Current Date:Oct 4, 2024

ইসরাইলের সাথে না খেলতে মেসিদের প্রতি আহবান

স্পোর্টস ডেস্ক : ইসরাইলের সাথে আর্জেন্টিনার অনুষ্ঠিতব্য প্রীতি ফুটবল ম্যাচ বাতিল করতে অনুরোধ করেছে ফিলিস্তিন ফুটবল এসোসিয়েশন (পিএফএ)। জুনের ৯ তারিখে জেরুসালেমের টেডি স্টেডিয়ামে ইসরাইল ও আর্জেন্টিনার মধ্যে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সোমবার পিএফএ সভাপতি জিব্রিল রজব জেরুসালেমের টেডি স্টেডিয়ামকে ভেন্যু নির্ধারণের প্রতিবাদে আর্জেন্টাইন ফুটবল এসোসিয়েশন, দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবল কনফেডারেশন এবং বিশ্ব ফুটবলের মূল সংস্থা ফিফার কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। খবর আল জাজিরার।

রজব বলেন, ইসরাইল খেলাকেও রাজনীতিকরণ করেছে। ৯ ‍জুন টেডি স্টেডিয়ামে ইসরাইল যে প্রীতি ম্যাচ আয়োজন করেছে সেটি সম্পুর্ণ অনৈতিক। যেখানে খেলা অনুষ্ঠিত হবে ১৯৪৮ সালের আগে এই স্থানে ফিলিস্তিনের গ্রাম ছিল। সেখান থেকে এর অধিবাসীদের উচ্ছেদ করে ইসরাইলে এই এলাকা দখল করেছিল।

তিনি বলেন, ইসরাইল একটি দখলদার বাহিনী। তারা অপশক্তির প্রয়োগ করছে। এরা বৈশ্বিক মূল্যবোধের লঙ্ঘন করে আসছে। ইসরাইল খেলার মূলনীতিরও বিরোধী।

রজব বলেন, এই ম্যাচের কারণে আর্জেন্টিনাকে তার খেলোয়াড়ি এবং নৈতিকতার বিষয়ে মূল্য দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, ইসরাইল ‘ইহুদিদের জন্য অখন্ড জেরুসালেম’ বলে আর্জেন্টিনার জনগনকে ভুল বুঝাচ্ছেন।

এদিকে সম্প্রতি ফিলিস্তিনে শুরু হওয়া নতুন আন্দোলন থেকে এই প্রীতি ম্যাচ না খেলতে অনুরোধ জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

যতক্ষণ ইসরাইল ফিলিস্তিনিদেরকে তাদের ভূখন্ড ফেরত দিবে না, তাদের মানবাধিকার রক্ষা করবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের সাথে এসব খেলা থেকে বিরত থাকার দাবি জানান তারা ।

ম্যাচ আয়োজক ডেনিয়েল বেনাইম ইসরাইল ফুটবল এসোসিয়েশন ওয়েবসাইটের বরাত দিয়ে বলেন, ৬ লাখের বেশি মানুষ এই খেলাটি দেখতে চাচ্ছেন। যদিও টেডি স্টেডিয়ামে ৩১ হাজার ৭৩৩ জন বসে খেলা দেখতে পারবে।

২০১৮ সালে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য ফুটবল বিশ্বকাপে ইসরাইল অংশ নিতে পারেনি।

সেরা স্কোরার মেসি

লা ম্যাসিয়ার যুব ক্যারিয়ারেই ভবিষ্যতের বিখ্যাত ফুটবল তারকা হিসেবে অবির্ভাব সময়ের ব্যাপারে পরিণত করেন লিওনেল মেসি। তরুণ আর্জেন্টাইনের বল পায়ের জাদুতে মুগ্ধ গণমাধ্যমের কর্মীদের লেখনীতেও স্পষ্ট হয় স্পেনের শীর্ষস্থানীয় ফুটবলে অভিষেকের অপেক্ষায় অতি মানবীয় এক প্রতিভা। তবে প্রতিপক্ষের জালে বল প্রবেশ করানোর রেসে লিওনেল মেসির অব্যাহত সাফল্যের ব্যাপারে কেউই আঁচ করতে পারেননি। বার্সেলোনার জার্সিতে গোল আদায়ে সবার প্রত্যাশা বহু আগেই টপকে গেছেন আর্জেন্টাইন সেনসেশন। উপরন্তু প্রতিটি নতুন মৌসুমেই উন্নতি ঘটছে তার দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে গোল করার সামর্থ্যেরও।

