় আর্জেন্টিনা। মুহুর্মুহু আক্রমণে ব্যস্ত করে রাখে নাইজেরিয়ার রক্ষণ। কখনো ডান দিক থেকে কখনো বাম দিক থেকে। আজকের ম্যাচে আর্জেন্টিনার খেলা দেখে মনে হয়েছে পুরো একটি দল খেলছে। দলটি পুরোপুরি গোছানো।

ম্যাচের ৩২ মিনিটে ফাঁকায় বল পেয়ে যান অ্যাঞ্জেলো ডি মারিয়া। তবে ফাউল করে তাকে থামান লিওন বালুগুন। এতে হলুদ কার্ড দেখেন এ নাইজেরিয়ান। এতে ফ্রি-কিক পায় আর্জেন্টিনা। ফ্রি কিক থেকে মেসির শট গোলরক্ষক উজোহার হাত ছুঁয়ে পোস্টে আলতো স্পর্শ করে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। বাকি সময় আক্রমণ করলেও আর গোল পাওয়া হয়ে ওঠেনি আর্জেন্টিনার। তাই এক গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় উভয় দল।

বিরতি থেকে ফিরে অন্য এক নাইজেরিয়াকে দেখে পিটার্সবাগের দর্শকরা। নতুন উদ্যোমে আর্জেন্টিনার রক্ষণে আক্রমণ শানাতে থাকে তারা। এবার কিছুটা দূর্বল মনে হচ্ছিল আর্জেন্টিনার খেলা দেখে। ফলে গোল পেতে সময় লাগেনি তাদের। ৪৯ মিনিটে আক্রমণে ওঠা লিওন বালুগুনকে ডি বক্সে ফাউল করেন হাভিয়ের মাশ্চোরেনা। এতে তাকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। ফলে পেনাল্টি পায় নাইজেরিয়া। ৫১ মিনিটে সফল স্পট কিকে বল জালে জড়ান ভিক্টর মোজেস।

নাইজেরিয়া দারুণ সুযোগ পায় ৭২ মিনিটে। আর্জেন্টিনার রক্ষণের ফাঁক থাকার সুযোগ নিয়ে বক্সের বেশ দূর থেকে শট নেন এনদিদি। তার জোরালো শট ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়। চার মিনিট পর আরেকটি পেনাল্টির শঙ্কায় পড়ে আর্জেন্টিনা। মার্কোস রোহো ডি-বক্সের মধ্যে বল বিপদমুক্ত করেন, কিন্তু তার মাথা ছুঁয়ে হাতে লাগে। ভিএআর দেখে রেফারি সিদ্ধান্তে পৌঁছান, ইচ্ছা করে বল হাত দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেননি রোহো।

৮১ মিনিটে রোহোর পাস বক্সের মধ্যে পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি হিগুয়েইন। তার শট অনেক উঁচু দিয়ে চলে যায় মাঠের বাইরে। দুই মিনিট পর আরমানি দারুণ সেভে নাইজেরিয়াকে এগিয়ে যেতে দেননি।

এরপর গোল পেতে মরিয়া হয়ে পড়ে আর্জেন্টিনা। একটি মাত্র গোলের জন্য হন্য হয়ে ছুটেন মেসিরা। তবে গোলের দেখা মিলছিল না। এদিকে ধীরে ধীরে সময়ও শেষ হয়ে যাচ্ছিল। তাহলে কী পারবেন না তারা।

কিন্তু না, নাটকের তখনো ঢের বাকি ছিল। অবেশেষে ৮৬ মিনিটে আর্জেন্টিনার দিকে মুখ ফিরে চান ফুটবল দেবী। এবার ত্রাতা রোহো। গাব্রিয়েল মার্কাদোর ক্রসে দারুণ ভলিতে নিশানাভেদ করেন এ ডিফেন্ডার। এতে একরকম জয়ই নিশ্চিত হয়ে। যার কারণে রোহোর কাঁধে চড়ে বিজয়োল্লাস সেরে ফেলেন মেসি।

এ জয়ের ফলে দ্বিতীয় রাউন্ডে প্রতিপক্ষ হিসাবে ফ্রান্সকে পেয়েছে আর্জেন্টিনা। কাজানে আগামী ৩০ জুন বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে ফ্রান্সের বিপক্ষে মাঠে নামবে আর্জেন্টিনা।

Share