নিজস্ব প্রতিবেদক: গাজীপুরের আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুলিশ নির্বাচন পরিচালনা করছে অভিযোগ করে সব বাধা উপেক্ষা করে দিনের শুরুতেই ভোটারদের কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি।
রোববার বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই আহবান জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গাজীপুরের ভোটাররা ভোট দিতে চান এবং তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে চান। আমি গাজীপুরবাসীকে আহ্বান জানাতে চাই, সমস্ত বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে আপনারা ভোট কেন্দ্রে যান। ভোটকেন্দ্রে সকাল থেকেই যান এবং গিয়ে আপনাদের ভোটের অধিকারকে প্রয়োগ করুন। নির্বাচন কমিশনকে বলব, আমরা ২৬ জুন গাজীপুরের নির্বাচন, সুষ্ঠু. অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে ভোটাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সব ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ করা উচিৎ।’
গাজীপুর নির্বাচনের সঠিক সংবাদ পরিবেশনের জন্য গণমাধ্যমের প্রতি আহবানও জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘গাজীপুরের গিয়ে প্রত্যক্ষ করেছি। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আসলে নেতা-কর্মীরা নির্বাচনটা পরিচালনা করছে না। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এটা পরিচালনা করছেন ওখানকার এসপি (পুলিশ সুপার) হারুন অর রশিদ। তার অধীনে যে পুলিশ ফোর্স, ডিবি আছে তারা এটা পরিচালনা করছে। যখন আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম পুলিশের গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তখন ওখানকার এসপির দায়িত্বটা কী ছিলো? নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব কী ছিলো। কেউ কি এসপিকে জিজ্ঞাসা করেছেন?’
‘পুরো নির্বাচনটা পরিচালনা করছে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুলিশ বিভাগ, এসবি-ডিবি এরা করছে। মনে হচ্ছে প্রার্থী আওয়ামী লীগের নন, এসপি নিজেই প্রার্থী। এরকম একটা ভাবসাব দেখা গেছে। ভোটারদের প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুলিশ।’
সুষ্ঠু ভোট হলে ধানের শীষ প্রতীকের মেয়রপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার লক্ষাধিক ভোটে বিজয়ী হবেন বলে আশাবাদী বিএনপি মহসচিব। তিনি বলেন, ‘গাজীপুরের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমরা শতকরা একশ ভাগ আশাবাদী। আমরা আগেই বলেছি, গাজীপুর সিটি নির্বাচন ইসির (নির্বাচন কমিশন) জন্য টেস্ট কেইস। আমরা এই নির্বাচনটি দেখে আমরা বক্তব্য রাখবো।’
গাজীপুরে প্রতিটি কেন্দ্রে একজন নয়, তিন-চার জন করে রাখা হচ্ছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন তারা থাকতে পারবে কিনা এটা তো নির্ভর করবে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতার ওপরে। সরকারি দল জরবদস্তিতে সবাইকে বের করে দেবে কিনা তার ওপরে।’
নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ‘বিএনপির সঙ্গে প্রেম নয়’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন প্রশ্নের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘উনি ভালো কবিতা লিখতেন একসময়। প্রেমবিহীন কবিতা হয় না। প্রেম না হলে কিন্তু কবিতা-গল্প-সংস্কৃতি আসে না । প্রেম না হলে তো রাজনীতিও করা যাবে না। ওবায়দুল কাদের সাহেবকেও প্রেম করতে হবে জনগণের সঙ্গে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও ছিলেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপেদষ্টা আবদুল কাইয়ুম, গাজীপুর জেলা সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ।