Current Date:Oct 3, 2024

দুই মাস ধরে খাওয়ার পানি নেই মোংলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে

অনলাইন ডেস্ক : দুই মাস ধরে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ নেই। এর মধ্যে রমজানের শুরু থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানোর জন্যও যথেষ্ট পানি মিলছে না। ফলে রোগী, চিকিৎসকসহ সবার দুর্ভোগ চরম সীমায় পৌঁছে গেছে। পৌরসভার পানি সরবরাহ কম ও হাসপাতালের পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় এ সংকট তৈরি হয়েছে।

মোংলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ২০০৭ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভাসহ বন্দর এলাকার প্রায় দুই লাখ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় একমাত্র ভরসা এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। চিকিৎসক ও সেবিকা সংকটের পাশাপাশি চিকিৎসা সরঞ্জামের সংকট দীর্ঘদিনের। এর মধ্যে শুরু হয়েছে পানি সংকট।

এদিকে রোজার মধ্যে তীব্র গরম আর দ্রুত পরিবর্তনশীল আবহাওয়ার কারণে এখন হাসপাতালে ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন শতাধিক রোগী আসছে চিকিৎসা নিতে। দৈনিক গড়ে ভর্তির রোগীর সংখ্যা অর্ধশত। এসব রোগীর সঙ্গে থাকছেন আত্মীয়-স্বজনরা। এত মানুষ পানির অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়ছেন। রোগীদের খাওয়া, গোসল, হাত-মুখ ধোয়া এমনকি টয়লেটের পানিও মিলছে না। সামর্থ্য অনুযায়ী বাইরে থেকে বোতলজাত পানি কিনে কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন অনেকে।

হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স দীপ্তি মল্লিক জানান, শুধু রোগীরাই নয়, হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সরাও রয়েছেন বিশুদ্ধ পানির সংকটে। অপারেশন ও ডায়রিয়াসহ অন্য জটিল রোগীদের চিকিৎসা শেষে হাত-মুখ পরিষ্কার করার জন্যও তারা পানি পাচ্ছেন না। প্রায় দুই মাস ধরে এ অবস্থা চলছে।

তিনি জানান, হাসপাতালের পানির উৎস একটি পুকুর ও একটি গভীর নলকূপ। কিন্তু বর্তমানে পুকুরটি শুকিয়ে তলদেশের মাটি ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। নলকূপে যে সামান্য পানি ওঠে, তা এতই লবণাক্ত যে মুখে নেয়া যায় না। পৌর কর্তৃপক্ষ পাইপলাইনের মাধ্যমে যে পানি সরবরাহ করে তা একেবারে অপর্যাপ্ত।

সম্প্রতি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা রোগীরা বাইরের ডোবা-নালা ও নিকটবর্তী পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করছে। অনেকে সেই পানি পানও করছে। যাদের সামর্থ্য আছে, তারা বোতলজাত পানি কিনছেন। রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পানির অভাবে তারা গোসল, টয়লেট ব্যবহার করতে পারছেন না। পানির অভাবে হাসপাতালের টয়লেট ও চত্বরে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বিরাজ করছে। এমনকি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের খাওয়ার স্যালাইন মেশানোর জন্যও পানি পাওয়া যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, পৌরসভা থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে যে পানি সরবরাহ করা হয় তা যৎসামান্য। এ পানিতে রোগী ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ২ ঘণ্টার চাহিদাও পূরণ হয় না। অন্যদিকে নিজস্ব পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে। যে কারণে হাসপাতালে বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। এ সমস্যা কবে মিটবে সেটাও তিনি জানেন না। এ নিয়ে এক ধরনের অসহায়ত্বই প্রকাশ করেন তিনি।

Share