Current Date:Sep 25, 2024

২০১৭ সালে ৮৯ হাজার বাংলাদেশীকে প্রত্যাবাসন

অনলাইন ডেস্ক : কারো পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে; কারো আবার ভিসার মেয়াদ। এমন প্রায় ৮৯ হাজার বাংলাদেশীকে গত বছর ফিরিয়ে এনেছে সরকার। এদের অধিকাংশকেই মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো বলছে, প্রত্যাবাসন হয় মূলত কাজের মেয়াদ শেষ হয়নি, অথচ পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে। তবে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার কারণেই এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে। ফলে বিদেশে অবৈধ হয়ে পড়ে প্রবাসীরা। গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লেও অনেককে ফিরিয়ে আনা হয়। সবমিলে ২০১৭ সালেই দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে ৮৮ হাজার ৯৯৮ জন বাংলাদেশীকে।

কোন দেশ থেকে কতজনকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে সুনির্দিষ্টভাবে তা জানা না গেলেও এদের বড় অংশকেই মধ্যপ্রাচ্য থেকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো। এর মধ্যে কেবল মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশ থেকেই ফিরিয়ে আনা হয়েছে ২৬ হাজার বাংলাদেশীকে। তবে মধ্যপ্রাচ্যের কোন দেশ থেকে তাদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে, তা জানা যায়নি।

গত বছর প্রায় ৮৯ হাজার বাংলাদেশীকে ফিরিয়ে আনা হলেও ইউরোপে অবৈধ হয়ে পড়া ৯৩ হাজার বাংলাদেশীকে ফেরত আনার চাপ বাড়ছে। এ নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল গত বছর ঢাকাও ঘুরে গেছে। সে সময়ে দুই দেশ চূড়ান্ত করেছে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি)। তবে ‘অবৈধ’ বাংলাদেশীদের ফেরাতে তাদের নাগরিকত্ব যাচাই-বাছাইয়ে যৌক্তিক সময় প্রস্তাব করেছে ঢাকা। নিয়মমাফিক উপায়ে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর নাগরিকত্বের বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে তাদের ফিরিয়ে আনতে চায় বাংলাদেশ। এছাড়া জার্মানিতে অবৈধ হয়ে পড়া প্রায় ৫০০ বাংলাদেশীকে ফিরিয়ে আনার বিষয়েও বাংলাদেশের ওপর দেশটির তরফ থেকে চাপ রয়েছে।

ইউরোপে অবৈধ হয়ে পড়া বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশীর প্রত্যাবাসন বিষয়ে এক ই-মেইলের জবাবে ঢাকাস্থ ইইউ দূতাবাসের মিনিস্টার কনস্যুলার কন্সট্যানটিনোস ভারদাকিস বণিক বার্তাকে বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অন্য দেশে অবৈধভাবে বসবাসকারীদের নিজ দেশে ফিরিয়ে আনার বাধ্যবাধকতা রয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশের। বাংলাদেশ ও ইইউর মধ্যে যে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর সই হয়েছে, তা শুধু অবৈধ বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনার প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার বিষয়ে। তবে নিয়মিত প্রত্যাবাসন সহযোগিতায়ও এটি ভূমিকা রাখবে। এসওপি থেকে এটাই প্রত্যাশা করে ইইউ।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, মধ্যপ্রাচ্য সংকট শুরু হওয়ার পর সাম্প্রতিক বছরগুলোয় ইউরোপে অভিবাসনপ্রত্যাশীর সংখ্যা অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। এ সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের পাশাপাশি বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তানসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকরাও অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে ইউরোপে প্রবেশ করেছে। অবৈধভাবে প্রবেশ করা এসব বাংলাদেশীসহ অন্যান্য দেশের নাগরিকদেরও ফিরিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করছে ইইউ। এক্ষেত্রে দেশগুলো সহযোগিতা না করলে ভিসা প্রদান স্থগিতসহ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অন্য বিষয়গুলো বিবেচনা করবে ইইউ।

তবে বাংলাদেশীদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় আরো গতি আনা প্রয়োজন বলে মনে করছেন ইউরোপীয় কূটনীতিকরা। তারা বলছেন, যেহেতু প্রতিটি আবেদনকে আলাদা আলাদাভাবে যাচাই করা হচ্ছে, তাই আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগে কোনো পদক্ষেপ নিতে চায় না ইইউ সদস্য দেশগুলো। তবে যাদের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বা যারা কারাগারে রয়েছে, তাদের ফিরিয়ে আনার বিষয়ে ত্বরিত পদক্ষেপ দেখতে চান তারা।

Share