অনলাইন ডেস্ক: আমাদের সবারই জানা ২৪ ঘণ্টায় ১ দিন। যদি এমন হয় ২৫ ঘণ্টায় ১ দিন। বিষয়টি আপনার আমার জন্য বিস্ময়ের কারণ হলেও সত্যিই আগামী দিনগুলোতে এমনটা হতে চলেছে। বাড়ছে দিনের মাপ! আর ২৪ ঘণ্টায় নয়, ১ দিন হবে ২৫ ঘণ্টায়। সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য। খবর ইয়াহু নিউজ।
মাঝে মাঝে আমরা বলে ফেলি দিন কেন এতো ছোট। তাদের জন্য এমন সংবাদ নিশ্চিয় সুখকর। অনেকেই সংসার, অফিস, বন্ধুবান্ধব- সব কাজ করে নিজের জন্য আর হাতে সময় থাকে না। কখনও তো সারাদিনে পুরোটা কাজ শেষ করা সম্ভব হয় না। কিন্তু ভবিষ্যতে তার কিছুটা সমাধান হয়তো মিলতে চলেছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবর বলা হয়েছে, কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন ম্যাডিসন এর গবেষকরা এমন তথ্য জানিয়েছেন।
গবেষকরা বলছেন, ১০০ কোটি বছর আগে পৃথিবীতে দিনের মাপ ছিল ১৮ ঘণ্টা। ক্রমে সেই মাপ বেড়ে পৌঁছেছে ২৪ ঘণ্টায়। আর আগামীতে হতে চলেছে ২৫ ঘণ্টায়।
এ নিয়ে ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন ম্যাডিসন এর ভূবিজ্ঞানের অধ্যাপক স্টিফেন মেয়ার্স বলেন, সময় যতোই গড়াচ্ছে চাঁদ পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। তাতেই প্রভাবিত হচ্ছে পৃথিবীর আহ্নিক গতি। নিজের চারদিকে একবার ঘুরতে বেশি সময় নিচ্ছে পৃথিবী। যার ফলে দিন আরও লম্বা হয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে ২৫ ঘণ্টাতেই ১ দিন হতে চলেছে। বাড়ছে পৃথিবী ও চাঁদের দূরত্ব।
ভূবিজ্ঞানীরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় এই বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস-এ প্রকাশিত হওয়া মাত্রই সারা বিশ্বে চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছে এই গবেষণা।
উল্লেখ্য, চাঁদ পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ এবং সৌর জগতের পঞ্চম বৃহত্তম উপগ্রহ। পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে চাঁদের কেন্দ্রের গড় দূরত্ব হচ্ছে ৩৮৪,৩৯৯ কিলোমিটার ( প্রায় ২৩৮,৮৫৫ মাইল) যা পৃথিবীর ব্যাসের প্রায় ৩০ গুণ। চাঁদের ব্যাস ৩,৪৭৪.২০৬ কিলোমিটার (২,১৫৯ মাইল) যা পৃথিবীর ব্যাসের এক-চতুর্থাংশের চেয়ে সামান্য বেশি।
এর অর্থ দাঁড়াচ্ছে, চাঁদের আয়তন পৃথিবীর আয়তনের ৫০ ভাগের ১ ভাগ। এর পৃষ্ঠে অভিকর্ষ বল পৃথিবী পৃষ্ঠে অভিকর্ষ বলের এক-ষষ্ঠাংশ। পৃথিবী পৃষ্ঠে কারও ওজন যদি ১২০ পাউন্ড হয় তা হলে চাঁদের পৃষ্ঠে তার ওজন হবে মাত্র ২০ পাউন্ড। এটি প্রতি ২৭.৩২১ দিনে পৃথিবীর চারদিকে একটি পূর্ণ আবর্তন সম্পন্ন করে। প্রতি ২৯.৫ দিন পরপর চন্দ্র কলা ফিরে আসে অর্থাৎ একই কাজ আবার ঘটে।
পৃথিবী-চাঁদ-সূর্য তন্ত্রের জ্যামিতিতে পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনের কারণেই চন্দ্র কলার এই পর্যানুক্রমিক আবর্তন ঘটে থাকে।