Current Date:Oct 1, 2024

অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়া হলো না বার্সেলোনার

স্পোর্টস ডেস্ক : ১৯৬৪ সাল। ইতিহাসে ওই একবারই বার্সেলোনা হেরেছিল লেভান্তের কাছে। সেবার ৫-১ গোলের ব্যবধানে হারতে হয়েছিল স্প্যানিশ জায়ান্টদের। এরপর ২০১৮ সাল। রোববার রাত, প্রায় অর্ধশত বছর পরের ঘটনা। এই দিন লা লিগায় ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটল ফের। লেভান্তের কাছে দ্বিতীয়বারের মতো হেরেছে বার্সেলোনা। তবে এই ম্যাচে কুতিনহোর কল্যাণে লেভান্তের মাঠে ব্যবধানটা হয়েছে ৫-৪ গোলের।

লা লিগায় চলতি মৌসুমে বার্সেলোনাকে মনে হচ্ছিল অপ্রতিরোধ্য। অথচ পয়েন্ট টেবিলের ১৬ নম্বর (এই ম্যাচের আগে) দলের কাছে হেরে অপরাজিতের আসনটি হারল কাতালানরা। পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচের ভাগ্য শেষ মুহূর্তে স্বাগতিকদের পক্ষেই গেছে। লা লিগায় মৌসুমের শেষ মুহূর্তে এসে পরাজয় বরণ করতে হলো বার্সেলোনাকে, হারাতে হলো অপরাজিত থাকার আসনটি।

শুরুতে আক্রমণটা চালায় বার্সেলোনাই। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে সেই আক্রমণের ফসল ঘরে তুলতে পারেনি অতিথিরা। তবে ভুল করেনি লেভান্তে। ম্যাচের নবম মিনিটেই প্রথম গোল দিয়ে অতিথি বরণ করে নেয় স্বাগতিকরা। মোরালেসের অসাধারণ ক্রস থেকে বোয়েটাংয়ের শটে বার্সার জালে বল জড়ায় (১-০)। গোল হজম করে বার্সেলোনাকে অসহায়, বিবর্ণ দেখাচ্ছিল তখন। গোলমুখে ঠিকমতো শটই নিতে পারছিল না ভালভার্দের শিষ্যরা। বরং পাল্টা আক্রমণে লেভান্তের খেলোয়াড়েরা ভয় ধরিয়ে দিচ্ছিল বার্সার রক্ষণে। ৩০তম মিনিটে বার্সার রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে দ্বিতীয় গোল করে দলকে বড় জয়ের দিকে এগিয়ে নেন বোয়েটাং (২-০)। ৩৮তম মিনিটে চমক দেখান কুতিনহো। পিকের দুর্দান্ত নৈপুণ্যে বল পান সুয়ারেজ। তার কাছ থেকে বল পেয়ে বুলেটগতির শটে গোল ব্যবধান কমান ব্রাজিলিয়ান এই মিডফিল্ডার (২-১)। কুতিনহোর গোলের পর খানিকটা নড়েচড়ে বসে বার্সা সমর্থকরা। এরপর প্রথমার্ধে বেশ কিছু সুযোগ তৈরি হলেও কাজে লাগাতে পারেনি কোনো দল।

দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটা ছিল গোলবন্যা। প্রথমার্ধে কুতিনহোর গোলের পর মনে হচ্ছিল বার্সেলোনা খেলায় ফিরে আসবে। তা না হয়ে উল্টো খেলা শুরু হতেই ৪৬তম মিনিটে বার্সার জালে বল জড়ান লেভান্তের বার্ধি (৩-১)। মিনিট তিনেক পর সতীর্থ খেলোয়াড় লুনার কাছ থেকে বল পেয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম হ্যাটট্রিক পূরণ করেন বোয়েটাং (৪-১)। এরপর ৫৬তম মিনিটে ফের বার্ধির গোল। ৫-১ গোলের স্কোরলাইনটা তখন বার্সেলোনার পরাজয় বরণের পূর্বাভাস দিচ্ছিল। মনে করিয়ে দিচ্ছিল ইতিহাস।

বার্সাকে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছিলেন কুতিনহো। ৫৯তম মিনিটে তাঁর দ্বিতীয় গোলে গোলব্যবধান কমায় বার্সেলোনা (৫-২)। পাঁচ মিনিট পর হ্যাটট্রিক করেন কুতিনহো (৫-৩)। বুসকেটসের কাছ থেকে বল পেয়ে ২০ গজ দূর থেকে যে শটে গোল করেছেন কুতিনহো, সত্যি অসাধারণ। এরপর লেভান্তের ডি বক্সে ফাউলের শিকার হন বুসকেটস। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি বার্সা তারকা লুইস সুয়ারেজ (৫-৪)। ম্যাচের তখন মিনিট বিশেক বাকি। বার্সা সমর্থকরা হয়তো ভাবছিলেন, আরও সময় আছে। জিততে না পারুক, অন্তত হারবে না বার্সেলোনা। আর এই ম্যাচ না হারলে বাকি থাকত একটা ম্যাচ। শেষের ওই ম্যাচ অপরাজিত থাকলেই ‘ইনভিনসিবল’ ট্যাগ জুটে যেত বার্সার। এই কীর্তি ইউরোপের সেরা পাঁচ লিগে আর মাত্র তিন দলই করতে পেরেছে। কিন্তু বার্সেলোনা সেটা পারল কই!

Share