ডেস্ক রিপোর্ট : ঈদে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন মানিকগঞ্জের সুই সুতার কারিগররা। তাদের তৈরি পোশাক ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে সরবরাহ করা হচ্ছে। আর এসব কারুশিল্পী হচ্ছেন গ্রামের গৃহিণী ও শিক্ষার্থীরা। যাঁরা গৃহস্থালির কাজের পাশাপাশি বাড়তি আয়ের মাধ্যমে পরিবারের ও সমাজের অর্থনৈতিক অবলম্বন তৈরিতে অবদান রাখছেন।
পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শাড়ি, সালোয়ার-কামিজসহ নানা রকম পোশাক তৈরি করছেন এসব কারিগর। এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠান ‘নকশীর কর্ণধার রাকিবুল হাসান সুমন জানান, প্রায় পাঁচ হাজার গ্রামীণ নারী বর্তমানে সুই-সুতার কাজের সঙ্গে জড়িত। তাঁর প্রতিষ্ঠানেও কাজ করছে প্রায় ৩০০ নারী শ্রমিক। সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান আয়শা আবেদ ফাউন্ডেশন। তাদের রয়েছে নিজস্ব প্রায় ৮০টি কেন্দ্র। যেখানে প্রায় আড়াই হাজার শ্রমিক কাজ করে। আড়ং ব্র্যান্ডের পোশাক তৈরি করে আয়শা আবেদ ফাউন্ডেশন। এ ছাড়াও আরো বেশ কয়েকটি ব্র্যান্ডের পোশাক তৈরি হয় মানিকগঞ্জে। সব মিলিয়ে এবারের ঈদে মানিকগঞ্জ থেকে দুই থেকে আড়াই লাখ হাতে কাজ করা পোশাক তৈরি হবে।
মানিকগঞ্জের বেওথা গ্রামের গৃহবধূ সবজান বিবি জানান, তিনি ১০ থেকে ১২ বছর ধরে সংসারের কাজের ফাঁকে এই কাজটি করছেন। প্রতিদিন তিন-চার ঘণ্টা কাজ করলে মাসে আয় হয় ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। ঈদের আগে চাপ থাকে। সে জন্য ঈদের দুই মাস আগে ছয়-সাত ঘণ্টা কাজ করেন। তাতে আয়-রোজগারও বেড়ে যায়। তবে বান্দুটিয়া গ্রামের জাহানারা বেগম বললেন, মজুরি আরেকটু বাড়ালে তাঁদের সুবিধা হতো। কেননা তাঁদের হাতের কাজের একটি পাঞ্জাবি দোকানে যে দামে বিক্রি হয় সে তুলনায় তাঁদের মজুরি অনেক কম দেওয়া হয়। তাঁর হিসাবে একটা পাঞ্জাবিতে সুই-সুতার কাজ করে তাঁরা বড়জোর ২০০ টাকা পান। অথচ একটি পাঞ্জবি কমপক্ষে বিক্রি হয় দুই হাজার থেকে ১০ হাজার টাকায়।
লেখাপড়ার ফাঁকে একই কাজ করেন ঘুস্তা গ্রামে নবম শ্রেণির ছাত্রী সুমনা আক্তার। সুমনা জানান, সারা বছর না হলেও ঈদের আগে দুই মাস সে এই কাজ করেন। তাতে তাঁর ঈদের খরচটা উঠে আসে। সে জানায়, অনেক ছাত্রী সারা বছরই কাজ করে। এতে হাত খরচ পরিবারের কাছে চাইতে হয় না।