নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের নয়াদিল্লীতে দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ বলেছেন, ‘এইচ টি ইমাম সাহেব বলেছেন, দিল্লী সরকার নাকি বিএনপিকে পাত্তা দিচ্ছে না। প্রথম কথা হচ্ছে, দিল্লী সরকার বাংলাদেশের কোন দল সম্পর্কে কি ধরনের মত পোষণ করে এটা উনি জানলেন কীভাবে। এইচ টি ইমাম সাহেব ভারত সরকারের কোন পদে আছেন যে, ভারত সরকার কোন দল সম্পর্কে কী ধরনের মত পোষণ করে তা উনি বলতে পারেন।’
রোববার বিকেলে এক আলোচনা সভায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন বন্ধের প্রতিবাদে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মোশাররফ বলেন, ‘তিনি (এইচ টি ইমাম) দিল্লীতে বসে বিএনপির বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করেছেন। বিএনপির বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেছেন-এটা কোনো রুচিসম্মত ব্যাপার নয়। বিদেশের মাটিতে গিয়ে বাংলাদেশের একটি দল সম্পর্কে কুৎসা ও মিথ্যা বলা একজন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টার মুখে মানায় না। এটা কুরুচিসম্পন্ন।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শুধু ভারতের ব্যাপারে এতটুকু বলতে চাই, কিছুদিন আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি স্টেটমেন্ট দিয়ে তারা বলেছে, বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারত নাক গলাবে না। আমরা এটাকেই বিশ্বাস করতে চাই। কেননা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি ভারত সরকারের পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা শিংকে দিয়ে এখানে (বাংলাদেশে) নাক গলানো হয়েছিল।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমরা সাধুবাদ জানাই ভারতকে যে তারা আগে থেকেই বুঝেছে। সেজন্য তারা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিক প্রেস ব্রিফিং দিয়ে বলেছে বাংলাদেশের নির্বাচনে তারা নাক গলাবে না। এটাই আমরা আশা করি আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র থেকে। এদেশের মানুষই ঠিক করবে কীভাবে নির্বাচন হবে, কাকে নির্বাচিত করবে এবং ভবিষ্যৎ সরকার কী হবে। বিএনপি এটাই বিশ্বাস করে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি আর ২০১৮ সালের ডিসেম্বর এক কথা নয়। আমরা পরিস্কারভাবে বলতে চাই, আমরা নির্বাচনে যাবো। বিএনপি জাতীয়তাবাদী মধ্যপন্থী গণতান্ত্রিক দল। আমরা গণতান্ত্রিক নির্বাচনে বিশ্বাস করি।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘আমরা বলতে চাই, মুক্ত খালেদা জিয়ার নেতৃত্বেই আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে। বেগম খালেদা জিয়া, আগামী নির্বাচন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এক সুতাতে গাঁথা।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘আমাদের প্রথম দায়িত্ব দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। আমরা দেখছি আইনি লড়াইয়ের এটা সম্ভব হচ্ছে না। সেজন্য আমাদেরকে রাস্তায় নেমে এদেশে একটি গণআন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের নেত্রীকে মুক্ত করবো। এর কোনো বিকল্প নাই।’
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘যত ষড়যন্ত্র হোক না কেন, যত ধরনের অপপ্রচার হোক না কেন সকল ষড়যন্ত্র-অপপ্রচার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে এই স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটাব। একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আমরা নির্বাচনে যাব।’
সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন- কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা দলের শাহ আবু জাফর প্রমুখ।