বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষকদের দালাল বলে উল্লেখ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘সেন্টার ফর ম্যান অ্যান্ড ম্যাসকুলিনিটি স্টাডিজ (সিএমএমএস)’ এর আয়োজনে ‘পলিসি ডায়লগ অন প্রিভেন্ট জেন্ডার বেসড ভায়োলেন্স ইনভলভিং ইয়ুথ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
জাসদ সভাপতি বলেন, ‘সাম্প্রতিক তেতুল হুজুরের উৎপাত দেখতে পাচ্ছি। তাদের মতে মেয়েদের চতুর্থ শ্রেণির বেশি পড়ার দরকার নাই। তারা ঘরে থাকবে, তারা তেতুলের মতো। রাজনৈতিক কারণে অনেককে দেখলাম তেতুল হুজুরের বিরুদ্ধে কথা বলছে না। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকেরাও এর কোনো প্রতিবাদ করছে না। আমাদের নৈতিকতার অবক্ষয় হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে নেতানেত্রীর দালালি করতে দেখি। মুক্তমনা শিক্ষক দেখি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তবুদ্ধির কেন্দ্র, কিন্তু আপনারা তেতুল হজুরের বিরুদ্ধে কথা বলছেন না, বখাটেদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন না আপনারা শুধু দালালি করছেন। তাহলে আপনারা কিসের শিক্ষাবিদ?’
হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘আমাদের সমাজকে জঙ্গি, রাজাকার ও বখাটেদের উৎপাত থেকে মুক্ত করতে হবে। আমরা যুদ্ধের সময় দেখেছি, নারী-পুরুষ মিলেমিশে যুদ্ধ করেছে। মুক্তিযোদ্ধারা নারীদের নির্যাতন করেছে-এমনটি আমি শুনিনি। কিন্তু একই সময় রাজাকাররা ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে গণিমতের মাল বলে নারীরদের নির্যাতন করেছে। তারা নারীকে মানুষ মনে করেনি।’
ইনু বলেন, ‘একই বাংলাদেশে আমরা দুটি ঘটনা দেখেছি। যারা নির্যাতনকারী তারা কিন্তু সংখ্যায় কম ছিল। নারীদের উত্ত্যক্তকারীরা জঙ্গি রাজাকারের মতো এদের সাথে আমাদের সমাজের কোন সম্পর্ক নেই। এদেরকে ধ্বংশ করতে হবে। বখাটে, নারী উত্ত্যক্তকারী এবং রাজাকারদের উৎপাত রুখতে সমান্তরাল কর্মসূচির মাধ্যমে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সমাজে শুধু নারীদের পরামর্শ দেওয়া হয়। নারী তুমি সচেতন হও, নারী তুমি আঠারোর আগে বিয়ে করবা না, বালিকা তুমি ২১ বছরের আগে মা হবা না। কিন্তু পুরুষদের বেলায় এসব পরামর্শ দেওয়া হয় না। লিঙ্গ বৈষম্য থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে।’
সেন্টার ফর ম্যান অ্যান্ড ম্যাসকুলিনিটি স্টাডিজের চেয়ারম্যান ড. শাইখ ইমতিয়াজের সভাপতিত্বে আনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আবুল বারাকাত, ঢাবির রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ জিনাদ হুদা, ইউএনডিপির বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মিস সারমিলা রসুল ও জাতীয় সংসদ সদস্য নাঈম রাজ্জাক। এ ছাড়া সংলাপে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, উন্নায়নকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।