২০০৫ সালে বার্সেলোনার জার্সিতে ক্যারিয়ারের প্রথম গোল করেন লিটল জিনিয়াস মেসি। একে একে ১৪টি মওসুম অতিক্রমের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছেন শৈশবেই জন্মভূমি ছেড়ে কাতালুনিয়ায় পাড়ি জমানো আর্জেন্টাইন ফুটবলার। বার্সেলোনার নম্বর টেন জার্সি গ্রহণের পরই মেসির মাঠের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। একটির পর একটি মৌসুমের অব্যাহত পারফরম্যান্সে তার ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে সমসাময়িককালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভয়ঙ্কর গোল স্কোরার হিসেবে।

কাতালুনিয়ার জায়ান্টদের জার্সিতে সিনিয়র ক্যারিয়ারের মেসির প্রথম গোল সরাসরি স্টেডিয়ামে বসে উপভোগকারীদের অনেকেই নিশ্চিত করেন স্প্যানিশ ফুটবলের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্তি। কিন্তু গোল করার ক্ষেত্রে আর্জেন্টাইন সুপারস্টারের অসীম সামর্থ্যরে ব্যাপারে বিশ্লেষকেরা অন্ধকারেই থেকে যান। এক্ষেত্রে কোনো কাজে দেয়নি দিনের পর দিনের ক্লাবের এ দলের জার্সিতে মেসির পারফরম্যান্স স্টেডিয়ামে বসে উপভোগের অভিজ্ঞতাও।

স্পেনের ঘরোয়া ফুটবলের গোলের ইতিহাস ওলট-পালট মেসির বল পায়ের জাদুতে। বার্সেলোনা ও স্প্যানিশ ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ গোল স্কোরার আর্জেন্টাইন সেনসেশন। লা লিগায় ৩৮৩ গোলে পৌঁছে গেছেন লাতিন সুপারস্টার। বেশ আগেই টপকে গেছেন টেলমো জারা ও অ্যালফ্রেডো ডি স্টেফানোর মতো কিংবদন্তিকে। প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের বাইরে ও ভেতরের প্রতিটি ইঞ্চিতে পা রেখে গোল করার অভাবনীয় কৃতিত্ব গড়েছেন মেসি। তবে তার ‘বাঁ পায়ের’ অতি-মানবীয় সামর্থ্যরে বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছিল সিনিয়র দলের প্রথম গোলেই। বার্সেলোনা ক্যারিয়ারের পরবর্তী প্রত্যেক ১০ গোলের আটটিই এসেছে আর্জেন্টাইন তারকার বাঁ পায়ের কারিশম্যাটিক ফুটবলে। মাঠের ফুটবলে তুলনামূলকভাবে কম কার্যকর তার ডান পা। এখন পর্যন্ত ডান পায়ে ৫৭ গোল করেছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার।

শারীরিক গঠনে খর্বকায় মেসির জন্য হেডের সাহায্যে প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠানোর কাজটি অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার। তবে সময়ের আবর্ততে এক্ষেত্রেও তিনি উন্নতির নজির রেখেছেন। ২০০৮ সালে হেডে প্রথম গোল আদায় করেন বার্সেলোনা সুপারস্টার। ওই একই বছরে স্পেনের দলটির নম্বর টেন জার্সির মালিকানা গ্রহণের পরই প্রস্ফুটিত হয়েছে মেসির সিনিয়র ক্যারিয়ার। ২০১২ সালে লা লিগার এক মওসুমে সর্বকালের সর্বোচ্চ ৫০ গোল করার বিরল কৃতিত্ব দখলে নেন আর্জেন্টাইন সেনসেশন।

ব্রাজিলীয় সেনসেশন রোনালদিনহোর প্রস্থানে ফ্রি-কিক থেকে বার্সেলোনাকে অবিশ্বাস্য গোল উপহার দেয়ার সূচনা মেসির। এ বিভাগে তার উন্নতিও অটুট রয়েছে। ২০১১-১২ মৌসুমের প্রথমবারের মতো ফ্রি-কিক থেকে তার গোলসংখ্যা উন্নীত হয় দুইয়ে। চলমান লা লিগার আসরে ইতোমধ্যেই তিনি ফ্রি-কিক থেকে ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ৬ গোল করেছেন।

Share