Current Date:Sep 30, 2024

অপহরণের অভিযোগে আটক: ডিবি হেফাজতে এক আসামির মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক : মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মিরপুর জোনাল টিমের হেফাজতে থাকা এক আসামির মৃত্যু হয়েছে।

তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। ওই আসামির নাম আসলাম (৪৫)।

তিনি পেশায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের গাড়িচালক। তার বিরুদ্ধে চারটি মামলা আছে বলে ডিবি পুলিশ জানিয়েছে।

সূত্র মতে, আসলাম এবং তার স্ত্রী রিপাকে এক সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়। আসলামের মৃত্যুর পর রিপাকে ছেড়ে দেয়া হয়। তবে রোববার সন্ধ্যা থেকে আসলামের লাশ ঢামেক মর্গে পড়েছিল। কিন্তু রিপা বা আসলামের কোনো স্বজন হাসপাতালে যাননি বলে মেডিকেল সূত্র জানিয়েছে।

ডিবি জানায়, রোববার গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. মাহাবুবুর রহমান ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে আসলামকে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বিকাল পৌণে ৬টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তা মাহাবুব সাংবাদিকদের বলেন, তিনি (আসলাম) অসুস্থ ছিলেন। এ অবস্থায় আমরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। চিকিৎসক কয়েকটি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। ওই পরীক্ষা করার পর আবার হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে আসলামকে রাজারবাগ হাসপাতাল চিকিৎসা দেয়া হয় বলে তিনি জানান।

ডিবি মিরপুর জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মাহমুদ নাসের জনি যুগান্তরকে বলেন, একটি অপহরণের অভিযোগে আসলাম ও তার স্ত্রী রিপাকে শনিবার গাজীপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

নাজমুল নামের এক ব্যক্তি গত ২৬ এপ্রিল রাজধানীর শাহআলী থানায় অভিযোগ করেন যে, তার ভাই নিয়ামুলকে অপহরণ করা হয়েছে। এ নিয়ে ওইদিন শাহআলী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়।

ওই ডায়েরীর একটি অনুলিপি নিয়ে ভাইয়ের সন্ধানে নাজমুল ডিবি পুলিশের কাছে আসে। এরই মধ্যে নাজমুলের কাছে একটি ফোন আসে।

বলা হয় এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দিলে নিয়ামুলকে ছেড়ে দেয়া হবে। নাজমুল বিষয়টি ডিবিকে জানালে ডিবি পুলিশ ওই ফোনের সূত্র ধরে আসলাম ও রিপাকে গ্রেফতার করা হয়। অপহূত নিয়ামুল হলেন রিপার চাচাতো ভাই।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণের সঙ্গে রিপা এবং তার স্বামীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তাদের সঙ্গে অপহরণ চক্রের আরও কয়েকজন সদস্যের যোগসাজস রয়েছে।

পুলিশ জানায়, অপহূত নিয়ামুল কাতার প্রবাসী। তিনি সেখানে এসি মেরামতের কাজ করেন। সম্প্রতি দেশে এসেছেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান, আসলামের মৃত্যু পর তার স্ত্রী রিপাকে আত্মীয়দের জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়েছে। গোটা বিষয় নিয়ে তদন্ত চলছে।

প্রয়োজনে রিপাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। অপহরণের সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ডিসি জানান, আসলাম হার্নিয়া সমস্যায় ভুগছিলেন। রোববার সকালে পেট ব্যাথা অুনভব করায় তাকে প্রথমে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নেয়া হয়। রক্তচাপ কমে যাওয়ায় সেখান থেকে তাকে ঢামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

ঢামেক কর্তৃপক্ষ তাকে বেশকিছু পরীক্ষা-নীরিক্ষা করাতে বললে তাকে ফের পুলিশ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে তিনি অধিকতর অস্বস্থি বোধ করেন।

এক পর্যায়ে তিনি বমি করতে করতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। এ অবস্থায় দ্রুত তাকে আবার ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সূত্র : যুগান্তর

Share