ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিজেদের ‘শেষ যুদ্ধ’ পরিচালনা করছে ইসরায়েল, যার লক্ষ্য হামাসকে নিশ্চিহ্ন করা। মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদিশাসিত এই ভূখণ্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত মনে করেন, যদি এই লক্ষ্য পূরণ হয়— সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে গাজায় আর যুদ্ধ চালানোর প্রয়োজন হবে না ইসরায়েলের।
রোববার ইসরায়েলের একটি বিমান ঘাঁটি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন গ্যালান্ত। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘গাজায় সম্ভবত এটাই আমাদের শেষ যুদ্ধ; কারণ হামাস যদি নিশ্চিহ্ন হয়— সেক্ষেত্রে সেখানে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার আর কোনো কারণ আমাদের থাকবে না।’
‘এই যুদ্ধ একমাস, দু’মাস কিংবা তিন মাস স্থায়ী হতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হামাসকে আমাদের চুড়ান্তভাবে ধ্বংস করতেই হবে।’
গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরায়েলের উত্তরাংশে ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস। সেদিন কয়েকশ’ হামাস যোদ্ধা বুলডোজার দিয়ে সীমান্ত বেড়া ভেঙে ইসরায়েলের প্রবেশ করেন, শত শত ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিকদের হতাহত করেন এবং ইসরায়েল থেকে ২ শতাধিক মানুষকে জিম্মি হিসেবে গাজায় নিয়ে যান।
এই জিম্মিদের মধ্যে ইসরায়েলি ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশের নাগরিকরা রয়েছেন এবং তাদের সবাই বেসামরিক নাগরিক।
হামাসের এই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী, (আইএএফ) যা এখনও চলছে। গত ১৬ দিনের যুদ্ধে এ পর্যন্ত ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক এবং গাজায় নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪ হাজার ৬০০ জনে।
হামাসের নেতারা জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার জন্য এই যুদ্ধ শুরু করেছেন তারা। অন্যদিকে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হামাস যতদিন টিকে থাকবে— ততদিন যুদ্ধের ময়দানে থাকবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী।
জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা এবং দেশ ইতোমধ্যে গাজায় ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর অভিযান বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। তবে রোববারের বক্তব্যে গ্যালান্ত বলেছেন, শিগগিরই গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযান পরিচালনা করবে ইসরায়েলি বাহিনী। সেই অভিযান শুরুর আগে হামাসকে দুর্বল করা প্রয়োজন এবং এ কাজটি করতে হবে মূলত বিমান বাহিনীকে।
‘শিগগিরই গাজা উপত্যকায় স্থল অভিযান শুরু হবে এবং আমরা চাই ইসরায়েলের ট্যাংক ও পদাতিক সেনাদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার আগে হামাস যেন আমাদের বিমান বাহিনীর সক্ষমতা নিয়ে পরিষ্কার ধারণা পায়।’