স্পোর্টস ডেস্ক: পারলো না বেলজিয়াম। রেড ডেভিলদের সোনালি প্রজন্ম দেশটিকে কোনো আনন্দের মুহূর্ত এনে দিতে পারলো না বিশ্বকাপে। আরো একবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হলো ইউরোপের দেশটিকে।
১৯৮৬ সালের পর প্রথমবার সেমিফাইনালে উঠে এখান থেকেই বিদায় নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হলো তাদের। ফ্রান্সের বিপক্ষে ০-১ গোলে হেরে শেষ চার থেকে বিদায় নিল তারা। অন্যদিকে ২০০৬ সালের পর আবারো বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলো ফ্রান্স।
বিশ্বকাপে দুদলের সর্বশেষ লড়াইটা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে। সেবার তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে এই ফ্রান্সের কাছেই হার মেনে নিতে হয়েছিল বেলজিয়ামকে। আবারো সেই ফ্রান্সেই কাটা পড়লো তারা। অথচ বেলজিয়ামের এই সোনালি প্রজন্মকে নিয়ে অনেকে বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নই না দেখছিল।
ম্যাচের শুরুতেই দুদলের কোচ একটি করে পরিবর্তন এনে একাদশ সাজান। শুরু থেকেই আক্রমণ পালটা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। তবে ম্যাচে প্রথম ২০ মিনিট ছিল বেলজিয়ামের দখলে।
ম্যাচের ১৫তম মিনিটে প্রথম আক্রমণটি করে বেলজিয়াম। ডি বক্সের বাইরে থেকে হ্যাজার্ডের শট গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়। ১৮ মিনিটে গোলের সুযোগ পেয়েছিল ফ্রান্সও। কিন্তু ডি বক্সের বাইরে থেকে মাতুইদির আচমকা নেয়া জোরালো ভলি সোজা কুর্তোয়ার তালুবন্দী হয়।
১৯ মিনিটে ফ্রেঞ্চ ডিফেন্সের বা পাশ থেকে হ্যাজার্ডের নেয়া বাকানো শট মাথা ছুঁয়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ভারানে। তার মাথায় না স্পর্শ করলে নির্ঘাত এগিয়ে যেতে পারতো বেলজিয়াম। ২১ মিনিটে আবারো গোলের সুযোগ পায় বেলজিয়াম।
চ্যাডলির কর্নার থেকে অ্যাল্ডারওয়ের্ল্ডের নেয়া শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন লরিস। ২৫ মিনিটের পর কিছুটা ঝিমিয়ে পড়ে বেলজিয়াম। এই সুযোগে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করে তরুণ ফ্রান্স দল।
৩১ মিনিটে ডি বক্সের বাইরে থেকে গ্রিজিম্যানের দুর্বল শট গোলের নিশানা খুঁজে পায়নি। ৩৪ মিনিটে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি পেয়েছিল ফ্রান্স। ডান পাশ থেকে এমবাপের শট গোলমুখে কুর্তোয়াকে একা পেয়ে বাইরে শট নেন ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকার জিরু।
৩৯ মিনিটে ফ্রান্সের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান বেলজিয়ামের আগের ম্যাচের নায়ক কুর্তোয়া। পাভার্টের শট ডান পায়ের বদৌলতে রুখে দেন কুর্তোয়া। ম্যাচের প্রথমার্ধে আর কোনো সুযোগ তৈরি না হলে গোলশূন্য থেকেই প্রথমার্ধে যায় দুদল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে ফ্রান্স। ৫১ মিনিটে বেলজিকদের দুর্গ ভাঙেন বার্সেলোনার রক্ষণভাগের সেনানি সামুয়েল উমতিতি। গ্রিজম্যানের করা কর্নার থেকে দারুণ হেডে গোল করে ফ্রান্সকে এক গোলে এগিয়ে দেন।
গোল খেয়ে যেন মরিয়া হয়ে ওঠে বেলজিয়াম। অফ ফর্মের মুসা দেম্বেলের পরিবর্তে মার্টেনসকে নামান কোচ। ডান পাশ থেকে তার দেয়া ক্রসে ৬৫ মিনিটে ফেলাইনির হেড একটুর জন্য গোলের দেখা পায়নি।
গোলমুখে মার্টেনসের একের পর এক ক্রস দেখা পায়নি যোগ্য কোনো সতীর্থের। ৮১ মিনিটে ভিটসেলের দূরপাল্লার বুলেট শট দুর্দান্ত ভঙ্গিমায় পাঞ্চ করে ফ্রান্সকে ম্যাচে টিকিয়ে রাখেন লরিস।
ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পেলেও তলিসো এবং গ্রিজম্যান সুযোগ নষ্ট করেন। ফলে ১-০ ব্যবধানে জিতেই ২০০৬ সালের পর আবারো ফাইনালে পা রাখলো ফ্রান্স।