স্বাস্থ্য ডেস্ক : শুক্রাণু নেই, ডিম্বাণুও নেই। ফলে নিষেকও ঘটেনি। এরপরেও তৈরি হয়েছে ভ্রূণের প্রাথমিক চেহারা। ইঁদুরের শরীর থেকে দুই ধরনের স্টেম সেল সংগ্রহ করে পরীক্ষা চালিয়েছেন নেদারল্যান্ডের মাস্ত্রিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
কিন্তু গবেষণা পুরাপুরি সফল হয়নি। সব ঠিকঠাক চললে আগামী দুই তিনবছরের মধ্যে ইঁদুরের পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তৈরি করা হয়তো সম্ভব। তবে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী, ভবিষ্যতে সাফল্য এলে বিভিন্ন ওষুধ পরীক্ষার কাজ সম্পূর্ণ করা যাবে। বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও একটা নতুন ধার উন্মাচন হবে।
এ চর্চা শুরু হয়েছে মূলত ক্লোন-ভেড়া ‘ডলি’র জন্মের পর থেকে। শুক্রাণু-ডিম্বাণু ছাড়া ইঁদুরের ভ্রূণ যদি সত্যি তৈরি করা যায়, তাহলে পরীক্ষাগারে মানুষের ভ্রূণ তৈরিও কি সম্ভব? বিজ্ঞানীরা সে সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেননি। তবে বলেছেন, ব্যাপারটা অন্তত আগামী দুই দশকের মধ্যে ঘটছে না।
নীতিগত দিক থেকে অবশ্য নানা কথা উঠে এসেছে। উঠেছে কৃত্রিম ভাবে মানুষ সৃষ্টি এবং একই মানুষের অনেকগুলো প্রতিরূপ তৈরির বিপদের কথা। তেমনই ভিন্নমত রয়েছে ভ্রূণের উপরে ওষুধ পরীক্ষা নিয়েও।
ইঁদুরের শরীর থেকে একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের দুই ধরনের স্টেম সেল নিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। এ জাতীয় কোষগুলো থেকে সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি সম্ভব। দেখা যায়, কোষগুলো মিলিত হয়ে তৈরি করেছে ভ্রূণেরই একটি প্রাথমিক চেহারা। জীববিদ্যার ভাষায় যাকে বলে ‘ব্লাস্টোসিস্ট’। সেই ব্লাস্টোসিস্টকে স্ত্রী-ইঁদুরের গর্ভে স্থাপন করা হয়। শুক্রাণু-ডিম্বাণুর নিষেকে তৈরি সাড়ে তিনদিন বয়সী একটি স্বাভাবিক ভ্রূণ থাকলে মাতৃজঠরে যা যা পরিবর্তন ঘটার কথা, এ ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনই ঘটেছিল প্রাথমিক ভাবে। তবে পুরোপুরি সফল হয়নি সে প্রতিস্থাপন। তবুও আশার আলো দেখেছেন গবেষকেরা।
গবেষক দলের প্রধান, মাস্ত্রিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিকোলাস রিভরন বলেছেন, প্রায় সত্যিকারের ব্লাস্টোসিস্টের মতোই হচ্ছিল ব্যাপারটা। যদিও কোষগুলো খুব একটা সুবিন্যস্ত ছিল না। আশা করছি, আগামী তিন বছরে সেটা তৈরি করতে পারব। এ প্রথম গবেষণাগারে স্টেম সেল থেকে ভ্রূণ, নাড়ি সবটাই তৈরির পথে হেঁটেছিলাম আমরা। সাফল্য এলে ভ্রূণের উপরে ওষুধ পরীক্ষার কাজে সুবিধা হবে বলে জানান তিনি।
তবে নিকোলাস সাফ বলেছেন, এ পদ্ধতি মানুষের উপরে প্রয়োগে আমার বিশ্বাস নেই। মানুষ ক্লোন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।