অনলাইন ডেস্ক: বৃষ্টিতে ভেজা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এতে নাকি খুব সহজেই শরীরে হাজারো রোগ আক্রমণ করতে পারে বলে অনেকের ধারণা রয়েছে। তবে, একাধিক গবেষণার পর দেখা গেছে বৃষ্টিতে ভিজলে তার ঠিক উল্টো বিষয়টি ঘটে শরীরে। বৃষ্টিতে ভিজলে একেবারেই শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না বরং মন ও মস্তিষ্ক একেবারে চাঙ্গা হয়ে যায়।
চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক বৃষ্টির পানির ৯ উপকারিতা…
স্ট্রেস কমে
বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে,তুমুল বৃষ্টিতে পাঁচ মিনিট ভিজলে স্ট্রেস লেভেল একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে শরীরের ক্লান্তিও দূর হয়।
টক্সিক উপাদান দূর করে
বেশ কিছু গবেষক বৃষ্টির পানিকে অ্যালকেলাইন জাতীয় জৈব পদার্থ বলেন। অর্থাৎ এই পানি পান করলে শরীরের জমে থাকা টক্সিক উপাদান বেরিয়ে যায়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটে। এখানেই শেষ নয় অ্যালকালাইন রক্তের পি এইচ লেভেলকে স্বাভাবিক মাত্রায় নিয়ে আসে। ফলে শরীরে অ্যাসিডির মাত্রা কমে যায় এবং একাধিক রোগের প্রকোপ হ্রাস পায়।
বৃষ্টির পানির যতগুণ
বৃষ্টির পানিতে কোন ভেজাল থাকে না। তাই সেই পানি শরীরে লাগলে কোনো ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। তাই বালতিতে করে বৃষ্টির পানি জমিয়ে নিতে পারেন।
মানসিক অবসাদের প্রকোপ কমে
বৃষ্টির পর ভেজা মাটি থেকে একধরণের মিষ্টি গন্ধ বের হয়। গবেষকরা এই গন্ধকে ‘পেট্রিকোর’ নামে ডেকে থাকেন। কেননা বৃষ্টির পানি মাটিতে উপস্থিত এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া বিশেষ এক ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য নিঃসরণ করে। যে কারণে এমন সোঁদা গন্ধ বের হতে শুরু করে।
শরীরের উপকার হয়
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, বৃষ্টির সময় হাওয়া-বাতাস খুব বিশুদ্ধ হয়ে যায়। তাই ওই সময়, শরীরে প্রবেশ করা বায়ু দেহের উপকার করে থাকে। শুধু তাই নয়, বৃষ্টির সময় পরিবেশে উপস্থিত টক্সিক উপাদানের ক্ষতি করার ক্ষমতাও খুব কমে যায়। ফলে এই সময় বাড়ির বাইরে থাকলে সব দিক থেকে শরীরের ভালো হয়। তবে ১০-১২ মিনিটের বেশি বৃষ্টিতে ভেজা ক্ষতিকর। এর বেশি হলে ঠাণ্ডা লেগে যাওয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়।
পেটের রোগের প্রকোপ কমে
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে ৩ চামচ বৃষ্টির পানি খেলে অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে হজম ক্ষমতারও উন্নতি ঘটে।
পানীয় হিসেবে সর্বাধিক বিশুদ্ধ
সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃষ্টির পানি পরিষ্কার পাত্রে সংগ্রহ করে খেলে শরীরের উপকার হয়। সেই সঙ্গে একাধিক রোগের প্রকোপও হ্রাস পায়। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখবেন, যেখানে বৃষ্টির পানিকে সংগ্রহ করছেন সেই যেন জীবাণুমুক্ত হয়, না হলে কিন্তু শরীরের ভাল হওয়ার পরিবর্তে খারাপ হবে বেশি।
চুলের সৌন্দর্য বাড়ে
অনেকের মধ্যে ধারণা আছে, বৃষ্টিতে ভেজার পর শ্যাম্পু না করলে চুলের মারাত্মক ক্ষতি হয়। এই ধারণা মোটেও ঠিক নয়। কেননা বিশেষজ্ঞদের মতো বৃষ্টির পানি বিশুদ্ধ হয়। ফলে এই পানি দিয়ে চুল ধুলে মাথার ত্বকে উপস্থিত একাধিক ব্যাকটেরিয়া ও ময়লা ধুয়ে যায়। ফলে চুলের সৌন্দর্য যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি খুশকিসহ নানাবিধ রোগের প্রকোপও কমে।
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়
ভারী বর্ষণের সময় পরিবেশে উপস্থিত জলীয় বাষ্প ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভাল হয়। শুধু তাই নয়, বৃষ্টির পর পর জলীয় বাস্প বেড়ে যাওয়ার কারণে পরিবেশে উপস্থিত একাধিক ক্ষতিকর জীবাণুর কর্মক্ষমতা কমে যায়। সেই সঙ্গে ত্বক আরও উজ্জ্বল ও সুন্দর হয়ে ওঠে। একইসঙ্গে বৃষ্টির জল ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার করে।